বৈরী আবহাওয়ায় এলএনজি সরবরাহ বন্ধ, চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট চরমে

বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের এলাকায় চরম গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
এই সংকটে ৬ লাখেরও বেশি আবাসিক গ্রাহক, শতাধিক সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং ৩ হাজারের বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিপাকে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারী শিল্প কারখানা, যার অনেকগুলোরই উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) জানিয়েছে, চট্টগ্রামে দৈনিক গ্যাস চাহিদা ৩১২–৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হলেও বর্তমানে সরবরাহ নেমে এসেছে ২৫০–২৬০ মিলিয়নে। সেই সঙ্গে গ্যাসের চাপও অস্বাভাবিকভাবে কম।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাতালী, খুলশী, আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চকবাজার ও মুরাদপুর এলাকায় গ্যাস সরবরাহ ছিল না বললেই চলে।
সিএনজি স্টেশনগুলোতেও গ্যাস না থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও চালকেরা ফিরে যাচ্ছেন। এতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
কেজিডিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. আমিনুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার গ্যাসের চাপ অনেক কম ছিল। তবে রাতে পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি আমদানিকৃত এলএনজির উপর নির্ভরশীল।
কেজিডিসিএলের হিসাবে শহরে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি আবাসিক ও শিল্প সংযোগ রয়েছে।
বিএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত জানান, বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে তাদের জ্বালানি ব্যয় তিনগুণ বেড়ে গেছে।
বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বয়লার বন্ধ থাকায় পোশাক কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
রান্নাবান্নাতেও সংকট দেখা দিয়েছে।
চটেশ্বরী রোডের বাসিন্দা সানজিদা আফরোজ জানান, সকাল থেকে চুলা জ্বলছে না।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাইফুল্লাহ কবির জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাত্র ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হয়েছে। রাতের মধ্যে তা ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে।
পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তারিকুল ইসলাম খান বুধবার (১৮ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মঙ্গলবার ও বুধবার মহেশখালীর গভীর সমুদ্র বন্দরে এলএনজি কার্গো ভিড়তে পারেনি, ফলে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাব কেজিডিসিএল ছাড়াও তিতাস গ্যাসের এলাকায়ও পড়েছে।
আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেই এলএনজি কার্গো নোঙর করতে পারবে এবং সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।