“স্ত্রীকে মেরে ফেলছি, আমাকে নিয়ে যান”: হত্যার পর ৯৯৯-এ স্বামীর ফোন

"আমি আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলছি, আমি ঘরে আছি, আত্মসমর্পণ করব। আপনারা আমাকে নিয়ে যান" — গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরে স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ -এ ফোন করে এভাবেই বলছিলেন রাকিব হাসান।
বিষয়টি তখন কাশিমপুর থানা পুলিশকে জানানো হয়, পুলিশ গিয়ে স্বামীকে গ্রেফতার এবং ঘরের ভিতরে খাটের ওপর পড়ে থাকা স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন ২ নম্বর ওয়ার্ডের চক্রবর্তী এলাকায়।
নিহত গৃহবধুর নাম জেমি (১৯)। তিনি দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জ থানার মিচরিগোলা গ্রামের মৃত জাহিদুল ইসলামের মেয়ে।
তাঁর স্বামী, গ্রেপ্তার রাকিব হাসান (২২) বগুড়া জেলার লতিফপুর এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। তাদের তাজিম নামের ২ বছরের শিশু সন্তান ও রাইসা আক্তার জেরীন নামের ২ মাসের আরেক শিশু সন্তান রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, জিএমপির কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই দম্পতির মধ্যে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। স্থানীয়ভাবে একবার মীমাংসাও করা হয়। কিন্তু গত শুক্রবার সন্ধ্যার পরে কোনো এক সময় রাকিব তার স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনি নিজেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে সে ঘরেই পুলিশের জন্য অপেক্ষা করেছেন।
এসময় ঘরের ভেতর মায়ের নিথর দেহের পাশে কাঁদছিল ২ বছরের শিশু সন্তান তাজিম ও ২ মাসের আরেক শিশু রাইসা আক্তার জেরীন।
খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাকিবকে কান্নাকাটি করতে এবং ঘরে ভেতর স্ত্রীর লাশ দেখতে পায়। পুলিশ গ্রেফতারের জন্য হাতকড়া পড়ানোর সময় তাকে অনুশোচনা করে কাঁদতে দেখা যায়। তাদের স্বজনেরা কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, রাকিবরে তুই কি করলি। এখন তোর বাচ্চা দুইটারে কে দেখব? তাদের কান্না উপস্থিত সকলকে আবেগাপ্লুত করে তোলে।
জিএমপির কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান জানান, "নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।