ছাড় বাড়ায় রুশ তেলের দিকে আরও ঝুঁকছে ভারতীয় পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো

রাশিয়ান ইউরালস ক্রুডের ছাড় বাড়ায় ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও মস্কোর তেল কেনার বিষয়ে ট্রেডিং ফার্মগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের আগে এ খবরে নতুন করে উত্তেজনা বেড়েছে।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (এইচপিসিএল), ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসিএল) এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি পেট্রোকেমিক্যালসের (এমআরপিএল) মতো রাষ্ট্রীয় পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো গত মাসে রুশ তেল কেনা স্থগিত রেখেছিল। কারণ সেসময় ছাড় তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
ভারতের মোট দৈনিক তেল পরিশোধন সক্ষমতা ৫.২ মিলিয়ন ব্যারেল। এই পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটির মোট সক্ষমতার ৬০ শতাংশেরও বেশির যোগান দেয়। এসব প্রতিষ্ঠান সাধারণত সরবরাহ ভিত্তিতে রাশিয়ান তেল কিনে।
সূত্র জানায়, অক্টোবরে ভারতে সরবরাহের জন্য ইউরালস ক্রুডের ছাড় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ২.৭০ ডলার, যা জুলাইয়ের শেষ দিকে ছিল ১ থেকে ১.৫০ ডলারের মধ্যে। ফলে ইউরালস এখন আগের তুলনায় সস্তা।
২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ান তেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায়, ভারত রাশিয়ার সমুদ্রপথে পাঠানো তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হয়ে ওঠে।
ট্রাম্প গত মাসে হুঁশিয়ারি দেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে না এলে রাশিয়ার পণ্য কেনা দেশগুলোও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে। আজ শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
একটি সূত্র জানান, 'আমরা ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ফলাফলের দিকেই তাকিয়ে থাকব, এতে আমাদের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত থাকবে।'
বিপিসিএলের আর্থিক প্রধান ভেত্সা রামকৃষ্ণ গুপ্ত জানান, নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা না এলে প্রতিষ্ঠানটি তার ৩৫ শতাংশ পরিশোধন চাহিদা রাশিয়ান তেল থেকেই মেটাতে চায়।
জুলাইয়ে ছাড় কমে যাওয়ায় তাদের তেল কেনার হার কমে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি।
রাশিয়ান তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ব্রাজিল, পশ্চিম আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্পট মার্কেটে তেল কিনছে।
রাশিয়ান ইউরালস ক্রুড সাধারণত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের তুলনায় ছাড়ে বিক্রি হয়। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি আসে রাশিয়া থেকে।
এদিকে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নয়ারা এনার্জির মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চুক্তিভিত্তিতে রাশিয়ান তেল কিনে থাকে।