জামিন দিলে সব টাকা শোধ করে দেব, পালিয়ে যাব না: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম

'আমি জামিন পেলে সব টাকাই শোধ করে দেব। আমাকে জামিন দিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেন। আমি পালিয়ে যাব না।' আদালতকে এসব কথা বলেছেন নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতের জামিন শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ওয়ালিউর ইসলাম তুষার তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, 'আসামি বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তি। গত ৫ মাস ধরে তিনি জেলহাজতে আটক রয়েছেন। তিনি একজন গ্রুপ অভ কোম্পানির চেয়ারম্যান। তার অধীনে অনেক কর্মচারীরা কাজ করেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে যেকোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।'
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান নজরুল ইসলাম। এ সময় আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, 'আমি সব টাকাই শোধ করে দেব। আমাকে জামিন দিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেন। আমি পালিয়ে যাব না। আমি ১৯৯০ সালে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ব্যবসা নিয়ে গিয়েছি।'
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, 'আমার প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ জড়িত। তাদেরকে মাসে ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। আমি কারাগার থেকে বের না হলে তারা সবাই কাজ হারাবে। আমার ব্যবসা ধরার কোনো লোকও নেই। আমার দুই ছেলে লন্ডনে পরিবার নিয়ে থাকে। আমার কোম্পানিতে ৮০ থেকে ৯০টি ট্রাক ছিল; এখন ২০টা আছে। আমাকে জামিন দেন, যাতে আমি সব টাকা পরিশোধ করতে পারি। দুদকের যে অভিযোগ, তার বিষয়ে আমি পুরোপুরি অবগত নই। আমার পেছনে অনেক কর্মচারীরা আছেন, তারা এসব কাজ করতে পারেন। আমাকে জামিন দেন।'
এরপর বিচারক বলেন, 'জেলহাজতে থেকে টাকা পরিশোধ করেন। ধৈর্য ধরেন। জামিন পাবেন।'
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছে।