চট্টগ্রামে গভীর রাতে মোটরসাইকেল আরোহীদের গুলিতে ২ গাড়ি যাত্রী নিহত

চট্টগ্রাম নগরীতে একটি কার-এ মোটরসাইকেল আরোহী দুষ্কৃতকারীদের বন্দুক হামলায় গাড়ির দুইজন যাত্রী নিহত এবং আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে চকবাজার থানার বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডের প্রবেশপথের কাছে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতদের নাম বখতিয়ার উদ্দিন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ। দুজনেরই বয়স ৩০-এর কোঠায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মানিক, তিনি রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা। আর আবদুল্লাহ হাটহাজারীর বাসিন্দা।
আহত রবিন ও হৃদয়কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাজাখালী সেতু থেকে অ্যাকসেস রোডের দিকে চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে আসা সশস্ত্র দুষ্কৃতকারী গাড়িটিকে ধাওয়া করে। প্রত্যেক মোটরসাইকেলে দুজন আরোহী ছিল। তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে গাড়িতে গুলি চালাচ্ছিল। গাড়ির যাত্রীদের সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শোনা গেছে।
পুলিশ ও একাধিক সূত্র বলছে, সাজ্জাদ হোসেন ওরফে "ছোট সাজ্জাদ" এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সারোয়ার হোসেন বাবলার নেতৃত্বে পরিচালিত দলগুলোর মধ্যে চলমান সংঘাতের সঙ্গে এই হামলার যোগসূত্র রয়েছে।
গত ১৫ মার্চ ঢাকায় সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, প্রতিশোধ হিসেবে বাবলার দলকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর অঞ্চল) আমিরুল ইসলাম বলেন, বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের সাথে এই সংঘর্ষের সম্পর্ক রয়েছে।
আমিরুল বলেন, বাবলা গ্রুপের সদস্যরা গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। তখন মোটরসাইকেলে করে তাদের ধাওয়া করে খোরশেদ গ্রুপের সদস্যরা। খোরশেদ গ্রুপ সাজ্জাদের গ্যাংয়ের অধীনে কাজ করে।
"দুই গ্রুপের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। আক্রমণকারীরা ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল," বলেন তিনি।
এই সিএমপি কর্মকর্তা আরও বলেন, চাঁগাওয়ে পুলিশের টহল গাড়ি দেখা গেলে বাবলা গ্রুপের একজন সদস্য সাহায্য চান। এদিকে মোটরসাইকেল আরোহী হামলাকারীরা গাড়ি লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়, যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ইমান নামে একজন সন্দেহভাজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলেও বাবলা এখনও পলাতক রয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য শহরজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন। পুলিশের ধারণা, খোরশেদ গ্রুপের সদস্যরা রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার দিকে পালিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে হাটহাজারী ও রাউজান-রাঙ্গুনিয়া রুটে চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি।