‘অধিনায়ক পারফর্মার না হলে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া যায় না’

শিরোনামের কথাটি যখন কোনো অধিনায়ক বলেন, বুঝে নিতে হবে; তার পায়ের নিচের মাটি শক্ত। অবস্থানে বলীয়ান তিনি। অধিনায়ক হিসেবে নিজে পারফর্ম করলেই কেবল এভাবে বলা সম্ভব। মেহেদী হাসান মিরাজ সেটা করেছেন, নেতৃত্বভার সামলে ব্যাটে-বলে কীভাবে দলকে পথ দেখাতে হয়; সেই রাস্তা আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি। কদিন আগে পর্দা নামা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খুলনা টাইগার্সকে প্লে-অফে তোলার পথে কাণ্ডারী ছিলেন এই অলরাউন্ডার।
১৪ ম্যাচে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ প্রায় ১৩৩ স্ট্রাইক রেট ও ২৭.৩০ গড় ৩৫৫ রান করা মিরাজ বল হাতে নেন ১৩ উইকেট। আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো জিতেছেন বিপিএলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। অধিনায়ক হিসেবে এভাবে অবদান রাখতে পেরে তৃপ্ত ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। বিপিএলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও মিরাজকে দিয়েছে অপার আনন্দ। তবে ফাইনাল খেলতে না পারার আক্ষেপও কম পোড়ায়নি তাকে।
জাতীয় দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়ার আগে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বিপিএল অভিজ্ঞতা, অধিনায়কত্ব, বিপিএল সংস্কার, জাতীয় দলে ব্যাটিং পজিশন, টি-টোয়েন্টি দলে নিজের অবস্থান নিয়ে ভাবনা, ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়ার হতাশা, তৎকালীন সভাপতির সিন্ধান্তে না বলা, সাকিব আল হাসানের মতো অলরাউন্ডার হওয়ার চেষ্টাসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন মিরাজ।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড: বিপিএলের অভিজ্ঞতা জানতে চাই, কেমন গেল?
মেহেদী হাসান মিরাজ: বিপিএলে আমি নিজেকে যেভাবে চিন্তা করেছিলাম, তেমন হয়েছে। খুবই ভালো হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। কারণ, একবার ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল আমার। সাত-আট বছরের বিপিএল ক্যারিয়ারে আমি এর আগে একবারও টুর্নামেন্ট সেরা হতে পারিনি। যেহেতু ইচ্ছা ছিল, এ জন্য ওইভাবে কাজও করেছি। চিন্তা করেছি টুর্নামেন্ট সেরা হতে গেলে আমি শুধু একটা দিক দিয়ে হতে পারবো না, কঠিন হয়ে যাবে। কারণ এক দিক দিয়ে হতে গেলে হয় আমাকে ২০-২৫ উইকেট পেতে হবে, অথবা ব্যাটিংয়ে অনেক রান করতে হবে। আমার লক্ষ্য ছিল দুটিই যদি ভালো একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি, সাড়ে তিন বা চারশো রান করতে পারি আর ১৫-১৬ উইকেট বা ২০টার কাছাকাছি উইকেট নিতে পারি, তাহলে হয়তো টুর্নামেন্ট সেরা নিশ্চিত হবে। শুধু এবার না, আগেও এভাবে ভেবেছি। এবার হয়েছি, খুবই ভালো লেগেছে। আমাদের দল খুলনা টাইগার্স খুবই অনিশ্চয়তায় ছিল যে আমরা প্লে-অফে উঠবো কি উঠবো না। সেখানে আমি অধিনায়কত্ব করেছি এবং এখানে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। এবার বিপিএলে অধিনায়কত্ব করে আমার খুবই ভালো লেগেছে, অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার মনে হয় এবারের বিপিএল আমার জন্য খুব ভালো গেছে।
টিবিএস: লিগ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ থেকে নক আউট পর্বের মতো করে খেলতে হয়েছে আপনাদের। ওভাবে হিসাব করলে টানা তিনটি নকআউট ম্যাচ জিতে ফাইনালে রেসে টিকে ছিলেন। এরপর চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ওই রকম হার, কতোটা হতাশ হয়েছিলেন?
