ট্রাম্প প্রশাসন তিন মাস সময় দিয়েছে, দরকার হলে আরও সময় চাইবো: অর্থ উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পালটা শুল্ক (রেসিপ্রকাল ট্যারিফ) নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রয়োজনে আরও সময় চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, 'রেসিপ্রকাল ট্যারিফ নিয়ে নেগোসিয়েশনের (আলোচনা) জন্য ট্রাম্প প্রশাসন তিন মাস সময় দিয়েছে। আমরা দরকার হলে আরও সময় চাইবো। আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে এংগেজমেন্ট (সম্পৃক্ততা) বাড়াবো।'
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত এনবিআরের ৪৫তম পরামর্শক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এ সভা শুরু হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক দাবি আগামী বাজেটে প্রতিফলনের চেষ্টা করা হবে। তবে তিনি একথাও মনে করিয়ে দেন যে, 'সরকার বর্তমানে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চাপে রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'এবার বাস্তবসম্মত বাজেট করা হবে। চিরাচরিত বাজেটের মতো করব না। আমরা যা বলব তা করার চেষ্টা করব। আমরা চলেও গেলেও যাতে মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল। বড় বাজেট দেওয়া হতো, কিন্তু বাস্তবায়ন হতো না। কিন্তু আমরা যে বাজেট দিতে চাই, তা বাস্তবায়ন করতে চাই।'
'ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়বে। ব্যবসায়ীদেরও প্রতিযোগী হতে হবে', যোগ করেন তিনি।
কর অব্যাহতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ব্যবসায়ীরা কর দিলে সুবিধা পাবে। কিন্তু অনেকেই কর অব্যাহতি বা কর রেয়াতি সুবিধা চায়। আপনাদের বুঝতে হবে অব্যাহতির দিন চলে গেছে। আমাদের ওপর অনেক চাপ আছে। আপনারা যে কর দেন তার সুবিধা আপনি ভোগ করবেন। মনে রাখতে হবে—ট্যাক্স দিচ্ছি, বেনিফিট আমি পাব।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রান্তিক পর্যায়ে যারা আছেন বা যে চেম্বারগুলো রয়েছে তাদের কথা শোনা হয়না। আপনাদের জন্যে আমরা কাজ করছি।'
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা এখন অনেক গালমন্দ খাচ্ছি, সেটা কিছু মনে করি না। কাজ করলে এটা শুনতে হবে।আমাদের ভুলত্রুটি আছে। হয়ত ভুলত্রুটি থাকবে। তবু চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখতে। ব্যবসায়ীদের সহনশীল হতে হবে, আমরা সহনশীল থাকব। আমরা চেষ্টা করব আপনাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে।'
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, আমরা শুধু আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নয়, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি। এখনো আইএমএফের সঙ্গে সব শর্ত মেলেনি, তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর যে পালটা শুল্ক আরোপ করেছিল, গত ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, এই সময় দেশগুলোর পণ্যে পালটা শুল্ক ন্যূনতম ১০ শতাংশ কার্যকর হবে।