Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
July 25, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JULY 25, 2025
সব উন্নয়ন ঈদযাত্রায় এসে মুখ থুবড়ে পড়ে কেন?

মতামত

আমীন আল রশীদ
09 July, 2022, 04:00 pm
Last modified: 09 July, 2022, 04:03 pm

Related News

  • হাতিরঝিল চক্রাকার বাসে চালু হলো 'র‍্যাপিড পাস' সেবা
  • এই মৃত শহর আঁকড়েই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি আমরা 
  • সকাল ৮টার বাস ৩টায়ও ছাড়েনি, যানজটে বাসের শিডিউল বিপর্যয়
  • ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে থেমে থেমে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
  • বরিশালের ৫০০ টাকার বাসভাড়া ৮০০ টাকা

সব উন্নয়ন ঈদযাত্রায় এসে মুখ থুবড়ে পড়ে কেন?

মানুষ ঈদের আনন্দ করতে বাড়ি যাচ্ছে। অথচ কেউ কেউ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরছেন। ঈদের আনন্দ কী করে বিভীষিকায় পরিণত হতে পারে, এই দৃশ্য না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ট্রেনের ছাদে ওঠা নিষেধ। অথচ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পরিবহনে এই নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ গন্তব্যে যেতে চায়। কেন? গণপরিবহনের এত সংকট কেন?
আমীন আল রশীদ
09 July, 2022, 04:00 pm
Last modified: 09 July, 2022, 04:03 pm
আমিন আল রশীদ। স্কেচ: টিবিএস

শুক্রবার ভোর ৬টা। পরিবার-পরিজন নিয়ে বাসা থেকে বের হই সদরঘাটের উদ্দেশে। সেখানে ওয়াটার বাস ছাড়ার নির্ধারিত সময় সকাল ৮টা। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী দুই ঘণ্টা হাতে নিয়ে বের হই। স্বাভাবিক সময়ে এই ৯-১০ কিলোমিটার পথ যেতে সিএনজি অটোরিকশায় সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ।

কিন্তু ভোর ৬টায় রাস্তায় নেমেই দেখা যায় পান্থপথ সিগন্যালে অনেক মানুষ অপেক্ষা করছেন সিএনজি অটোরিকশা বা রাইড শেয়ারের গাড়ির জন্য। পৌনে ৭টা পর্যন্ত অন্তত ২০টি সিএনজি অটোরিকশাকে অনুরোধ করেও সদরঘাটে যেতে রাজি করানো যায়নি। দ্বিগুণ ভাড়া দেয়ার কথা বললেও তারা রাজি হননি। কারণ গুলিস্তানের আগে থেকেই সদরঘাট পর্যন্ত গাড়ি এবং মানুষের চাপ। ঘাটে পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে, তা নিয়ে চালকরা সন্দিহান। বিকল্প রুট টিকাটুলি হয়ে সদরঘাট যাওয়া যায়। কিন্তু ওই পথেও নাকি ভোর থেকে জ্যাম। কোরবানির পশুর হাটের প্রভাবও রয়েছে।

