Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
July 23, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, JULY 23, 2025
শেয়ালবৃত্তান্ত: নিতে পারে রমণীর রূপ, হতে পারে অমর!

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
24 December, 2022, 09:40 pm
Last modified: 24 December, 2022, 10:05 pm

Related News

  • নিদ্রাহারা রাতের এ গান
  • বুনো বিড়াল থেকে পোষা বিড়াল: রহস্যময় রূপান্তরের অজানা ইতিহাস
  • বিড়াল: বন্ধুত্ব
  • বাগনদীর ধারা
  • রাহবারের ছবি, ক্ষেপণাস্ত্র আর ডাক্তারসহ ইরানের দিনগুলো

শেয়ালবৃত্তান্ত: নিতে পারে রমণীর রূপ, হতে পারে অমর!

শেয়ালই বলুন আর শিয়ালীই বলুন, স্তন্যপায়ী বুনো এ প্রাণী দুনিয়াজোড়া যে নাম কুড়িয়েছে, তেমনটি পারেনি জীব-জন্তু জগতের অন্য কোনো সদস্য। শেয়ালের শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা তাকে অনন্য করে তুলেছে। কখনো ধূর্ত, কখনো ছলনাময় এমনকি দুষ্টের অবতার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এ প্রাণী। অন্যদিকে ইতিবাচক গুণ শেয়ালকে দক্ষ, বুদ্ধিমান, অন্যদের প্রতি যত্নশীল এবং সহায়তাকারীর ভাবমর্যাদা দিয়েছে।
সৈয়দ মূসা রেজা
24 December, 2022, 09:40 pm
Last modified: 24 December, 2022, 10:05 pm
প্রখ্যাত চিত্রকর হ্যারি রাউট্রির আঁকা শিয়ালের আঙুর ফল টক, পাঞ্চ পত্রিকার জন্য আঁকা

১.

চতুর, ধূর্ত বা দুষ্টবুদ্ধিতে ঠাসা মানুষকে বোঝাতে শেয়াল শব্দটি ব্যবহার করেননি এমন বাংলাভাষী কাউকে আপনি দেখেছেন কি? একটু চিন্তা করে চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখুন তো।

আপনি তালাশ করতে থাকুন আমি বরং ভিন্ন গল্প শোনাই। আটাশির (১৯৮৮) মহাবন্যার দিনগুলোর ঘটনা। সিরাজগঞ্জের পরিচিত একজন জানালেন, বন্যায় সব তলিয়ে গেছে, বনবাদাড়, ঝোপঝাড় সবই অথই সরোবর। সেসময় একটা শেয়াল এসে আশ্রয় নিল তাদের পোষা মুরগি রাখার বাক্সের তাঁকের একেবারে নিচে।

জায়গাটা বেশ উঁচু। তখনো পানি ওঠেনি। বাক্সের ওপরের দিকের তাঁকে পোষা মুরগি রাখা হতো। দিনে এদিকে-সেদিকে ঘুরলেও রাতে চুপচাপ মুরগি রাখার বাক্সের নিচে সুবোধ সন্তানের মতোই বসে থাকত শেয়াল। দুর্দিনের সময় একবারও মুরগি ধরার চেষ্টাও করেনি। যদিও একটু মাথা উঁচু করলেই টপাটপ গোটা কয়েক মুরগি ধরা যেত। আরও মজার ব্যাপার হলো, বাক্সের নিচে জলজ্যান্ত শেয়ালের বসে থাকা নিয়ে আপত্তি করেনি মুরগিরাও। এমনিতে শেয়াল আশপাশে আছে ঠাহর করতে পেলেই মুরগিরা ডেকে, চেঁচিয়ে, ডানা-ঝাপটিয়ে  হুলস্থূল ঝড় তোলে। সেসময় এসব কিছুই ঘটেনি। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই উধাও শেয়াল। একবারও আসেনি তারপর।

বিপদের দিনগুলোতে নিপাট অহিংস ভালোটি সেজে আশ্রয় নেওয়ার মতো বুদ্ধি শেয়ালের আছে! এমনকি নিত্যদিনের শিকার মুরগি সমাজের কাছেও তখন গ্রহণীয় হতে পারে শেয়াল। এ জন্যেই কি এ প্রাণীকে কখনো কখনো শেয়াল পতিও বলা হয়?

