এক ক্লিকেই সর্বনাশ: অনলাইন জুয়ার ফাঁদ যেভাবে গ্রামের তরুণদের গ্রাস করছে

বরগুনার বেকার তরুণ শিহাব। ভেবেছিলেন, কপাল বুঝি খুলে গেছে। ডিজিটাল বাজি (বেটিং) আর জুয়ার সাইট থেকে দিনে প্রায় ১ হাজার টাকা আয় করতে শুরু করেছিলেন তিনি—একজন বেকারের জন্য যা বিশাল অঙ্ক।
প্রথম দিকের সাফল্যে গা ভাসিয়ে শিহাব আত্মীয়দের কাছ থেকে আরও টাকা জোগাড় করলেন, বন্ধুদের থেকে ধার নিলেন, তারপর সেই টাকা ঢালতে থাকলেন একের পর এক বেটিং সাইটে। মনে আশা, ভাগ্যের চাকা এবার ঘুরে যাবে।
কিন্তু যখনই তার বিনিয়োগ আর আয়ের অঙ্কটা বড় হতে লাগল, তিনি দেখলেন টাকাটা আর তোলা যাচ্ছে না। উল্টো লাভের ছাড় করার জন্য সাইট পরিচালনাকারীরা আরও টাকা দাবি করতে শুরু করল তার কাছে। তাকে তাদের ফাঁদে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলল।
শিহাব বলেন, 'আমি টাকা ঢালছিলাম, আর বেটিং অ্যাপে দেখাচ্ছিল যে হাজার হাজার টাকা জিতেছি। কিন্তু যখনই টাকাটা তুলতে গেছি, ওরা বলেছে আরও বিনিয়োগ করতে হবে—সেটাও করেছি। কিন্তু সেই টাকা আর কখনোই আমার হাতে আসেনি। অন্যান্য গেমেও আমি হাজার হাজার টাকা হারিয়েছি।'
হারানো টাকা ফিরে পাওয়ার মিথ্যে আশায় তিনি খেলা চালিয়ে যান। শেষপর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা খোয়া যায় তার।
একদিকে শোধ করতে না পারা ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে, অন্যদিকে অনলাইন জুয়ার সর্বনাশা নেশা শিহাবকে আরও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। টাকা হারানোর হতাশায় জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ।
তিনি বলেন, 'আমার জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে কীভাবে বের হব, জানি না ।'
গ্রামের তরুণদের সঙ্গে কথা বলে শিহাবের মতো ডিজিটাল বেটিং সাইটে আসক্ত এমন আরও বহু যুবকের সন্ধান মিলেছে। তারা বলেন, তাদের এলাকার বেশিরভাগ তরুণই এখন অনলাইন বাজির নেশায় বুঁদ হয়ে আছে।
গ্রামের তরুণেরা যেভাবে বেটিং সাইটের ফাঁদে পা দেন
ওয়ানএক্সবেট, মেলবেট, নগদএইটিএইট, ক্রিকেক্স, জিতবাজ, বেটউইনার, টুয়েন্টিটুবেট, মোস্টবেট, বেটজিলি-র মতো অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্মগুলো এখন বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বিদেশের সার্ভার ব্যবহার করে অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে কার্যক্রম।
গেমিং বা স্পোর্টস অ্যাপ বলে প্রচারণা চালালেও এসব প্ল্যাটফর্ম ভুয়া জয়, পাতানো গেম আর টাকা তোলার মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলে। মানুষের ডিজিটাল স্বাক্ষরতার অভাব আর অর্থনৈতিক দুরবস্থাকে পুঁজি করে ফায়দা লোটে এরা।
মূলত বাংলা ইন্টারফেস ও মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে স্থানীয় মোবাইল ব্যাংকিং পেমেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করে গ্রামের তরুণদের ঋণ আর আসক্তির দুষ্টচক্রে আটকে ফেলে এসব অ্যাপ। শুরুতে অল্প কিছু টাকা আয়ের সুযোগ দিয়ে ব্যবহারকারীকে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে উৎসাহ জোগানো হয়। কিন্তু কদিন পরই টাকা তোলার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়, ব্যালেন্স উধাও হয়ে যায়, অথবা আরও টাকা জমা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে।