মিরাজ: আমার কাছে মনে হয়, এবারের বিপিএলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ হয়েছে আমাদের ওই ম্যাচটা (দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার)। ফাইনালের চেয়েও বেশি উত্তেজনা ছিল ওই ম্যাচে। আমি মনে করি আমরা ফাইনাল খেলার দাবিদার ছিলাম। কারণ, আমরা যে অবস্থায় ছিলাম, ম্যাচটা জিততে পারতাম। ওদের সব ব্যাটসম্যানদের আউট করেছি, ওদের বোলাররা ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছে। এটা কেউ আশা করেনি। আমিও আশা করিনি, তবে ভয়ে ছিলাম। কারণ এমন ঘটনা অনেক ঘটেছে, আমিও অনেক ম্যাচ এ রকম জিতিয়েছি। হারা ম্যাচ বোলারদের সাথে নিয়ে জিতিয়েছি। ওই ভয়টা আমার মধ্যে কাজ করছিল। আর এটা শেখার মতো ব্যাপার, আমার শিক্ষা হয়েছে যে, আমি কোন জায়গায় আরও ভালো করতে পারতাম। এবারের বিপিএলে আমি অনেক কিছু শিখেছি, যা ভবিষ্যতে কাজে দেবে।
টিবিএস: ম্যাচের পর হারের দায় জেসন হোল্ডারকে দিয়েছিলেন আপনি। ১৮তম ওভারে ১৩ রান দিয়েছিলেন হোল্ডার, রান তাড়ায় শেষ দিকে যা খুবই স্বাভাবিক। শেষ ওভারে প্রতিপক্ষ দুই স্পিনারের বিরুদ্ধে ১৫ রান ডিফেন্ড করতে না পারাটা বেশি হতাশার হওয়া উচিত ছিল না?
মিরাজ: অবশ্যই, আমরা কখনই ভাবিনি এই ম্যাচটা আমরা হারবো। ১৫ রান দরকার ছিল শেষ ওভারে, দুটি ভালো বল হলেই কিন্তু ১৫ রান হতো না। আসলে ভাগ্যকেও আমরা সেদিন সাথে পাইনি। একটা বল কানায় লেগে চার হয়, আবার আলিস-সানি ভাই মেরেছে; সব মিলিয়ে মনে হয় এটা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় আপনি যদি দুই-তিনবারও খেলতে দেন, মুশফিক হাসানও যদি বোলিং করে; আমার মনে হয় মুশফিক ম্যাচ জিতিয়ে দেবে। ৫০টা ম্যাচে এমন একটা হবে। এমন ম্যাচ সব দিন হয় না। আমার কাছে মনে হয়, দিনটা চিটাগং কিংসের ছিল।
টিবিএস: বিপিএলে এতো দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারের মাঝে নিজেকে সেরা প্রমাণ করেছেন, টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন। প্রথমবারের মতো বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরা হলেন। দল ফাইনালে গেলে বা শিরোপা জিতলে এই ট্রফিটা নিশ্চয়ই আরও দামি হতো…
মিরাজ: জ্বি, আমরা যদি ফাইনাল খেলতাম, চ্যাম্পিয়ন হতাম; আমি যদি ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট নাও হতাম, এর চেয়ে বেশি খুশি হতাম। দল চ্যাম্পিয়ন, আমি টুর্নামেন্ট সেরা নই; তাতেও আমার আক্ষেপ থাকতো না। ফাইনাল খেলতে পারিনি, খারাপ লেগেছে। এতো খারাপ লেগেছে যে, আমি তো দুই দিন খেলার কথা চিন্তাই করতে পারিনি।
টিবিএস: ৩৫৫ রান করেছেন, উইকেট নিয়েছেন ১৩টি। যেভাবে রান করেছেন, সেভাবে উইকেট নিতে পারেননি। উইকেটের কারণে নাকি অন্য কিছু; যে কারণে সেভাবে উইকেট নিতে পারেননি?