বাংলা ভাষায় শেয়ালের সমার্থক অনেক শব্দ রয়েছে। যেমন- শিয়াল,  শিয়ালী, শৃগাল, শৃগালী, শিবা, খেঁকশেয়াল, খেঁকশেয়ালী, পাতিশেয়াল, লোমালিকা, কিখি, জম্বুক, গিধড়, শৃগল, ফেউ। আরও হয়তো আছে। খুঁজে বের করতে পারিনি।  

২.

শেয়াল বলতে শেয়ালের সব প্রজাতিকেই বোঝানো হয়। এ পরিবারের সদস্যদের বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলেই দেখতে পাওয়া যায়। ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবির সদর দপ্তর রাজধানী তেহরানের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ি এলাকার বিশাল এ দপ্তরে বিশ-বাইশ হাজার কর্মী কাজ করেন। দপ্তরের ভেতরে বাস সার্ভিস আছে। এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যাতায়াতের সুবিধার জন্যই এ ব্যবস্থা সাখতেমানে বুরুন মারজি বা ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের ভবন থেকে দারবে সোমাল বা উত্তরের প্রবেশদ্বারের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে, সেখানেও পাতিশেয়াল দেখেছি। দার্শনিক ভঙ্গিতে বসে ছিল সাখতেমানে শিশে বা কাচভবন নামে পরিচিত প্রধান দপ্তরের পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কের ফুটপাতে।

শেয়াল নিয়ে একটা কথা লোকমুখে শোনা যায়, তা হলো লাল কুকুর শিয়ালের ভাই! চোরে চোরে মাসতুতো ভাই বোঝাতেই এ বাক্যের প্রয়োগ। তবে এর সাথে বাস্তবতার মিল কতটা, সে প্রশ্ন যে কেউ তুলতেই পারেন।

৩.

শেয়ালই বলুন আর শিয়ালীই বলুন, স্তন্যপায়ী বুনো এ প্রাণী দুনিয়াজোড়া যে নাম কুড়িয়েছে, তেমনটি পারেনি জীব-জন্তু জগতের অন্য কোনো সদস্য। খ্যাতির এমন শিখরে থাকার পরও জার্মানের মতো অনেক ভাষায়ই শেয়ালের স্ত্রী লিঙ্গ নেই।

শেয়ালের শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা তাকে অনন্য করে তুলেছে। কখনো ধূর্ত, কখনো ছলনাময় এমনকি দুষ্টের অবতার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এ প্রাণী। অন্যদিকে ইতিবাচক গুণ শেয়ালকে দক্ষ, বুদ্ধিমান, অন্যদের প্রতি যত্নশীল এবং সহায়তাকারীর ভাবমর্যাদা দিয়েছে। শেয়ালের মধ্যে এভাবে বিপরীত গুণাবলি আরোপ করা হয়েছে। একই কাণ্ড অন্যান্য প্রাণীর বেলায়ও মানুষ কমবেশি ঘটিয়েছে।  

ইউরোপীয় এবং ইউরোপীয় প্রভাবিত শেয়াল আখ্যানের বিষয় ও মোটিফগুলো কী হবে, তা বর্ণনা শুনেই বলা সম্ভব। এগুলো সবই প্রাচীন। কিন্তু এশীয় শেয়াল আখ্যান এ থেকে ভিন্নতর। শেয়ালী রূপ বদল করে খুবসুরত রমণীতে পরিণত হয়েছে। তবে এমন লোককাহিনীর মধ্য দিয়ে হয়তো বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে।

