ভারতের সঙ্গে ভিসা ইস্যু দ্রুত সমাধানের প্রত্যাশা পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, ভিসা ইস্যু করার সিদ্ধান্ত একটি দেশের 'সার্বভৌম অধিকার' হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি বলেন, 'আমরা ভিসা জটিলতা তৈরি করিনি। ভারত যেকোনো কারণে এটি বন্ধ করেছে। এটি তাদের সার্বভৌম অধিকার।' তিনি আরও বলেন, 'কোনো দেশ যদি কাউকে বা কোনো গোষ্ঠীকে ভিসা না দেয়, তবে সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না, কারণ এটি তাদের সিদ্ধান্ত।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তৌহিদ হোসেন জানান, তারা আশা করছেন যে ভারত তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে অথবা তাদের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে, যাতে যারা ভারত যেতে চান তারা ভিসা পেতে পারেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেসব কথা বলেছেন, তা পুরোপুরি বাংলাদেশের অবস্থান।
তিনি বলেন, 'আমরা সবসময় বলেছি, আমরা ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান এবং প্রতিদানের ভিত্তিতে একটি ভালো কার্যকরি সম্পর্ক চাই।' তিনি আরও বলেন, এটি তাদের স্পষ্ট অবস্থানের প্রতিফলন।
দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিবিসি বাংলা-কে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই, কারণ সম্পর্কের মধ্যে কিছু মেঘ ছিল, যা মূলত প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে।
তিনি সোমবার বিবিসি বাংলা-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'মাঝখানে কিছু বিরোধ দেখা গিয়েছিল। আমি বলব, কিছু মেঘ ছিল। এসব মেঘ মূলত প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। অন্যরা সেগুলোর উৎসকে প্রপাগান্ডা হিসেবে বিচার করবে।'
একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনুস বলেন, দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে 'কোনো অবনতি' ঘটেনি।
এরপর ড. ইউনুস বলেন, কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তিনি বলেন, 'আমরা এই ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি। আমাদের মৌলিক সম্পর্কের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।'
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি সবসময় ব্যাখ্যা করেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অনেক গভীর। তবুও সম্পর্ক ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা ভালো থাকবে। তিনি বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই।'
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক 'ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে' খুব কাছাকাছি এবং তারা 'এটি থেকে সরে যেতে পারেন না।'
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ধারাবাহিক যোগাযোগ রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে একটি বার্তা পাঠান। পরে তাদের মধ্যে একটি ফোনালাপ হয়। মোদি ড. ইউনূসকে গত বছরের ১৭ আগস্ট নয়াদিল্লিতে ভার্চুয়ালি আয়োজিত তৃতীয় 'ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ' শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।