মিরাজ: ১৩টা উইকেট পেয়েছি, এর মধ্যে আমার মনে হয় চার-পাঁচ ম্যাচে (সাত ম্যাচে উইকেট পাননি) আমি কোনো উইকেটই পাইনি, এমন হয়েছে। এসব ম্যাচে উইকেট পেলে হয়তো ২০টির কাছাকাছি যেতো উইকেট সংখ্যা। বিশেষ করে সিলেট ও চট্টগ্রামে আমি ওভাবে উইকেট বের করতে পারিনি। সিলেটে একেবারেই কম উইকেট পেয়েছি। ওখানে পেলে আরেকটু এগোতো। আরও ছয়-সাতটা উইকেট পেলে খুবই ভালো লাগতো।
টিবিএস: অধিনায়কত্ব করেছেন, দল সামলে ব্যাটে-বলে নেতৃত্ব দিয়েছেন; নেতার মতো খেলতে পেরে কতোটা তৃপ্ত?
মিরাজ: এটা খুবই ভালো লাগার মতো একটা ব্যাপার, খুবই ভালো লেগেছে নিজের কাছে। কারণ, আপনি যখন অধিনায়ক থাকবেন, খেলোয়াড় সামলাতে হয়, দলের পারফরস্যান্স দেখতে হয়। দিন শেষে এখানে নিজের পারফরম্যান্সটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অধিনায়ক পারফর্ম করলে দলের বাকি সবার মধ্যে ওই বিশ্বাস আসে যে, আমাদের অধিনায়ক পারফর্ম করছে, আমরাও পারবো। কিন্তু অধিনায়ক পারফর্মার না হলে দল চালানো অনেক কঠিন হয়ে যায়, দলকে নেতৃত্ব দেওয়া যায় না, মোরালি ডাউন থাকে। তো অধিনায়কের পারফর্ম করাটা সব সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আমি প্রথম দিকে ওভাবে পারছিলাম না, কিন্তু সবাই আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। কয়েক ম্যাচ পর থেকেই আমি পারফর্ম করা শুরু করি।
টিবিএস: তামিম ইকবাল বিপিএলের অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। ছয়জন ক্রিকেটার রিটেইন করা, টুর্নামেন্টের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা; এমন সব বিষয় নিয়ে বলেছেন তিনি। আপনি সংস্কারের কোনো জায়গা দেখেন?
মিরাজ: আমার কাছে মনে হয়, ক্রিকেটে বাংলাদেশ কিন্তু একটা ব্র্যান্ড। অনেক দলের সাথেই খেলি, অনেকের সঙ্গে খেলা হয়, বাংলাদেশকে কিন্তু সবাই অন্যরকমভাবে সম্মান করে। সবাই জানে যে, বাংলাদেশ এমন একটা দল, যেকোনো সময় যেকোনো দলের বিপক্ষে জিততে পারে। বিশ্ব ক্রিকেটে এই সম্মানটা আমাদের আছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারি না, মানসিকতার কারণে আমরা এটা পারি না। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে অনেক বিশ্বমানের ক্রিকেটার এসেছে এবং আসছে। আমার মনে হয়, বিপিএল আয়োজনেও এটা মাথায় রাখা উচিত। এবারের বিপিএলের বেশিরভাগ পারফর্মার কিন্তু দেশি ক্রিকেটার। বিশ্বে চার-পাঁচটা টুর্নামেন্ট চলে, এমন সময়ে বিপিএল আয়োজন করা উচিত নয়। দুই-একটি টুর্নামেন্ট চলতে পারে, কিন্তু চার-পাঁচটা চললে সেভাবে ক্রিকেটার পাওয়া যাবে না। বিপিএলের সময়ে আরেকটি টুর্নামেন্ট থাকতে পারে, এটা হলে বিশ্ব ক্রিকেটের নামিদামি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারকে পাওয়া যাবে।
তাতে টুর্নামেন্টটা আরও জমজমাট হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এবার তো বিপিএল অল্প সময়ে আয়োজন হয়েছে, বোর্ড নতুন। আগামীবার হলে সময় পাবে, হয়তো আরও ভালোভাবে আয়োজন করতে পারবে। এবার দুই-তিন মাসের মধ্যে বিপিএল আয়োজন করতে হয়েছে, এটা বোর্ডের জন্য কঠিন ছিল। আগের বোর্ড লম্বা সময় ধরে ছিল, এবার ততো সময় মেলেনি। বিপিএল আয়োজনে আমরা ক্রিকেটাররা সমর্থন দিয়েছি। শীর্ষ ক্রিকেটারদের সমর্থনের কারণে বিপিএল আয়োজন কিছুটা সহজ হয়েছে। কারণ, আমরা যদি ছাড় না দিতাম, টুর্নামেন্টটাই হতো না। আমরা সবাই স্যাক্রিফািইস করেছি, কন্ট্রাক্ট থেকে শুরু করে টাকা কমিয়ে দিয়েছি; সবাই চেষ্টা করেছি বিপিএল যেন হয়। আমি, তামিম ভাই, মুশফিক ভাই, শান্ত, লিটনসহ অনেকে সভাপতির সঙ্গে বসেছিলাম। ফারুক ভাইও আমাদের অনেক সমর্থন দিয়েছেন। উনি বলেছেন "সবার সমর্থনে এবারের আসরটা বের করে নিয়ে আসতে পারলে পরেরবার থেকে আমরা আরও সুন্দর পরিকল্পনা মতো টুর্নামেন্টটি আয়োজন করবো।" তামিম ভাই এটার সমর্থন করেছেন, আমরা সবাই এক বিন্দুতে ছিলাম। তামিম ভাই আমাদের ফোন করে বলেছেন, "দেখ, বিপিএল হওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিজেরা যদি কিছুটা স্যাক্রিফাইস করি, আমাদের জন্যই ভালো হবে। ক্রিকেটারদের জন্য ভালো হবে।"
টিবিএস: আপনি বললেন, মানসিকতার কারণে বাংলাদেশ দল ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারে না। ক্রিকেটারদের মানসিকতা নাকি দলের মানসিকতার কথা বলতে চেয়েছেন?
মিরাজ: আমাদের সবাই অনেক ভালো খেলোয়াড়। তবে সবার মানসিকতা, নিবেদন যখন এক জায়গায় থাকে, লক্ষ্য এক থাকে, এক হয়ে খেলি; তখন আমাদের দল অনেক শক্তিশালী। সবাই পারফর্ম করতে চায়, নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দুটি দুই রকম খেলা, একটা নিজের জন্য, আরেকটা দলের জন্য। অনেক সময় দলের জন্য খেলেও সফল হয় না। দলের জন্য যারা খেলে, তাদেরকে সবার সমর্থন করা উচিত। অনেক সময় নিজের জন্য খেললেও দলের সাহায্য হয়ে যায়। তো দুটি দুই রকম মনোভাব। সবারই দলের জন্য খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি বলছি না যে দলের জন্য খেলে না, তবে অনেক সময় নিজের খেলাটাই দলকে এগিয়ে দেয়। আমার দরকার নেই, কিন্তু দলের জন্য খেলছি; এমন কিছু অবস্থা আসে। ওই অবস্থাগুলোয় যদি আমরা অভ্যস্ত হতে পারি, মানিয়ে নিতে পারি; তাহলে ফল আরও ভালো হবে।
টিবিএস: এবারের বিপিএল পারিশ্রমিক নিয়ে অনেক বিপত্তি দেখা গেছে, যা ছিল খুবই দৃষ্টিকটু। আপনাদের দলের ক্ষেত্রে এমন শোনা যায়নি, আপনার পারিশ্রমিকের কী অবস্থা?
মিরাজ: আমাদের দল খুব সুন্দরভাবে বিষয়টি পরিচালনা করেছে। আমাদেরকে ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ পারিশ্রমিক দিয়েছে। নিয়ম মেনে খুলনা আমাদের পাওনা দিয়েছে। বাকি আছে ৩০ শতাংশ, দিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে। আর আমরা যদি পারিশ্রমিক না পাই, আমরা তো বিসিবির কাছেই যাবো। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর তিন মাসের মধ্যে দিতে হয় বা এমন একটা সময় থাকে, এর মধ্যে বাকি ৩০ শতাংশ দিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে আমাদের দল।
টিবিএস: আপনাকে টেস্ট এবং ওয়ানডেতে বেশি উপযোগী মনে করা হয়। টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে নয়, বেশি ম্যাচও খেলা হয়নি। সেই আপনি টুর্নামেন্ট সেরা হলেন। এরপর কি মনে হয় টি-টোয়েন্টি দলে আপনার জায়গাটা পোক্ত হবে?
মিরাজ: টি-টোয়েন্টিতে আমি বেশি ম্যাচ খেলিনি। একটা জায়গায় যদি সুন্দরভাবে নিয়মিত খেলতে পারতাম, তাহলে হয়তো পারফর্ম করার সুযোগ থাকতো। টেস্ট এবং ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েই আমি ভালো খেলেছি। কিন্তু টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রে আমি সুযোগটা পাইনি। প্রতিটা ফরম্যাট একইরকম হবে, দলে ঢুকেই আপনি ভালো পারফর্ম করবেন; তেমন তো না। কোনোটায় মানিয়ে নিতে একটু বেশি সময় লাগবে, সেই সময়টা দিতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়নি। সময় দেওয়া হয়নি বলে হয়তো আমি নিজেকে ওইভাবে মানসিকভাবে তৈরি করতে পারিনি। কোনো ক্রিকেটার একটা জায়গায় হুট করেই মানিয়ে নিতে পারবে না। টেস্ট এবং ওয়ানডেতে যেটা আমার জন্য সহজ হয়েছে, টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাগল করতে হয়েছে। কষ্ট করে জায়গাটা অর্জন করতে হয়েছে। তারপরও দেখুন, আমি যখন টি-টোয়েন্টি খেলেছি, প্রথমে হয়তো ভালো খেলিনি, এরপর বাদ পরে তিন-চার বছর পর যখন জাতীয় দলে ঢুকেছি, তখন কিন্তু আমি ভালো খেলেছি। ২২ এশিয়া কাপে আমাকে ওপেন করালো, আমি ভালো করেছিলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৬ বলে ৩৮ করেছিলাম, যদিও ম্যাচটা হেরে যাই। এরপর মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেট নিই, ম্যাচসেরা হই, সিরিজ জিতেছিলাম।
আফগানিস্তানের বিপক্ষেও ভালো খেলি, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি জানি না কেন আমাকে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেওয়া হয়নি। এটা নিয়ে আমি অনেক আপসেট ছিলাম। ভালো খেলার পরও যদি আপনি বাদ পড়েন, সেখানে কিন্তু প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায়। আবার খারাপ খেলেও দলে থাকলে প্রশ্ন তৈরি হয়। আমার ক্ষেত্রে এমন হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে আমাকে কীভাবে বিবেচনা করেছে, আমি জানি না। তবে তখন যে সভাপতি বা বোর্ড পরিচালক ছিলেন, আমাকে একটা প্রস্তাব দেন ১৬তম সদস্য হয়ে যেতে। কিন্তু আমি সরাসরি প্রত্যাখান করি। আমি বলেছিলাম, 'আমি যেতে চাই না, আমি দেশে প্রস্তুতি নিবো। সামনে টেস্ট খেলা আছে, সেটা আমি খেলবো।" এমন বলার জন্য সৎ সাহস লাগে, আমার সৎ সাহস ছিল বলে আমি সরাসরি সভাপতির মুখের ওপর না করে দিয়েছিলাম। যিনি আমাদের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান ছিলেন, তাকেও আমি সরাসরি না করে দিয়েছি এটা বলে যে, "না, আমি যাবো না।" টেস্টের জন্য অনুশীলন করার কথা বলেছিলাম, সেটার ফল আমি পেয়েছি। পাকিস্তানে গিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছি।
টিবিএস: বিপিএলের এই পারফরম্যান্সের পর টি-টোয়েন্টি দলে আপনার জায়গা বা অবস্থান নিয়ে বোর্ডের প্রতি আপনার কোনো বার্তা থাকবে?