ইউরোপে শেয়াল নিয়ে প্রাচীনতম লেখার দেখা মিলেছে ৬৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে, আর্কিলোচোসে রচনায়। তিনি লিখেছেন, শেয়াল নানা বুদ্ধি খাটায় কিন্তু সজারু খাটায় একটাই বুদ্ধি এবং সেটাই সর্বসেরা। এদিকে প্লিনি, অ্যারিস্টটল এবং ক্লডিয়াস এলিয়ানাসের প্রাকৃতিক ইতিহাসেও এসেছে শেয়াল প্রসঙ্গ। এসেছে অ্যারিস্টোফেনেসের মতো কৌতুক লেখক বা হেরোডোটাসের মতো ইতিহাসবিদের রচনায়। প্রাচীন এবং মূলধারা তৈরি হয়েছে এসব লেখার মাধ্যমে। কিন্তু যা-ই বলা হোক, ইশপের নামে প্রচলিত লোককাহিনীতে শেয়ালকে ঘিরে এসেছে নানা গল্প। এর সবই পেয়েছে জনপ্রিয়তার মুকুট। পঞ্চতন্ত্রেও শেয়ালের দেখা মিলবে।

অন্যদিকে লোককাহিনীতে মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগের সূচনাকালের প্রকৃতিবিষয়ক বিশ্বকোষের তথ্যকে ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে লোককাহিনীর সঙ্গে মুখে মুখে প্রচলিত বিষয়বস্তু মিশে গেছে। ভেষজ চিকিৎসার ক্ষেত্রে শেয়ালের ভূমিকার কথার বিস্তার ঘটে এভাবেই।

চীনা শিয়াল

শেয়ালের অন্ত্র, বিশেষ করে ফুসফুস ও যকৃত ওষুধ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ঢাকাসহ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় শেয়ালের তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে কিছুদিন আগেও। এছাড়া শেয়ালের মাংস সেবনে বাত-ব্যথার নিরাময় ঘটে- এমনই এক ভিত্তিহীন বিশ্বাস অনেকের মনেই শিকড় গেড়ে আছে। চড়া দামে শেয়ালের মাংস বিক্রির খবরও কাগজে ছাপা হয়েছে। আমার পরিচিত একজন তার মেয়েকে চড়া দামে শেয়ালের মাংস কিনে রেঁধে খেতে বাধ্য করেছেন। তাতেও তরুণী মেয়েটির বাত রোগ সারেনি বলেই জানান তিনি। তিনি আমাকে বলেন, সারা তো দূরের কথা বাত একটু কমেওনি!

সব মিলিয়ে শেয়াল শেষ পর্যন্ত একটি কাল্পনিক প্রাণী হয়ে ওঠে। হয়ে ওঠে শিক্ষামূলক নীতিকথার চরিত্র।

ছোটকালে পড়া একটি ছড়া-

স্মলপক্স হয়ে অক্স
প্রায় মরমর
ডাক্তার ফক্স বলে
রোগ গুরুতর!

হ্যাঁ সত্যিই, অন্যদিকে শেয়ালের রোগ সারাবার ক্ষমতা নিয়েও অনেক কাহিনী ছড়িয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার তোবাদের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস এই যে সাপের কামড়ের হুমকি দূর করতে পারে শেয়াল। দক্ষিণ আমেরিকার আচোমাউইরা বিশ্বাস করে, সাপ এবং জেমুল নামের কয়োটি পৃথিবী ও মানুষ জাতিকে সৃষ্টি করেছে।

শেয়ালের লেজের আগা কেন সাদা, তার ব্যাখ্যা পেতে পারেন নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ল্যাপল্যান্ড এবং এস্তোনিয়ার লোককাহিনীতে। শেয়াল নিজের চোখ নিয়েছে হরিণজাতীয় প্রাণী থেকে। এতে প্রাণীটি রেগে অস্থির। নিজ চোখ ফেরত দেওয়ার দাবি জানায়। কিন্তু পাত্তা দেয় না শেয়াল। এবারে প্রাণীটি শেয়ালের চোখ লক্ষ্য করে হামলা চালায়। কিন্তু তা সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছায় না। বরং লেজের আগায় আঘাত হানে। ব্যস! সেই থেকে শেয়ালের লেজের আগা সাদা হয়ে যায়।

