চিকিৎসকদের সুরক্ষায় ডক্টরস সেফটি চেম্বার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ফ্রন্টলাইনের এই যোদ্ধাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। মূলত রোগী তথ্য গোপন করার কারণেই বেশিরভাগ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ।
হাসপাতালে আগত কোনো রোগী বা স্বজনদের মাধ্যমে যেন চিকিৎসকরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত না হন, সেজন্য জেলা সদর হাসপাতালে 'ডক্টরস সেফটি চেম্বার' করে দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।
বাক্সের আদলে তৈরি করা চেম্বারটির ভেতরে থাকবেন চিকিৎসক আর বাইরে থাকবেন রোগীরা। হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনেই চেম্বারটি করা হয়েছে। আগামী রোববার সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, স্বচ্ছ কাঁচ ও স্টিল দিয়ে ডক্টরস সেফটি চেম্বারটি তৈরি করতে সময় লেগেছে সাতদিন। এ কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। চেম্বারটি তৈরিতে খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। সাংসদ মোকতাদির চৌধুরী এবং ছাত্রলীগ নেতারা এই অর্থের যোগান দিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে 'ডক্টরস সেফটি চেম্বারটি' রাখা হয়েছে। চিকিৎসক ও রোগীদের কথোপকথনের জন্য চেম্বারের ভেতরে ও বাইরে দুটি আলাদা মাইক্রোফোন সংযুক্ত করা হয়েছে। কোনো রোগীকে স্পর্শ করার প্রয়োজন হলে কাঁচের ভেতর দিয়ে গ্লাভসও লাগানো হয়েছে। এ ছাড়াও চেম্বারের ভেতরে চিকিৎসকদের বিশ্রামের জন্য রাখা হয়েছে বেঞ্চ।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, কিছু রোগী তথ্য গোপন করার কারণে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেজন্যই আমরা চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য এই সেফটি চেম্বার তৈরি করেছি।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস এখন কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে গেছে, তাই আমরা জানি না কে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী আর কে নন। সেক্ষত্রে চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য চেম্বারটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, এ চেম্বারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা নিরাপত্তা বজায় রেখে রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, সেবা দিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবাসীসহ ৫৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন দুইজন। আর সুস্থ্য হয়েছেন ২৮ জন। বাকিরা আইসোলেশনে রয়েছেন।