দুর্বার পথচলায় ক্রমেই উজ্জ্বল ‘স্বাধীন’ নাহিদ
'নাহিদ রানা খুবই স্পেশাল। বাংলাদেশ থেকে এমন দ্রুতগতির একজন বোলার উঠে আসতে দেখা দারুণ ব্যাপার। সে খুব খুব ভালো। আমি মনে করি, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক দূর যাবে।' কথাগুলো বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ মিকি আর্থারের। যে ম্যাচের পর নাহিদকে প্রশংসায় ভাসান আর্থার, সেই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করলেও উইকেট পাননি নাহিদ। ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য।
তাই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গতিময় বোলারকে প্রশংসায় ভাসালেও উইকেট নেওয়ার ব্যাপারটি উল্লেখ করেন রংপুরের দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ। বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। আজ রংপুরের দ্বিতীয় ম্যাচেও আজ দুর্বার ছিলেন নাহিদ, মাঝে উইকেট নিতে পারেননি। যদিও এটা আজ আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে না, কারণ আগে-পরে মিলিয়ে আগুনঝরা বোলিংয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ৪ ওভারে তার খরচা ২৭ রান।
টি-টোয়েন্টি নিঃসন্দেহে এটা দারুণ বোলিং ফিগার। তার এমন বোলিংয়ে জিতেছে রংপুর, বল হাতে নেতৃত্ব দেওয়ায় নাহিদ হয়েছেন ম্যাচসেরা। গতির পাখা মেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম লেখানো নাহিদ স্তুতি চলছে সবখানেই। যদিও এটা শুরু হয়েছে গত আগস্টে পাকিস্তান সফর থেকে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও দেখা গেছে নাহিদের দাপট। ধারাবাহিকভাবে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করার পাশাপাশি উইকেট নেওয়াতে দেখিয়ে যাচ্ছেন পারদর্শীতা।
আজকের ম্যাচের পর রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান জানালেন, তাকে স্বাধীনতা দেওয়া আছে, নিজের মতো করেই বোলিং করে যাচ্ছেন তিনি। সোহানের ভাষায়, 'নাহিদ স্বাধীনভাবে বোলিং করছে। খুবই দ্রুতগতির বোলার। নিজের মতোই বোলিং করছে। সে যখন কোনো কিছু নিয়ে সংশয়ে থাকে, তখন আমাকে বলে যে এটা করতে চাই। আমার মনে হয়, ও নিজের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভালো বোলিং করছে। মাত্র দুটি ম্যাচ হয়েছে। আমরা দল থেকে চাইব, সে যেভাবে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেটাই করুক। প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করুক।'
গতিময় বোলারদের ইনজুরির ঝুঁকি বেশি থাকে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাহিদ প্রায় নতুন। এমন সময়ে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টসহ আরও কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। দুই ফরম্যাটে অভিষেক হয়ে গেছে নাহিদের, হয়ে উঠছেন নিয়মিত সদস্য। সঙ্গে বিপিএলসহ ঘরোয়া ক্রিকেটেও তাকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। নাহিদের ব্যাপারে বিসিবি থেকে কোনো নির্দেশনা আছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সোহানের কাছে।
রংপুর অধিনায়ক বলেন, 'পেস বোলার যারাই থাকে, সবারই একটা সেট-আপ থাকে কীভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করবে। একইসঙ্গে দল ওর কাছে যেটা চাচ্ছে, সেটা দেওয়ার জন্য ভালোভাবে চেষ্টা করছে। ও খুব ভালোভাবে জানে নিজের যত্ন কীভাবে নিতে হবে। অবশ্যই বিসিবি থেকে ফিজিও, ট্রেনাররা পর্যবেক্ষণ করছে। তাই আমার মনে হয়, এটা বড় কোনো ইস্যু না। এখন আর ওই দিন নাই। আমাদের পেস বোলিং যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সবাই নিজেরটা জানে কার কী করতে হবে।'