শেয়ালের লেজাগ্র কালো হওয়া নিয়েও ভিন্ন গল্প শোনা যাবে মধ্য আমেরিকায়। শেয়ালের সুন্দর ওই লোমশ ন্যাজের আসল মালিক বিভার। শেয়ালকে মাটি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয়েছে অনেক পথ, তাই অমন কালো হয়ে গেছে লেজাগ্র।

বামন হয়ে চাঁদকে ধরার ব্যর্থ চেষ্টার কথা আমরা বাংলাভাষীরা ভালোভাবেই জানি। কিন্তু চন্দ্রকন্যার প্রতি অপ্রতিহত টান কী পরিণাম ডেকে আনতে পারে, তা বোধ হয় আমাদের জানা নেই। আমাজনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম রেইনফরেস্ট রয়েছে গ্র্যান চাকো অঞ্চলে। উত্তর-পশ্চিম আর্জেন্টিনা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্যারাগুয়েতে অবস্থিত এ অঞ্চলে চোরেতে উপজাতীয়দের দেখা মিলবে। তারা মনে করে, চন্দ্রকন্যার প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণের কারণেই শেয়াল এবং এ পরিবারভুক্ত প্রাণীদের পা কালো হয়ে গেছে।

বিশ্বের কিছু অঞ্চলে শেয়ালের দেখা মিলবে না। কেন শেয়াল নেই? হ্যাঁ, তা নিয়েও নানা গালগল্প আছে। খাবার নিয়ে ঝগড়াঝাঁটির কারণে ওই এলাকা থেকে দেশান্তরী হতে হয়েছে শেয়ালকে। এছাড়া কোনো কোনো গল্পে দাবি করা হয়েছে, শেয়ালের বন্ধুসুলভ হওয়ায় মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর হুমকিতে পড়েছে। শেয়াল নাকি বেবুনের সাথে খাবারদাবার ভাগ করে খেতেও রাজি হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল কেবল লতা-পাতা, ফল-মূলে তার পোষায় না। পেটে খিদের নাচন থামছেই না। শেষ পর্যন্ত সিংহের সাথে শিকারে নামে বেচারা শেয়াল। খরগোশ শিকার করতে বেশি বেগ পেতে হয় না। মুরগিও শেয়ালের খপ্পর থেকে নিরাপদ নয়। সজারুকে তেমন পছন্দ করে না, তারপরও শেয়ালের ফাঁদে পড়তে হয় সজারুকে। আর বাঘের সাথে সম্পর্ক ভালো না। কারণ, বাঘ ও ষাঁড়ের বন্ধুত্ব সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে শেয়াল। জঙ্গলের বাদবাকি জানোয়ার হয় শেয়ালের বন্ধু, না হয় শিকারের সহযোগী কিংবা শত্রু বা শিকার।

পড়ুয়া শিয়াল, বুক অব আওয়ার্স, ১৪৬০

এদিকে মেসোপটেমিয়া পৌরাণিক কাহিনীতেও শেয়ালের নাম পাওয়া যাবে। দেবতা এনলিলের প্রতিভূ হিসেবে শেয়ালকে তুলে ধরা হতো প্রাচীন মেসোপটেমিয়াতে। তাকে ঈশ্বরের দূরাগত প্রতীক বলে মান্য করা হতো। এছাড়া ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে শেয়ালকে ধর্মীয় এবং উপাসনাযোগ্য করে তুলে ধরার উদাহরণ একেবারেই বিরল। মিসরে অবশ্য শেয়ালকে নানাভাবে তুলে ধরা হতো। শেয়ালকে রাজহংসী যুথের প্রহরী, বাদ্যকার এবং ইঁদুরসহ অন্যান্য প্রাণীর চাকর হিসেবেও গণ্য করা হতো।

