বিপিএলের টিকেট বিক্রি: ১০ আসরে ১৫ কোটি, এই আসরেই আয় ১৩ কোটি টাকা

কদিন আগে পর্দা নামা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপএল) একাদশ আসরে প্রচুর দর্শক উন্মাদনা দেখা গেছে। তিন ভেন্যু ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রায় সব ম্যাচেই দর্শকে ঠাসা গ্যালারি দেখা গেছে। আসর শুরুর দিকে দর্শক উন্মাদনা রূপ নিয়েছিল বিক্ষোভে। টিকেট না পেয়ে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গেট ভাংচুর, বিক্ষোভ হয়। এমনকি বুথে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেচে এবার।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে টিকেট নিয়ে জটিলতা কমেছে। বুথ ও অনলাইন থেকে টিকেট কেটে মাঠে খেলা দেখেছেন দর্শকরা। টিকেট বিক্রির কাজটি শেষ পর্যন্ত সফলভাবেই করেছে আয়োজকরা। তাতে রীতিমতো রেকর্ড আয় হয়েছে। আগের দশ আসরের টিকেট বিক্রির সম্মিলিত আয়ের প্রায় সমান আয় হয়েছে এবারের আসর থেকেই। সোমবার এ তথ্য দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
এক ভিডিও বার্তায় বিসিবি সভাপতি জানান, টিকেট থেকে এবার রেকর্ড সংখ্যক আয় হয়েছে। এবারের আসরে টিকে থেকে বিসিবির আয় ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের দশ আসর মিলিয়ে টিকেট থেকে বিসিবির আয় ১৫ কোটি টাকার কাছাকাছি ছিল বলে জানান ফারুক আহমেদ।
বিসিবি প্রধান বলেন, '"আমরা এবার অবিশ্বাস্যরকম সফলভাবে টিকেট বিক্রি করেছি। এটার বড় কারণ ছিল, আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গিয়েছি। এটি অত্যন্ত নিরাপদ ব্যবস্থা। বিশ্বকাপে যেভাবে টিকেট বিক্রি হয়, ঠিক সেভাবেই। যদিও পুরোপুরি অনলাইন যেতে পারিনি। নতুন একটা সিস্টেম দেখার জন্য (বিপিএলের) প্রথম পর্বে আমরা ৩৫ শতাংশ ও প্লে অফে ৪০ শতাংশ টিকেট দিয়েছিলাম অনলাইনে। সব মিলিয়ে পুরো বিপিএলে আমরা প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি করেছি।'
বিপিএলের আগের দশ আসরে টিকেট বিক্রি থেকে আয়ের পরিমাণ উল্লেখ করে ফারুক আহমেদ বলেন, 'ছোট্ট একটা তুলনা যদি দিই, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গত ১০ আসরে টিকেট বিক্রি করেছে ১৫ কোটি টাকার মতো। সেটা বিবেচনা করলে আমরা এক বছরেই সেটার কাছাকাছি চলে গিয়েছি। আমরা টিকেটস্বত্ব বিক্রি বাবদ এক কোটি টাকা করে তিন বছরের চুক্তি করেছি। তার মানে, টিকেট বিক্রির সঙ্গে যদি এটা যোগ করি এ বছর, তাহলে সোয়া ১৩ কোটি টাকার মতো হবে। এটা একটা বিরাট মাইলফলক। উত্তরোত্তর আমরা আরও এগিয়ে যাব।'
বিপিএলের সব আসরেই আলোচনা থাকে ফ্র্যাঞ্জাইজিদের সঙ্গে লভ্যাংশ ভাগাভাগি করা ব্যাপারটি। অনেক আগে থেকেই এই দাবি করে আসছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও ব্যাপারটি আলোর মুখ দেখেনি। এবার কিছু পরিমাণে হলেও লভ্যাংশ ভাগাভাগি করা হচ্ছে, এমনই ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তবে আসরের মূল আয় থেকে নয়, টিকেট বিক্রির লভ্যাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ফারুক আহমেদ বলেন, 'ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সব সময়ই একটা বড় দাবি ছিল রেভিনিউ শেয়ারিং। তখন তাদের বলেছিলাম, আসলে লাভটা কত কী হয়, এটাই আমি জানি না। তাই আমার পক্ষে তখন কিছু বলা সম্ভব ছিল না। তবে সব ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য সুখবর... যদিও রেভিনিউ শেয়ারিং বলতে সব ক্ষেত্রেই ভাগাভাগি বোঝায়, কিন্তু অন্যগুলো ওরকম করে করতে পারিনি। তাই টিকেট বিক্রির যে আয় হয়েছে, এখান থেকে একটা ভালো অংশ সাত ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়ার চেষ্টা করবো।'
আসরের শুরুর দিকে নানা অসংলগ্নতা ছিল, সবই মেনে নেন বিসিবি সভাপতি। তবে ভালোভাবে শেষ করতে পারায় তৃপ্তিও আছে তার, 'বিপিএলে অবশ্যই কিছু ঘাটতি ছিল। প্রথম দিকে টিকেট... নতুন একটা সিস্টেম... ঝামেলা ছিল। সব কিছু আমি মেনে নিচ্ছি। দুই-একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টাকা দেওয়ার ব্যাপারেও একটু অসুবিধার সৃষ্টি করেছে। এটা নিয়ে অনেক নেতিবাচক খবর হয়েছে।'
'তবে যদি সার্বিকভাবে বিপিএল দেখেন... দর্শক, উইকেট, টিকেট বিক্রি, দর্শকদের অংশগ্রহণ এবং আমাদের যে টিভি প্রোডাকশন… টিভি ক্রু থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকা। স্যার কার্টলি অ্যামব্রোস বলেছেন, তার দেখা মতে, উইকেট ও সব কিছু মিলিয়ে গত তিন বছরের মধ্যে এটা সেরা বিপিএল। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।' যোগ করেন ফারুক আহমেদ।