আমরা গ্রামের যেসব তরুণদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়া বা পর্নোগ্রাফিক সাইটে দেখানো বিভিন্ন অনলাইন বিজ্ঞাপন থেকে তারা এসব জুয়ার সাইটের সন্ধান পেয়েছেন।
অনেক অসাধু ওয়েবসাইট বেটিংয়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করে। এর মধ্যে এমন প্ল্যাটফর্মও আছে, যেখান থেকে ব্যবহারকারীরা সিনেমা বা টিভি শো ডাউনলোড করেন। এসব সাইটে ঢুকলেই কিছুক্ষণ পরপর বেটিংয়ের পপ-আপ বিজ্ঞাপন ভেসে ওঠে। মাত্র একটা ক্লিক করলেই ব্যবহারকারী সোজা পৌঁছে যান সাইন-আপ পেজে। এভাবেই বেটিং সাইটগুলো সবার জন্য সহজলভ্য হয়ে উঠছে।
রাজবাড়ীর একটি গ্রামের বাসিন্দা শফিউর রহমান অনলাইন জুয়ায় নিজের আসক্তির কথা স্বীকার করে জানান, তিনি ডিজিটাল জুয়ার খোঁজ পেয়েছিলেন একটা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।
এই যুবক বলেন, 'আমি অনলাইন বিজ্ঞাপন দেখে এই জগতে আসি। তারপর আমার মাধ্যমে আমার অনেক বন্ধুও এই প্ল্যাটফর্মে যোগ দেয়। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমার পরিচিতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি (যাদের স্মার্টফোন আছে) এই অনলাইন জুয়ায় আসক্ত।'
বছরের পর বছর ধরে অনেক নামীদামি তারকাও এসব বেটিং প্ল্যাটফর্মের প্রচারণায় তাদের চেহারা—কখনও কখনও কণ্ঠ—ব্যবহার করেছেন। কয়েক মাস আগে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে এমনই একটি প্ল্যাটফর্মের প্রচারণামূলক গানে দেখা গিয়েছিল। প্ল্যাটফর্মটির নিজস্ব ওয়েবসাইট অনুযায়ী, নুসরাত ফারিয়া তাদের অফিশিয়াল ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও একাধিকবার বেটিংয়ের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে। গত বছর একটি ভারতীয় বেটিংকে কেন্দ্র কেলেঙ্কারির সময় ওই প্ল্যাটফর্মের বিনিয়োগকারীদের তালিকায় তার বোন জান্নাতুল হাসানের নাম উঠে আসে।
এমনকি অনেক ইউটিউবারও আছেন যারা কাস্টমাইজড রেফারেল কোড ব্যবহার করে বেটিংয়ের প্রচারণা চালান। তারা সক্রিয়ভাবে নিজেদের ভিডিওতে এসব কোডের বিজ্ঞাপন দেন। কেউ যদি সেই কোড ব্যবহার করে যোগ দেয়, তাহলে যিনি রেফার করছেন এবং যিনি নতুন যোগ দিচ্ছেন, দুজনেই বোনাস পান। এই ব্যবস্থায় প্রচারণা চালালেই পুরস্কার মেলে।
যে-কেউ তার বন্ধুকে রেফার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে যে ব্যক্তি সাইন আপ করছেন, তিনি বোনাস পান। যারা ইতিমধ্যে এই ফাঁদে পা দিয়েছেন, তারাও নতুন কাউকে এই চক্রে টেনে আনার জন্য পান বোনাস। গ্রামেগঞ্জে এভাবেই ছড়াচ্ছে বেটিং। কেউ বন্ধুর মাধ্যমে এ জগতে ঢোকেন তো কেউ চাচাতো ভাই বা প্রতিবেশীর হাত ধরে।
আচরণগত পরিবর্তন
২০২৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। এই প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইটগুলোতে নিয়মিত দেখানো হয় বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন। ফলে জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ এক ক্লিকেই ঢুকে পড়ে বেটিং প্ল্যাটফর্মে।
একসময় যা শহুরে জীবনযাত্রায় সীমাবদ্ধ ছিল, সেই স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন গ্রামাঞ্চলের গভীরেও ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষত কিশোর ও তরুণদের মধ্যে। গ্রামের যে তরুণদের একসময় খোলা মাঠে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলতে দেখা যেত, এখন তাদের বিকেল কাটে রাস্তার ধারের টং দোকানে বা চায়ের স্টলে, মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখে, বেশিরভাগ সময়ই অনলাইন গেম খেলে।
