আইসিসির ইভেন্ট মানেই বাংলাদেশের ত্রাতা সাকিব

ঘরের মাঠে সিরিজ, কিন্তু আগের সাকিব আল হাসানের দেখা নেই। গত আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেট ছিল তার বলার মতো পারফরম্যান্স। ব্যাট হাতে শুরু পেয়েও কোনো ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ব্যাটে-বলে নিষ্প্রভ থেকে যান বাংলাদেশ অলরাউন্ডার।
স্পোর্টিং উইকেটে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ছন্দে ফিরবেন সাকিব, এমন আশায় ছিলেন ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের একাদশে সেভাবে সুযোগই হয়নি তার। সুযোগ পাওয়া ম্যাচেও তেমন কিছু করতে পারেননি। লম্বা সময় ধরে এমন সাকিবকে দেখে অনেকেরই মনেই প্রশ্ন জেগেছিল, 'কোথায় হারালেন সাকিব?'
প্রশ্নটির উত্তর মিলে গেল মঙ্গলবার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এদিন বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওমানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। জিতলে টিকে থাকবে বিশ্বকাপ স্বপ্ন, না হলে বিদায়। দল যখন খাদের কিনারে, তখনই ত্রাতা হয়ে দেখা দিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে দলকে এনে দিলেন পরম চাওয়ার এক জয়, জিতলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই দিক হারানো দলকে পথ দেখানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সাকিব। নাঈম শেখের সঙ্গে গড়েন ৮০ রানের ইনিংস। রান আউট হয়ে ফেরার আগে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটে ২৯ বলে ৬টি চারে বাংলাদেশ অলরাউন্ডার খেলেন ৪২ রানের ইনিংস। পরে বল হাতে দলের মহা বিপদের সময় সাকিব ৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। স্বভাবতই তার হাতে উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
আর এই পুরস্কার জয়ে আবারও যেটা প্রমাণ হয়েছে, তা হলো আইসিসির ইভেন্টে বাংলাদেশের জয় মানেই সেখানে কাণ্ডারি সাকিব। এর আগে আইসিসির ইভেন্টে পাওয়া বাংলাদেশের সর্বশেষ চারটি জয়ের সবকটিতেই ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব। সংখ্যাটাকে এবার পাঁচে নিয়ে গেলেন সাদা বলের ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার।
শুরুটা ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক জয়ে ব্যাট হাতে ১১৪ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেন সাকিব। বল হাতে উইকেট না পেলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছিল তার ঝুলিতেই। এর পরের তিনটি ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। এই বিশ্বকাপে অতিমানবীয় অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স করেন তিনি।
নিজেরে প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে ব্যাটে-বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাকিব। ৭৫ রান ও ১ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস ও ২ উইকেট নিয়ে আবারও সাকিব ম্যাচসেরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরও দোর্দন্ড প্রতাপে হাজির হন সাকিব। ৫১ রান ও ২৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তৃতীয় ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই গল্প লেখা হলো। বাংলাদেশ জিতলো, ম্যাচেসরা হলেন সাকিব।