মিরাজ: আমার কাছে মনে হয়, তারা যদি আমাকে নিয়ে এখনও দ্বিধায় থাকে, তাহলে আমাকে নেওয়ারই দরকার নেই। যদি মনে করে আমি টি-টোয়েন্টি পারবো না, তাহলে দরকার নেই; আমি বাকি দুই ফরম্যাটে মনোযোগী থাকি। তবে টি-টোয়েন্টি একটা টুর্নামেন্টে আপনি যদি সেরা হন, আপনি অবশ্যই দাবি করবেন, টি-টোয়েন্টিতেও প্রতিষ্ঠিত হতে চাইবেন। এটা নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু এখন টি-টোয়েন্টি খেলা নেই বলে কথা বলতে পারছি না। এখন তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য যাচ্ছি, সামনে টেস্ট খেলা আছে। যখন টি-টোয়েন্টিতে খেলা আসবে, তখন আমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে কথা বলবো। জানতে চাইবো, "আমাকে নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী। যদি আমাকে নিয়ে আপনাদের সত্যিই পরিকল্পনা থাকে, তাহলে ভালো। আর যদি না থাকে, আমি টেস্ট এবং ওয়ানডেতে ফোকাস করবো।"
টিবিএস: বিপিএলে কয়েক ম্যাচ পরে ওপেন করেছেন, ওপেনিংয়েই বেশি রান করেছেন। এটা কি আপনার নাকি দলের পরিকল্পনা ছিল?
মিরাজ: আমার একটা পরিকল্পনা ছিল। টি-টোয়েন্টিতে যেহেতু বাংলাদেশ দলে আমাকে চার নম্বরে ব্যাটিং করিয়েছে শেষ সিরিজটাতে, আমাকে চারে যেতে বলেছে, আমি খেলেছি। আমার একটা পরিকল্পনা ছিল যেহেতু জাতীয় দলে চার নম্বরে খেলেছি, বিপিএলেও চার নম্বরে একটু অভ্যস্ত হই। ৮-১০টা ম্যাচে যদি এক পজিশনে ব্যাটিং করতে পারি, তাহলে আমার জন্য ভালো হবে। চার নম্বরে খেলছিলাম, ভালো হচ্ছিল। কিন্তু শক্তির জায়গা থেকে বুঝলাম, আমি যদি পাওয়ার প্লেতে খেলতে পারি, আমি সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারবো। যা অনেকেই হয়তো আমার মতো করে কাজে লাগাতে পারবে না। এ ছাড়া দলের চিন্তাও করেছি, কারণ আমাদের দলের অবস্থা অতো ভালো ছিল না। সব মিলিয়েই ওপেন করা শুরু করি। আমাদের দল পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারছিল না। আমি ওপেনে আসার পরই কিন্তু আমাদের ব্যাটিংয়ের চেহারা পাল্টে গেছে।
টিবিএস: টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলেও এমন ব্যাটিং পজিশন চান? কিংবা পজিশন নিয়ে কোনো চাওয়া আছে?
মিরাজ: জাতীয় দলে আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে যদি আমাকে তিন-চারে খেলানো হয়, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে।
টিবিএস: বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে লিটন কুমার দাস নেই, ব্যাটিং অর্ডার সাজানো কঠিন হতে পারে বা চাপ থাকতে পারে। দলের এই চাপ জয় করার ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যান মিরাজ কতোটা প্রস্তুত?
মিরাজ: আমাকে আগে বুঝতে হবে আমার ভূমিকাটা কী, টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে দিয়ে কী চাচ্ছে। আমি যখন আমার ভূমিকাটা বুঝতে পারবো, তখন আমি ওভাবে খেলার চেষ্টা করবো। তাতে অনেক সময় হয়তো সফল হবো, অনেক সময় হবো না। তবে সবই যে আমার দায়িত্ব, এমন নয়। আমাকেই যে সব করতে হবে, সেটা নয়। এমন হলে আমার জন্য বাড়তি চাপ হয়ে যাবে। আমি যখন বাংলাদেশ দলে খেলি, আমি এভাবে কখনই চিন্তা করি না যে, আমাকেই সব করতে হবে। আমরা সবাই মিলেই করবো, আমি সাপোর্ট দেবো। অনেক সময় এমন অবস্থা চলে আসে যে আমাকেই করতে হবে, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। ওটা অবস্থার ওপর নির্ভর করে।
টিবিএস: বিপিএলে পুরোপুরি অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, আপনার কাছ থেকে এমনই চাওয়া দলের। এর সঙ্গে আরও একটি চাওয়া অনেক দিনের, আপনি সাকিবের মতো অলরাউন্ডার হবেন। আপনার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই অনেকের এমন প্রত্যাশা। কী মনে হয়, সাকিবের মতো অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার পথে কতোটা এগোলেন? বা সাকিবের মতো অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে কতোটা পথ বাকি?