অনেক অনুরোধ করে একজন সিএনজি চালককে রাজি করানো গেলো দ্বিগুণ ভাড়ায়। তিনি জ্যাম এড়াতে কয়েকটি সড়ক পরিবর্তন করে যাচ্ছিলেন এবং প্রত্যেটটি রাস্তায় কিছুদূর যাওয়ার পরেই দেখা যায় গাড়ি আটকে যাচ্ছে। এই করে করে তিনি যখন ঢাকা মেডিকেলের সামনে পৌঁছান, তখন পৌনে আটটা। সেখান থেকে ৮টার মধ্যে সদরঘাটে পৌঁছানো কোনোমতেই সম্ভব ছিল না। গুগল ম্যাপও দেখাচ্ছিলো, বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট পর্যন্ত পুরো রাস্তা লাল। মানে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পৌঁছানো গেলেও বাকি পথ লাগেজ ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে হেঁটে যেতে হবে। তা-ও ৮টার আগে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা বাসায় ফিরে আসি এবং চারিদিকে ফোন করে যেসব খবর পাই, তাতে আর ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগ্রহ অবশিষ্ট ছিল না। আমাদের ঈদযাত্রা মাটি। জীবনে প্রথম এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম। অথচ কিছুদিন আগেই পদ্মা সেতু চালু হলো। বলা হচ্ছিলো, সেতুর কারণে নৌপথে মানুষের চাপ কমবে এবং সদরঘাটে আরামে পৌঁছানো যাবে। কিন্তু সেই স্বস্তির ঈদযাত্রা অধরাই থাকলো।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, শহর থেকে বের হওয়ার প্রতিটি স্পটের একই দশা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পান্থপথে দাঁড়িয়ে কথা হয় সিএনজি চালক আতাউর রহমানের সঙ্গে। সদরঘাট বা সায়েদাবাদ যাবেন কি না? সাথে সাথে না সূচক মাথা নাড়েন। কারণ কী? বললেন, যাত্রী নিয়ে গাবতলী রওনা হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে থেকে তিনি উত্তর দিকে যতদূর তাকিয়েছেন, জ্যাম। তার ধারণা, যানবাহনের এই জটলা কল্যাণপুর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা বসে থেকে যাত্রী নেমে গেছেন। চালক জানালেন, একই অবস্থা সায়েদাবাদ ও সদরঘাটে যাওয়ার রাস্তাগুলোরও। টার্মিনালের অন্তত এক কিলোমিটার আগে থেকে গাড়ি নড়ে না। লাগেজ নিয়ে এবং সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধ থাকলে তাদের পক্ষে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে টার্মিনাল বা স্টেশনে পৌঁছানো কঠিন।

প্রশ্ন আসতে পারে, ঈদের সময়ে রাস্তায় এরকম দুর্ভোগ হবে সেটা তো জানা কথা। তাহলে আগে যাননি কেন? যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা আগেভাগেই যান। অনেকে পরিবার-পরিজন আগেই পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সবার এই সুযোগ হয় না। আবার পেশাগত কারণে যারা সারা বছর বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পান না; যাদের ব্যক্তিগত বাহন নেই, তাদেরকে ঈদের এক দুদিন আগে এরকম দুর্ভোগের শঙ্কা মাথায় নিয়েই যেতে হয়। কিন্তু সেই দুর্ভোগেরও একটা সীমা থাকা দরকার।

সীমা আছে কি না, সেটি শুক্রবার সকালে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের লাইভে স্পষ্ট দেখা গেছে। দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার ঘোষণা আসছিলো মাইকে। তখনও ট্রেনের ছাদে ও দরোজায় মানুষের হুড়োহুড়ি। অথচ ট্রেনটি যখন এসে থামে, তখন ভেতর থেকে যাত্রীরা নামতেও পারেননি। মানুষজন নামার আগে ট্রেনে উঠতে মানুষের যে কী ভয়াবহ যুদ্ধ, সেটি না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এই দৃশ্য দেখে মনে হয়, নগরে ভয়াবহ আগুন লেগেছে বা যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাই সবাই পালাতে চাচ্ছে।

একজন মাঝবয়সী লোক ক্যামেরার সামনে বলেন তার বেঁচে ফেরার গল্প। 'ট্রেনটা থামলো। আমরা নামারই সুযোগ পাচ্ছিলাম না। লোকজন হুড়মুড় করে ঢুকে গেলা। আমি এত করে বললাম ভাই আমার সাথে বাচ্চা আছে, দয়া করে নামতে দেন। মানুষের মধ্যে কোনো মানবতা নাই। আমি যে কীভাবে ট্রেন থেকে নামছি আমি জানি না। মনে হয় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলাম। আল্লাহর কাছে হাজার শোকর।' এই ভদ্রলোক কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলেন, 'ভাই আপনারা বাড়ি যাবেন। কিন্তু একটু মানবিক হন।'

টেলিভিশনে দেখা গেলো, মানুষের চাপে তীব্র গরমে ঘামে ভিজে অনেকে জামাকাপড়ও খুলে ফেলেছেন।

ট্রেনের টিকিট পেতেও মানুষের যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের দৃশ্য দুই ঈদের আগে গণমাধ্যমে দেখা যায়, এই পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। বরং কয়েক দিন আগে টিকিটের লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দুজন নারীর যে মারামারি দৃশ্য দেখা গেলো, সেটি আরও লজ্জার। কিন্তু গণপরিবহনের এই সংকট দেখে নীতির্ধারকদের লজ্জা হয় কি না—সেটাই প্রশ্ন।

মানুষ ঈদের আনন্দ করতে বাড়ি যাচ্ছে। অথচ কেউ কেউ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরছেন। ঈদের আনন্দ কী করে বিভীষিকায় পরিণত হতে পারে, এই দৃশ্য না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ট্রেনের ছাদে ওঠা নিষেধ। অথচ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পরিবহনে এই নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ গন্তব্যে যেতে চায়। কেন? গণপরিবহনের এত সংকট কেন?