কিন্তু শেয়ালের ওপর স্বর্গীয় প্রতীক আরোপের কোনো নজির পাওয়া যায়নি। গ্রিক-রোমান যুগ সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। সুরার দেবতা ডায়োনাইসিসের সাথে শেয়ালের সম্পর্ক পুরোই দা-কুমড়ার। এমনি দাবি গ্রিক-রোমান পৌরাণিক কাহিনীর। খতিয়ে দেখলে নজরে আসবেম আঙুর চাষের ক্ষতি করে শেয়াল। শেয়ালের আঙুরপ্রীতিকে কেন্দ্র করে 'আঙুর ফল টক' উপকথার জন্ম। কাজেই সুরার দেবতার সাথে সম্পর্ক খারাপ থাকাই স্বাভাবিক।

এদিকে শেয়াল দিয়ে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কাহিনী প্রাচীন ইহুদি কাহিনীতে পাওয়া যাবে। স্যামসন দুই শেয়ালের লেজ একত্রে বেঁধে দেন। এভাবে তিনশ শেয়ালকে বাঁধা হয়। তারপর লেজে জ্বলন্ত মশাল বেঁধে তাদের ফিলিস্তিনিদের শস্যক্ষেত্র, জলপাইবাগান এবং আঙুর বাগিচার মধ্য দিয়ে তাড়িয়ে নেওয়া হয়। ফলে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।

খ্রিষ্টীয় এবং মধ্যযুগীয় প্রাথমিক চিন্তাধারায় শেয়ালকে শয়তানতুল্য প্রাণীর কাতারে ফেলা হয়। প্রাণীটি শয়তানের প্রতীক, ছলচাতুরির নমুনা হয়ে ওঠে। হেরোদের মতো ইশ্বরে আস্থাহীন শাসকেরও প্রতীক বনে যায় শেয়াল।  

৪.

মোহনীয় রমণীর রূপ ধারণ করে যে শেয়াল!

চীন, কোরিয়া ও জাপানের উপকথার শেয়াল একাধারে শয়তান বা স্বর্গীয় প্রাণী হয়ে দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া রূপ পাল্টে রূপবতী রমণী হয়ে উঠতে পারে; কিংবা চিত্তহারিণী রমণী নিজে চেহারা বদল করে শেয়াল হয়ে যেতে পারে। সামাজিক নিয়মনীতির সীমারেখার বাইরে অবস্থানকারী এসব রমণী রূপ-লাবণ্য ও জালিয়াতিতে অতুলনীয়া।

দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে চীনে রোগ এবং মৃত্যু সৃষ্টিকারী শেয়ালের অশুভ আত্মার কাহিনী প্রকাশ পেতে থাকে। প্রিয়দর্শিনী নারীরূপী শেয়ালদের গপ্পসপ্প বেড়ে যায়। বৃদ্ধ শেয়ালী নিজেকে অপরূপা তরুণীর বেশে উপস্থিত করতে পারত। এভাবেই কোনো তরুণকে তার মোহজালে আসক্ত করে তুলত। প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থা নিতে না পারলে এভাবে তরুণদের মরণ অনিবার্য হয়ে উঠত। শেয়ালী এ পদ্ধতিতে তরুণদের জীবনীশক্তি হরণ করে নিজে অমর হয়ে যেত।

এ প্রজাতির শেয়ালীরা সদাসর্বদা অপরূপ কামিনীর রূপ ধরে আসত। তারা কখনোই পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিবর্তন করত না। বুড়ো হতো না। নোংরা হতো না। মুরগির গোশত তাদের প্রিয় খাবার। কড়া মদ পান করত। পুরুষের চায়ে উত্তেজক দ্রব্য মিশিয়ে দিত। আর প্রতি সন্ধ্যায় আবারও কুমারী হয়ে যেত এসব শেয়াল।

বিদ্যাপতির পঞ্চতন্ত্র থেকে আরবীতে অনুদিত কালিয়া ওয়া ডিমনা, মামলুক শাসনামলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এর প্রাণীকাহিনি/ সিংহ ও শিয়ালের শিকারের চিত্রায়ন

