‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলন: গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারী কারাগারে
'সচিবালয় ভাতা'র দাবিতে মিছিল-মিটিং ও আন্দোলন করার পাশাপাশি অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ রাখার ঘটনায় করা মামলায় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির ও সহ সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন গোলাম রাব্বানীসহ ১৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত এই আদেশ দেন।
আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক নজরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রোমান গাজী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আবু বেলাল ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. তায়েফুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক বিপুল রানা বিপ্লব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. আলিমুজ্জামান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র রায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইসলামুল হক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মহসিন আলী, বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংযুক্ত পরিষদের প্রচার সম্পাদক ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মিজানুর রহমান সুমন এবং মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক নাসিরুল হক নাসি। আসামি বাদিউল কবির জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, মোহাম্মদ শাহীন গোলাম রাব্বানী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
এর আগে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আজ আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক কে এম রেজাউল করিম।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখীসহ অনেকেই তাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর আসামিদের প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর 'সচিবালয় ভাতা'র দাবি পূরণে চাপ সৃষ্টি করতে সরকারি কর্মচারীরা সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে প্রায় সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশের সহায়তায় রাত সোয়া আটটার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন।
পরে রাতে সরকারি আদেশ (জিও) জারির 'আশ্বাস পেয়ে' রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা। এরপর ১১ ডিসেম্বর বেলা তিনটার মধ্যে জিও জারির 'আশ্বাস পেয়ে' অবস্থান থেকে সরে গেছেন।
কিন্ত ১১ ডিসেম্বর বেলা ৩ টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় সচিবালয়ে তারা আবারও জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সমাবেশ থেকে আগামী সপ্তাহ থেকে 'পূর্ণদিবস কর্মবিরতির' কথাও বলা হয়। পরে সচিবালয় থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ জনকে আটক করে হেফাজতে নেয় পুলিশ, পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ জনে।
ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করেন বাংলাদেশ সচিবালয়ে ফোর্স হিসেবে কর্মরত এএসআই হাফিজুর রহমান।