ফেসবুকে নানা শ্রেণিপেশার মানুষও এবারের ঈদযাত্রার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন।

মনিরুজ্জামান নামে একজন লিখেছেন, বৃহস্পতিবার তিনি এক পথচারীকে বলতে শুনেছেন, বেলা একটায় উত্তরা থেকে রওনা হয়ে রাত ৮ টায় সূত্রাপুর থানার সামনে জ্যামে আটকে থাকেন। গন্তব্য ছিল সদরঘাট। অতীষ্ঠ হয়ে তিনি নাকি নিজেকেই ধিক্কার দিচ্ছিলেন। ৭ ঘণ্টায়ও যদি উত্তরা থেকে সদরঘাটে পৌঁছানো না যায়, তাহলে এই শহরকে আর রাজধানী বলা যাবে কি না?

সাংবাদিক মাহবুব সৈকত লিখেছেন, তার ছোট ভাই প্রায় আড়াই ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো সিএনজি, রিকশা বা গাড়ি না পেয়ে পরিবারসহ বাসায় ফিরে এসেছেন। তারও লঞ্চে কেবিন বুক করা ছিলো। কিন্তু সদরঘাটে যেতে পারেননি।

শাহ আলম খান লিখেছেন, তিনিও আগের দিন সকাল ৬টায় উত্তরা থেকে রওনা হয়ে সঠিক সময়ে সদরঘাটে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

একই অভিজ্ঞতা কলেজশিক্ষক আরিফুর রহমানের। বৃহস্পতিবার সকালে তিনিও সদরঘাটে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে গুলিস্তান চলে যান। কিন্তু সেখান থেকে বরিশালগামী কোনো বাসে উঠতে পারেননি। স্ত্রী ও ছোট সন্তানকে নিয়ে চলে যান সায়েদাবাদ। সেখানে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ। ঘামে ভিজে একাকার। প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পরে একটি জরাজীর্ণ বাসের টিকিট পান। ঈদের সময় সব জরাজীর্ণ বাস দূরপাল্লার বাস হয়ে যায়। মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব বাসে উঠে গন্তব্যে যেতে চায়। সবার গন্তব্যে পৌঁছা হয় না। কারো কারো ঈদের আনন্দ সড়কেই মাটি হয়ে যায়। 

সরকারি কর্মকর্তা রুবাই আফরোজ লিখেছেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় সেগুনবাগিচা থেকে রওনা হই সদরঘাটের উদ্দেশে। লঞ্চ ৮টায়। এইটুকু পথ ৪ ঘণ্টা হাতে রেখে বের হই। কিন্তু সদরঘাট যাওয়ার জন্য কোনো সিএনজি, উবার—কেউই রাজি হয়নি। পরে ব্যাগ ব্যাগেজ নিয়ে রিকশায় যাই অনেক কষ্ট করে।

তবে মানুষের এই দুর্ভোগ শুধু নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষেরই নয়। রাকিব হাসান নামে একজন লিখেছেন, সবখানে একই অবস্থা। চার ঘণ্টা বিলম্বে চলা ট্রেন এখন যমুনার পাড়ে এসে বিকল হয়ে বসে আছে। সড়কে তীব্র যানজট। উন্নয়নটা ভোগ করছে কে তাহলে?

মানিকগঞ্জের সাংবাদিক হাসান ফয়েজ লিখেছেন, ধামরাই ধুলিভিটা থেকে নয়ারহাট ৫ মিনিটের সড়ক। মোটরসাইকেলে ২ ঘণ্টায় এসেছি। পদ্মা সেতু পার হয়ে ৩ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়ার ঘল্প শুনে কী হবে আমাদের?