চীনের পুরোনো লেখাতে এরকম শত শত ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যাবে। সাধারণভাবে স্মৃতিচারণামূলক এসব ঘটনার বর্ণনার ধারাক্রম হতো এরকম যে এক নিশিতে জ্ঞানী এবং অধ্যবসায়ী তরুণের পাঠকক্ষে এসে ঢুকত এক অনিন্দ্য সুন্দরী। তরুণকে বিমোহিত করত সে। প্রতিরাতেই তাকে সুখ দিত এ মনোলোভা রমণী। কিছুদিন পর তার সাথে দেখা হতো অন্য কোনো জ্ঞানী ব্যক্তির। ব্যক্তিটি এই তরুণকে বলত, কী ব্যাপার হঠাৎ করে কেন বুড়িয়ে যাচ্ছ। তরুণ তখন তার কাহিনী শোনাত। শুনে সেই জ্ঞানী ব্যক্তি তাকে কিছু একটা দিল। এরপর থেকে সেই রমণীরূপী শেয়াল আর তার পাঠকক্ষে ঢুকতে পারত না।

শেয়াল নিয়ে উপকথা, লোককাহিনী এবং কাহিনী প্রায় অশেষ। ল্যাজকাটা শেয়াল, রঙের গামলায় ডুবে দিয়ে রং পরিবর্তন করে রাজা হওয়ার চেষ্টা, কাককে প্রশংসায় ভাসিয়ে গোশতের টুকরা হাতিয়ে নেওয়া বা এক কুমিরের ছাঁকে সাতবার দেখানোর মতো গল্পগুলো সবার জানা। তাই সেসব কাহিনী এখানে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই।

বরং, শেয়াল নিয়ে অনেক গল্প আমাদের জানা হয়নি। সেসবই পরিবেশনের চেষ্টা। প্রধানত পরিসরের স্বল্পতা, সময়ের সীমাবদ্ধতা এবং অনেকখানি আলসেমির তাড়নায় অনেক কাহিনীই স্পর্শ করা হলো না।

৫.

যে শেয়াল শেয়াল নয়। এ হলো অগ্নিশেয়াল। ফায়ারফক্স। অন্যতম জনপ্রিয় ব্রাউজার। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ফিনিক্স সাংকেতিক নামে প্রথম এই ব্রাউজারকে তৈরি করে মজিলা সম্প্রদায়।

পরীক্ষামূলক পর্যায়েই মাইক্রোসফটের ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৬-এর তুলনায় গতি, নিরাপত্তা এবং অ্যাড অনের জন্য প্রশংসায় ভাসতে থাকে। ২০০৪-এর ৯ নভেম্বর একে ছাড়া হয়। ৯ মাসে ছয় কোটি ডাউনলোড হওয়ার মাধ্যমে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারকে প্রচণ্ড চাপে ফেলে দেয়।

পরবর্তী সময়ে 'প্রথম ব্রাউজার যুদ্ধে' সরাসরি একে কোণঠাসাই করে। ট্রেডমার্ক নিয়ে ঝামেলার কারণে কয়েক দফা নাম বদল করতে হয় এর। ফিনিক্সের নাম বদলে রাখা হয় মজিলা ফায়ারবার্ড। কিন্তু সেখানেও আপত্তির মুখে পড়ে। পরে আরেক দফা নাম বদলে হয় মজিলা ফায়ারফক্স। লোহিতপান্ডা বা রেডপান্ডার ডাক নাম ফায়ারফক্স থেকে এ নামটি বেছে নেওয়া হয়। রেডপান্ডাই নতুন ব্রাউজারের মাসকটে পরিণত হয়। বর্তমানে এটি চতুর্থ জনপ্রিয় ব্রাউজার।

বরিস আরটিজবাসেফ, ইশপের গল্প, ১৯৩৭

৬.

