নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ

নবজাতক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালটির আইসিইউ ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) একটি আদেশ জারি করেছে।
ডিজিএইচএস-এর একটি পরিদর্শন দল হাসপাতাল পরিদর্শন করার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মাহবুবা রহমান আঁখি নামে একজন সিজারিয়ান রোগীর সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতারণার অভিযোগ আনার পর হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হলো। উল্লেখ্য, আঁখিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ১৪ জুন আঁখির পরিবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করে। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লিখিত অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার ওপর সেন্ট্রাল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ সেবা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ডিজিএইচএস-এর হাসপাতাল ও ক্লিনিক-এর পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ জুন) সিজারিয়ান রোগী মাহবুবা আঁখির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সন্তান প্রসবের সময় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহা উপস্থিত থাকার কথা বলে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতাল তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যার ফলে নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং মা গুরুতর আহত হয়েছেন।
রোগী আঁখির চাচাতো ভাই সাখাওয়াত হোসেন শামীম টিবিএসকে বলেন, 'ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখে আমার বোন সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারি করতে চেয়েছিলেন। শুক্রবার মধ্যরাতে প্রসব হলে তাকে কুমিল্লা থেকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
'ভর্তি হওয়ার পরপরই নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রেসক্রাইব করা ৪০ মিনিটের ব্যায়াম করানো শেষে আঁখিকে হঠাৎ অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে সংযুক্তা সাহার সহকারী ডা. শাহজাদী ডা. মিলি নামে আরেকজন চিকিৎসককে ডাকতে বেরিয়ে আসেন। তিনি আমাদের জানান যে অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে নেই, দেখি আমি কী করতে পারি।'
শামীম বলেন, 'তখন আমরা জানতে চাইলাম আমাদের ডাক্তার নেই, তাহলে অপারেশন করল কে? অপারেশন করেছেন তার সহকারী ডা. শাহজাদী। তখন আমরা বুঝতে পারি আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। আমার বোন ও বাচ্চা সুস্থ-স্বাভাবিক ছিল—দুজনেই আহত হয়েছে।' শামীম জানান, তখন তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু হাসপাতালের পক্ষ থেকে সস্তোষজনক জবাব পাননি।
একপর্যায়ে স্বজনরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ আসে। 'পুলিশ এসে কথা বললে তারা রোগীকে বিএসএমএমইউতে সিসিইউতে নিতে বলে। সেখানে সিট খালি না থাকায় পরদিন বিকেলে ল্যাবএইডে সিসিইউতে নেওয়া হয়,' বলেন শামীম।
তিনি বলেন, 'আমার বোনটি এখন লাইফ সাপোর্টে আছে, তার সব অরগান ফেইল করেছে, ডাক্তাররা হয়তো মৃত ঘোষণা করবেন। বাচ্চাটা তো আগেই মারা গেছে।'