শেখ মামুন লিখেছেন, সকাল সোয়া ৯টার দিকে লিখেছেন, সায়েদাবাদ থেকে গোপালগঞ্জগামী গাড়ি সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা এখনও গাড়ি আসেনি!

শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, গাবতলী বাস টার্মিনালে হাজারো মানুষ আসছেন। কিন্তু কোনো বাসেই টিকিট নেই। এ কারণে অনেকেই হেঁটে আমিনবাজারের দিকে রওনা দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ গরু বিক্রি করে যাওয়া ফাঁকা ট্রাকে করে রওনা দিচ্ছেন। কেউবা বাসের ছাদে করেও যাচ্ছেন।

প্রশ্ন হলো, প্রতি বছর দুই ঈদে যে ৬০-৭০ লাখ বা তারও বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়েন এবং একসঙ্গে এত লোক ঢাকা ছাড়লে যে এরকম পরিস্থিতি হবে, সেটা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা জানেন না? জানলে এই বিশেষ সময়ের জন্য তাদের পরিকল্পনা কী? পরিকল্পনা কি সব এসিরুমের ভেতরে গৃহীত হবে এবং সেগুলো ফাইলে বন্দি থাকবে? পরিকল্পনাগুলো রাস্তায় কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে, তা কে দেখবে?

এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হবে না; এবারের ঈদযাত্রা অতীতের চেয়ে ভালো হবে—টিভি ক্যামেরার সামনে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই বক্তব্য যে কতটা অন্তঃসারশূন্য, তা কমলাপুর, সদরঘাট, সায়েদাবাদ ও গাবতলি পৌঁছানোর আগেই টের পাওয়া যায়। একটি ট্রেন এসে যখন থামে, তখন সেটিতে ওঠার জন্য হাজার হাজার মানুষ যে পঙ্গপালের মতো ছোটে; মানুষ যে ট্রেনে উঠে গরমে অতীষ্ঠ হয়ে জামা-কাপড় খুলে ফেলে; ছোট সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে প্রাণ নিয়ে ট্রেন থেকে বের হয়ে এসে মানুষ যে নতুন জীবন পাওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানায়—সেই দৃশ্য দেখে আমাদের মন্ত্রীদের লজ্জা হয় না। কারণ ট্রেন বা বাসে চড়ে তাদের বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

ঈদের দুই তিনদিন আগে থেকে রাস্তায়, ট্রেনে ও লঞ্চে যে এরকম বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হবে, সেটা সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের না জানার কোনো কারণ নেই। পুরান ঢাকার রাস্তাঘাট এমনিতেই সরু। সারা বছরই সদরঘাটে যেতে যানজট পোহাতে হয়। ঈদের সময় মানুষ ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ সামাল দেয়ার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া হয়?

গুলিস্তান, নবাবগঞ্জ মোড়, কোর্ট এলাকা, জগন্নাথ কলেজ, বাহাদুর শাহ পার্ক এবং সবশেষ বাংলাবাজার মোড়ে যদি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়; যদি এই সময়ে বিএনসিসি বা রোভার স্কাউটের কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা যায়; যদি প্রতিটি স্পটে অন্তত একজন করে সেনা সদস্যকে দাঁড় করিয়ে রাখা যায়, তাহলেও সদরঘাটমুখী যানবাহনগুলো শৃঙ্খলা মেনে চলতো। রাস্তায় যানবাহনগুলো আটকে যায় মূলত বিশৃঙ্খলার কারণে। সবাই আগে যেতে চায়। কিন্তু একসঙ্গে, একই সময়ে সবাই যে একটি টার্মিনালে পৌঁছাতে পারবে না; একটু আগপিছ হবে; আগপিছ হলে যে সবাই নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে—সেই বোধটুকু তৈরি হয় না। সবাই একসঙ্গে বিশৃঙ্খল হয়ে যায় বলেই উত্তরা থেকে ৭ ঘণ্টায়ও সদরঘাটে পৌঁছানো যায় না।