মিরাজ: সাকিব ভাই তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই টপ অর্ডারে ব্যাটিং করেছেন। উপরে ব্যাটিং করে করে একটা অবস্থান তৈরি করেছেন। কিন্তু আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার যদি ধরেন, আমার মনে হয় আমি সাত বছরই ব্যাটিং করেছি সাত-আট নম্বরে। বেশিরভাগ সময় আটে ব্যাটিং করেছি। হয়তো কিছু কিছু সময়ে টিম কম্বিনেশনের জন্য আমাকে ওপেন করানো হয়েছে। এটা দলের প্রয়োজনের জন্য করানো হয়েছে। দল বিপদে পড়েছে, এর জন্য করানো হয়েছে। কিন্তু এর বাইরে বেশিরভাগ সময় আমাকে আট নম্বরে ব্যাটিং করতে হয়েছে। একজন ব্যাটসম্যান যদি আট নম্বরে ব্যাটিং করে, দলের বিপর্যয় না হলে সে কখনও বড় ইনিংস খেলতে পারবে না। দলের যদি ছয় উইকেট পড়ে যায়, খারাপ অবস্থার কারণে আমাকে ব্যাটিং করতে হবে। এমন অনেক ম্যাচ হয়েছে, অনেক উদাহরণ আছে এবং আমি জিতিয়েছিও। এটা সবাই জানে, দেখেছে; আমার বলার দরকার নেই। এটা বলার মতোও কিছু নয়। আর আমি নিজের কথা বলতেও চাই না।
কিন্তু আমার অবাক লাগে, আমি এখন উপরে ব্যাটিং করি বলে অনেকে নাকি স্ট্রাইক রেটসহ কিছু বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন। কিন্তু এটা না করে সমর্থন করা উচিত। কারণ, একটা ছেলে আট নম্বরে ব্যাটিং করেছে, এখন টপ অর্ডারে ব্যাটিং করার চিন্তা করছে, ভালোও খেলছে; তাহলে তো মানুষের সমর্থন করা উচিত। টপ অর্ডারে আমি যে চারটা ইনিংস খেলেছি, বাজে খেলিনি আল্লাহর রহমতে। আবার টপ অর্ডারে আমি ভালো নাও খেলতে পারি। তার মানে যে আমি পারব না, এমনও নয়। একটা জায়গায় একজন খেলোয়াড়কে যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ দিতে হবে। তাহলে ওই জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থাকবে। যেটা সাকিব ভাইয়ের জন্য সহজ হয়ে গেছে, আমার জন্য অনেক কঠিন। এখন থেকে যদি আমি নিয়মিতভাবে (টপ অর্ডারে) খেলতে পারি, তাহলে হয়তো একটা জায়গায় যেতে পারবো। জানি না সাকিব ভাইয়ের মতো হতে পারবো কিনা। সাকিব ভাই বাংলাদেশের ব্র্যান্ড, উনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেটা দেখে আমরা বড় হয়েছি। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।
টিবিএস: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন, বাংলাদেশের কতোটা সম্ভাবনা দেখেন?
মিরাজ: প্রতি ম্যাচই অনেক কঠিন হবে। এই কঠিন দলের বিপক্ষে জিতলেই কিন্তু পরের রাউন্ডে যেতে পারবো। আমাদের জন্য প্রতিটা ম্যাচই কঠিন, সবার পারফর্ম করাটা গুরুত্বপূর্ণ। দুই-একজন পারফর্ম করলে দল কখনই চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না, ভালো জায়গায় যেতে পারে না। ১১ জনকেই পারফর্ম করতে হবে। সবাই যদি ভালো খেলে, তাহলে একটা ভালো জায়গায় অবস্থান করবে আমাদের দল।
টিবিএস: প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেছেন সেরা প্রস্তুতি হলো না, এটা মানসিকভাবে আপনাদের পিছিয়ে রাখতে পারে?