জার্নাল অভ পাবলিক হেলথ ইন বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাসহ একাধিক সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশের গ্রামের প্রাক-স্কুলগামী শিশুদের অর্ধেকের মধ্যেই ইতিমধ্যে স্মার্টফোনে আসক্তির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ এই গোষ্ঠীর শিশুদের মধ্যে একেবারেই অল্প বয়স থেকে ব্যাপক ডিজিটাল-নির্ভরতা তৈরি হচ্ছে।
আচরণগত এই পরিবর্তনের ফলে তাদের শারীরিক কার্যকলাপ কমে গেছে এবং ডিজিটাল জুয়ার প্ল্যাটফর্মসহ অন্যান্য অনলাইন ঝুঁকির মুখে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। গবেষকরা এই প্রবণতাকে একটি বৃহত্তর ডিজিটাল আসক্তি সংকটের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর পেছনে রয়েছে সস্তা স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা ও গ্রামীণ সমাজে অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব।
শহর ও গ্রামের তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল স্বাক্ষরতার এই ব্যবধানও গ্রামের অনেক তরুণকে অনলাইন প্রতারণা বা জালিয়াতির সহজ শিকারে পরিণত করে। শহরের তরুণেরা হয়তো এসব বিষয়ে বেশি সতর্ক বা সচেতন, কিন্তু গ্রামের কিশোরদের প্রায়শই এসব বিপদ চেনার মতো জ্ঞান থাকে না—যার কারণে তারা প্রতারক জুয়ার অ্যাপ ও ভুয়া ওয়েবসাইটগুলোর প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে।
বেটিং ওয়েবসাইটের হুবহু নকল: শিকার ধরার আরেক ফাঁদ
জনপ্রিয় বেটিং ওয়েবসাইটগুলোর অনেক নকল সংস্করণ রয়েছে। এগুলোকে ফিশিং সাইটও বলা হয়। প্রথম দৃষ্টিতে সাইটগুলোকে দেখতে হুবহু আসল প্ল্যাটফর্মের মতোই লাগে। ডিজাইন, লেআউট, এমনকি নাম পর্যন্ত প্রায় একই রকম।
কখনও কখনও সাইটের নাম একই বা খুব কাছাকাছি রাখা হয়। একমাত্র চোখে পড়ার মতো পার্থক্য থাকে ডোমেইনের শেষে। যেমন, আসল সাইটের শেষে 'ডটকম' থাকলেও নকল সাইটের শেষে থাকতে পারে 'ডটআইও', 'ডটসিও', 'ডটভিআইপি', বা 'ডটপিআরও'। যারা ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন, তারা প্রায়ই এই পার্থক্য ধরতে পারেন না।
ফলে ভুক্তভোগীরা প্রায়ই এসব নকল সাইটে টাকা বিনিয়োগ করে বসেন, ভাবেন আসল প্ল্যাটফর্মই ব্যবহার করছেন বুঝি। কিন্তু পুরো টাকাটাই সোজা চলে যায় প্রতারকের পকেটে। এখানে জেতার কোনো সুযোগ নেই, টাকা তুলে নেওয়ারও কোনো উপায় থাকে না।
শফিউর বলেন, 'এসব নকল সাইটে আমি হাজার হাজার টাকা হারিয়েছি। আসল আর নকলের মধ্যে পার্থক্য করা খুব কঠিন হওয়ায় অনেকেই এভাবে টাকা হারিয়েছে।'
এসব বেটিং সাইটে সাধারণত নানা ধরনের গেমের আয়োজন থাকে। খেলার জন্য প্রথমে টাকা জমা দিতে হয়। জিতলে ব্যবহারকারীকে নগদ পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই টাকা তাদের হাতে পৌঁছায় না।
টাকা তোলার প্রক্রিয়া আটকে দিতে বা দেরি করাতে সাইটগুলো নিত্যনতুন ছোটখাটো অজুহাত দেখায়। কেউ কখনও বড় অঙ্কের টাকা জিতলেই প্ল্যাটফর্মে দেখানো হয় কৃত্রিম ত্রুটি বা সিস্টেমের গণ্ডগোল। ফলে জেতা টাকাটা আটকে যায়। খেলোয়াড় অপেক্ষা করতে থাকেন, কিন্তু সেই টাকা আর তার হাতে আসে না।
