আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা ইসিতে, এক বছরের ব্যবধানে বিএনপির আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ

২০২৪ সালের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এতে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে বিএনপির আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ। সেই সাথে দলটির ব্যয়ও বেড়েছে।
দলের দাখিল করা হিসাবে আয় দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই হিসাব জমা দেয়।
পরে সাংবাদিকদের এ-সংক্রান্ত তথ্য জানান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এসময় তিনি জানান, গত বছর বিএনপির আয়ের তুলনায় ব্যয় কম হয়। ফলে অর্থ উদ্বৃত্ত ছিল। উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা। এই টাকা দলের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে।
রিজভী বলেন, ২০২৪ সালে বিএনপির আয়ের খাতের মধ্যে ছিল জাতীয় নির্বাহী কমিটির মাসিক চাঁদা, বইপুস্তক বিক্রয়, বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান, ব্যাংক থেকে অর্জিত সুদ ইত্যাদি।
তিনি জানান, এই সময়ে দলটির ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আর্থিক অনুদান, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, বিভিন্ন সভার হল ভাড়া, দাপ্তরিক ক্রোড়পত্র ছাপানো, রমজানে ইফতার মাহফিল ও অফিশিয়াল বিভিন্ন খরচ।
২০২২ সালে বিএনপির আয় দেখানো হয়েছিল পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ টাকা। ব্যয় হয় ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৩ টাকা।
রিজভী বলেন, "যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে। এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা সরকারের দায়িত্ব।জনগণ প্রত্যাশা করে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবে। বিগত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, তারা অনেকদিন ধরে ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।"
শনিবার (২৬ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, রোববার বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে গত পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেবে।
এর আগে, ৭ জুলাই নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, নিবন্ধিত দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের চিঠি দেওয়া হয়নি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোকে আগের বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। পরপর তিন বছর হিসাব না জমা দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি হলেও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় ৫০টি দলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।