মিরাজ: কোচ হয়তো অন্যভাবে বলেছেন। আমার মনে হয় কোচ বোঝাতে চেয়েছেন যে, একটা টুর্নামেন্টের আগে আমরা বিপিএল খেলেছি, এটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। ওয়ানডের সঙ্গে যেটার বেশ পার্থক্য। আমরা যদি ১০ দিন সুযোগ পেতাম, দুই সপ্তাহ অনুশীলন করার সুযোগ পেতাম, ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতাম; তাহলে প্রস্তুতিটা আরও ভালো হতো। তিনি কিন্তু বলেননি আমাদের প্রস্তুতি খারাপ হয়েছে। টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে মুড পুরোপুরি ভিন্ন। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যান আক্রমণাত্মক থাকবে, মাঝে সময় না দিলে এই আক্রমণাত্মক মনোভাব ওয়ানডেতেও চলে আসবে। না চাইলেও চলে আসতে পারে। যদি এক সপ্তাহ বা ১০ দিন সময় পাওয়া যেতো, তখন অনুশীলন করতো, ম্যাচ খেলতো দুই-তিনটা ওয়ানডে, অনুশীলন ম্যাচ থাকতো; তাহলে একটা অবস্থায় চলে আসতো। কোচ হয়তো এটাই বোঝাতে চেয়েছেন। খারাপ প্রস্তুতি হয়নি, তবে আরও ভালো হতে পারতো।
টিবিএস: লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টি খেলার পর ওয়ানডে টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি থেকে ওয়ানডেতে শিফট হতে বা মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন হবে?
মিরাজ: এ ক্ষেত্রে আমাদের যে গত কিছুদিনের অনুশীলন হয়েছে, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুবাইয়ে আমরা একটা অনুশীলন ম্যাচ খেলবো, অনুশীলন করবো; এর ভেতরে সবাই মানিয়ে নেবে।
টিবিএস: বলা হতো ওয়ানডেতে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে বেশি ভালো করেছে দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আপনার নেতৃত্বে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে দল, কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে ৩-০ ব্যবধানে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ভালো, এই পরিচয় কি তবে পাল্টে যাচ্ছে?
মিরাজ: না, দুই-একটা সিরিজ খারাপ হলেই যে ওয়ানডেতে আমরা খারাপ দল হয়ে গেছি, সেটা বলার সুযোগ নেই। আবার দুই-একটা সিরিজ ভালো হলেই যে আমরা অনেক বড় দল গেছি, এমনও নয়। ধারাবাহিকতাটা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপের পরে আমরা ওয়ানডে সিরিজ কিন্তু বেশি খেলিনি। খেলার মধ্যে থাকলে একটা ছন্দ আসবে। আমরা টেস্ট খেলার মধ্যে ছিলাম বলে আমরা কিন্তু পাকিস্তানে দুটি ম্যাচ জিতেছি। কেউ কখনও আশা করেছে ঘরের মাঠের পাকিস্তানকে আমরা সিরিজে হারিয়ে দেবো? খেলার মধ্যে থাকলে এই সম্ভাবনাটা তৈরি হয়। আমরা যেহেতু টেস্ট খেলার মধ্যে ছিলাম, এ কারণে হয়তো ওয়ানডেতে আমাদের ফোকাস কিছুটা কম ছিল বা মানিয়ে নিতে একটু সময় লেগেছে। তবে আমরা ওয়ানডেতে খারাপ দল নই।
টিবিএস: বয়সভিত্তিক, জাতীয় দল, বিপিএল অধিনায়কত্বের পরীক্ষায় সফলই বলা যায় আপনাকে। জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করলে কীভাবে ভাববেন?
মিরাজ: যদি আমাকে দায়িত্ব দেয়, আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করে; আমার কাছে মনে হয়, এটা একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দিলে ভালো। অল্প সময়ের জন্য দিলে আমার জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে। দলের ভালোর কথা ভেবে যদি দীর্ঘমেয়াদে চিন্তা করে, তাহলে হয়তো আমি ভেবে দেখবো।