বে টার্মিনাল প্রকল্প: প্রতীকী মূল্যে ৫০০ একর জমি বরাদ্দ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়াতে সাত বছর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৭ একর জায়গা বরাদ্দ পায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এবার প্রকল্পটির জন্য অতিরিক্ত ৫০০ একর সরকারি খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাস জমি বরাদ্দ পাওয়া বে টার্মিনাল প্রকল্পের বড় ধরনের অগ্রগতি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ মাত্র তিন কোটি তিন টাকা প্রতীকী মূল্যে ৫০০.৭ একর সরকারি খাস জমি বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে। এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জমি বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন শীঘ্রই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে টাকা পরিশোধ করতে চিঠি দেবে। চিঠি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি বরাদ্দ পাওয়ায় বে টার্মিনাল প্রকল্পের সক্ষমতা এখনকার চেয়ে ছয় গুণ বাড়বে। এতে থাকবে চারটি টার্মিনাল। প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বাকি জমিও বরাদ্দের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী জুন নাগাদ সব জমি বরাদ্দ পাওয়া যাবে এমনটাই প্রত্যাশা বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি জমিগুলোও বরাদ্দ পাওয়ার আশা করছেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা হালিশহর এলাকার সাগর উপকূলে মোট আড়াই হাজার একর জমিতে গড়ে উঠছে বে টার্মিানাল প্রকল্প। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৬.৮৫ একর জায়গা বুঝে পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। এছাড়া বে টার্মিনাল প্রকল্পে বন বিভাগের ১২৪ একর জায়গা ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বন্দোবস্তি পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
সেই সঙ্গে মালিকানা দাবি করা বিভিন্ন ব্যক্তির মামলাভুক্ত ১৮৮ একর জমি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আর প্রকল্পটির জন্য বাকি এক হাজার ৬২০ একর জায়গা সমুদ্র থেকে রিক্লেইম (পুনরুদ্ধার) করা হবে।
গত বছরের জুলাইয়ে ৫০০ একর খাস জমির মূল্য এক হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন। এই ৫০০ একরের মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা, আগ্রাবাদ ও কাট্টলী সার্কেলের জমি। তবে ওই জমি প্রতীকী মূল্যে পেতে চট্টগ্রাম বন্দরের করা আবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, 'জমি বরাদ্দ পাওয়া নিঃসন্দেহে বড় ধরনের অগ্রগতি। নতুন এই বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে বাংলাদেশে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে।'
এ বছরই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এবং ২০২৬ সালে আংশিকভাবে কার্যক্রম শুরু করারও লক্ষ্য রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
এদিকে প্রকল্পটির নির্মাণে এ বছর ১১.৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগের আশা করছে চট্টগ্রাম বন্দর।