আমরা মূলত একটা বিশৃঙ্খল জাতি। ট্রেন এসে থামলে ভেতরের যাত্রীদের নামার সুযোগ না দিয়ে আগে নিজে উঠে যেতে চাই। তখন একজন বাবাকে চিৎকার করে বলতে হয়, ভাই আমার সাথে বাচ্চা আছে, দয়া করে একটু নামতে দিন। 

চারিদিকে উন্নয়নের ছড়াছড়ি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু। ঢাকা শহরে মেট্রোরেলও চালু হয়ে যাবে। কর্ণফুলী টানেল। এক্সপ্রেসওয়ে। আরও কত কী! কিন্তু এইসব উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে কে? কতজন? আমাদের সব উন্নয়ন কেন ঈদযাত্রায় এসে মুখ থুবড়ে পড়ে?

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন আর স্বস্তিদায়ক করতে রাষ্ট্রের পরিকল্পনা কী? মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়বে আর কতদিন? ১০ কিলোমিটারের পথ মানুষ ৩-৪ ঘণ্টায়ও যদি পৌঁছাতে না পারে; যদি কোনো সিএনজি অটোরিকশা বা রাইড শেয়ারের গাড়ি সদরঘাট, সায়েদাবাদ বা গাবতলী যেতে না চায়, তাহলে সেই শহরের গণপরিবহনব্যবস্থা এবং ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যারা ভাবেন, পরিকল্পনা করেন, সিদ্ধান্ত দেন এবং বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত—তাদের প্রত্যেককে প্রশ্ন করা দরকার, আপনারা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যখন গ্রহণ করেন, তখন সেখানে কত শতাংশ মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনায় থাকে? যে দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বল্প আয়ের, সেই দেশের পরিবহন ব্যবস্থাটি হওয়া দরকার ট্রেন, লঞ্চ ও বাসনির্ভর। কিন্তু রাজধানীর রাস্তায় প্রাইভেট কারের দাপট দেখলে বোঝার উপায় নেই, এই শহরে গণপরিবহন বলে কোনো কিছু আছে কি না। 

রাষ্ট্রের সমস্ত পরিকল্পনা বড়লোকবান্ধব। ফলে দুই ঈদের সময় লাখ লাখ মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে, অন্যের ঘাড়ের উপর পাড়া দিয়ে, লঞ্চের ছাদে, গরু বিক্রির ট্রাকে এবং দীর্ঘপথে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে ফেরার যুদ্ধ করতে হয়। রাষ্ট্র হয়তো তখন এইসব আমজনতার প্রতি ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করে: 'তোগো এই শহরে আইতে কইছে কে?'


  • আমীন আল রশীদ: নেক্সাস টেলিভিশনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর

এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে।

Related Topics

টপ নিউজ

ঈদযাত্রা / গণপরিবহন সংকট / গণপরিবহন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে পে কমিশন গঠন
  • ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না এমন ব্যাংকগুলোকে মার্জারের আওতায় আনা হবে: আহসান এইচ মনসুর
  • ৪৯ আরোহী নিয়ে রুশ বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহতের আশঙ্কা
  • তাপসের সঙ্গে ফোনালাপ: আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা
  • রেসলিং কিংবদন্তি হাল্ক হোগান মারা গেছেন
  • সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের ১৫ ড্রাইভারকে ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ

Related News

  • হাতিরঝিল চক্রাকার বাসে চালু হলো 'র‍্যাপিড পাস' সেবা
  • এই মৃত শহর আঁকড়েই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি আমরা 
  • সকাল ৮টার বাস ৩টায়ও ছাড়েনি, যানজটে বাসের শিডিউল বিপর্যয়
  • ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে থেমে থেমে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
  • বরিশালের ৫০০ টাকার বাসভাড়া ৮০০ টাকা

Most Read

1
বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে পে কমিশন গঠন

2
অর্থনীতি

ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না এমন ব্যাংকগুলোকে মার্জারের আওতায় আনা হবে: আহসান এইচ মনসুর

3
আন্তর্জাতিক

৪৯ আরোহী নিয়ে রুশ বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহতের আশঙ্কা

4
বাংলাদেশ

তাপসের সঙ্গে ফোনালাপ: আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

5
বিনোদন

রেসলিং কিংবদন্তি হাল্ক হোগান মারা গেছেন

6
বাংলাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের ১৫ ড্রাইভারকে ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net