এসব সাইটে সাধারণত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য টাকা লেনদেন খুব সহজ হয়ে গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, 'অনেকেই স্রেফ সময় কাটানোর জন্য অনলাইন জুয়া শুরু করলেও এটি ধীরে ধীরে এক ধরনের মানসিক নির্ভরতায় রূপ নেয়। একটা পর্যায়ে কারও কারও এমন অবস্থা হয় যে দিনে অন্তত একবার জুয়া না খেললে তারা স্বস্তি পান না।'
'জুয়ায় জড়িয়ে পড়লে মানুষ নিজের, পরিবারের ও সম্পর্কের প্রতি তাদের দায়িত্বের কথা ভুলে যায়। অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়া অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনাতেও অবহেলা করতে শুরু করে,' বলেন তিনি।
ডিজিটাল জুয়ার বিস্তার রোধে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এসব প্ল্যাটফর্মের নেপথ্যের নেটওয়ার্কগুলোকে ধ্বংস করাসহ আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, জনসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, বরং এটি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
তৌহিদুল হক বলেন, 'একটা সময়ে জুয়ায় আসক্ত ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারেন। তাদের সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়, তারা একাকিত্ব ও হতাশায় ভোগেন। তাদের সামাজিক জীবন বলে কিছু থাকে না। তারা যদি এই আসক্তি থেকে বের হতে না পারেন, তবে রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে দাঁড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।'
এই ধরনের জুয়ার বিষয়ে বিদ্যমান আইন কী বলে?
কোনো বিধিবিধান বা আইনি সুরক্ষা না থাকায় ভুক্তভোগীরা হাজার হাজার থেকে লাখ লাখ টাকা খোয়াচ্ছেন—সঙ্গে বিপন্ন হচ্ছে তাদের সম্পর্ক ও মানসিক স্থিতি। দেশজুড়ে গ্রামগুলোতে বেটিংয়ের এই নেশা নীরবে মহামারির রূপ নিচ্ছে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ২০ ধারা অনুযায়ী, জুয়ায় অংশ নেওয়া বা এর প্রচারণা করা ফৌজদারি অপরাধ।
আইনি বাধা থাকার পরও অনলাইন বেটিং ও জুয়া দেশের গ্রামাঞ্চলে ত্বরিত বেগে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ডিজিটাল বিপদ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে—জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) শাহাদাত হোসেন বলেন, তাদের সাইবার মনিটরিং ইউনিট 'সক্রিয় রয়েছে এবং এ ধরনের প্ল্যাটফর্মের প্রচারকারী পেজ ও অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে'।
শাহাদাত আরও বলেন, অবৈধ অনলাইন জুয়া পরিবার, তরুণ প্রজন্ম ও দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ হুমকি। গ্রামাঞ্চলগুলো এই জুয়ার কারণে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা একে এক ধরনের ডিজিটাল আসক্তিতে পরিণত করেছে। অনলাইন জুয়ায় অংশ নেওয়া, এর প্রচারণা চালানো কিংবা এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করা—সবই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সহায়তায় আমরা সন্দেহজনক ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্লক এবং বন্ধ করতেও কাজ করছি।'
- বিশেষ দ্রষ্টব্য: ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা ও পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে প্রতিবেদনে তাদের আসল নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।