শেয়াল কি পোষ মানে? কুকুর বা বেড়ালের মতো গৃহপালিত হতে পারে? ১৯৭০-এর দশকে নটর ডেম কলেজে ফাদার বেনাস পরিচালিত স্পেশাল ইংলিশ কোর্সে শেয়ালকে পোষ মানানোর একটা কাহিনী পড়েছিলাম। গল্পটি সত্যি বলে দাবি করা হয়েছিল।

ঝড় শেষে রাস্তা থেকে একটা ছানাকে কুড়িয়ে আনে ভাই। তা-ও ছোট বোনের কান্নাভেজা অনুরোধ-উপরোধের জোরেই এ কাজ করা হয়। চোখও ফোটেনি ছানাটার। মনে করা হয়, হয়তো কুকুরই হবে। শলতে দিয়ে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে দিল মা। জুতার বাক্সে পুরোনো কাপড়চোপড় দিয়ে উষ্ণ আরামদায়ক বাসা করে দেওয়া হলো। দিন কয়েক পরে বোঝা গেল কুকুর নয় ওটা শেয়াল ছানা।

কিন্তু ছোট বোনটির কান্নাই আবার বিজয়ী হলো। বাইরে ছেড়ে দেওয়া হলো না। রইল ঘরেই শেয়ালটি। বোনটির খেলার সাথী হলো। এমনকি পাড়ার কুকুরদের সাথেও তার মহা খাতির। তাদের সাথে মিলেমিশে একসাথে ঘুরেফিরে।

এর কিছুদিন পর পাড়া বদল করল ওরা। নতুন পাড়ায় এসেই প্রায় প্রাণঘাতী অভিজ্ঞতা হলো পোষা শেয়ালটির। পাড়ার কুকুরকুল একযোগে আক্রমণ চালায় ওকে একা পেয়ে। কামড়ে-আঁচড়ে-খামছে দেয়। একটুর জন্য জানে রক্ষা পায়। ঘরে যখন নিয়ে আসা হলো তখনো কাঁপছে। বোনটি ওকে জড়িয়ে ধরে রইল। খাবার দিল। পিঠ চাপড়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল।

সকালে উঠে আর খুঁজে পাওয়া গেল না শেয়ালকে। কখন যেন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে। আর কখনো ফিরে আসেনি। কুকুরের হামলার মুখে হয়তো ও নিজের পরিচয় বুঝতে পেরেছে। তাই ফিরে গেছে বনবাদাড়ে। বোনটি এখনো অপেক্ষা করে আছে। তার বিশ্বাস একদিন সত্যিই ফিরে আসবে তার পোষা শেয়াল।

 

Related Topics

টপ নিউজ

শেয়াল / শিয়াল / ইজেল / প্রাণী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ল উত্তরার বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য
  • জামিন দিলে সব টাকা শোধ করে দেব, পালিয়ে যাব না: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম
  • “আমি এখানে আর থাকবো না, আমাকে নিয়ে চলো” বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে আয়ানের চিৎকার
  • শাড়ির রঙে শনাক্ত: মেয়ে ফিরলেও লাশ হয়ে ফিরলেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীর মা
  • মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সাহায্যে আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক স্ট্যাটাস
  • ট্রাম্পের শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ আশ্রয় ‘বাণিজ্যিক বাজুকা’ দাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ!

Related News

  • নিদ্রাহারা রাতের এ গান
  • বুনো বিড়াল থেকে পোষা বিড়াল: রহস্যময় রূপান্তরের অজানা ইতিহাস
  • বিড়াল: বন্ধুত্ব
  • বাগনদীর ধারা
  • রাহবারের ছবি, ক্ষেপণাস্ত্র আর ডাক্তারসহ ইরানের দিনগুলো

Most Read

1
বাংলাদেশ

সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ল উত্তরার বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য

2
বাংলাদেশ

জামিন দিলে সব টাকা শোধ করে দেব, পালিয়ে যাব না: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম

3
বাংলাদেশ

“আমি এখানে আর থাকবো না, আমাকে নিয়ে চলো” বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে আয়ানের চিৎকার

4
বাংলাদেশ

শাড়ির রঙে শনাক্ত: মেয়ে ফিরলেও লাশ হয়ে ফিরলেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীর মা

5
বাংলাদেশ

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সাহায্যে আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক স্ট্যাটাস

6
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ আশ্রয় ‘বাণিজ্যিক বাজুকা’ দাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net