Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
September 21, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, SEPTEMBER 21, 2025
ফুটবলের বিশ্বকাপ যখন চুরি হয়ে গেল!

ইজেল

এম এ মোমেন
18 December, 2022, 04:05 pm
Last modified: 18 December, 2022, 04:11 pm

Related News

  • ‘ও কীভাবে মারা গেল, বলতে পারেন?’: ‘ফিলিস্তিনি পেলে’র মৃত্যুতে উয়েফার শোকপ্রকাশের ধরনে সমালোচনা সালাহর
  • নারী ফুটবলারকে চুমু: সাবেক স্প্যানিশ ফুটবলপ্রধান রুবিয়ালেসের আপিল খারিজ, শাস্তি বহাল
  • বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ: স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকদের দীর্ঘ সারি
  • ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে
  • ম্যারাডোনার মৃত্যু মামলার বিচারপ্রক্রিয়া 'বাতিল'

ফুটবলের বিশ্বকাপ যখন চুরি হয়ে গেল!

১৯৭০ সালে মেক্সিকোর অ্যাজটেক স্টেডিয়ামে ইতালিকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ব্রাজিল চিরদিনের জন্য ট্রফিটি লাভ করে। কিন্তু ১৯৮৩ সালে কাপটি আবার চুরি হয়। চুরির পেছনে মূল ষড়যন্ত্রকারী একজন ব্যাংকার ও ফুটবল ক্লাবের এজেন্ট সার্জিয়ো পেরেইরা আইরেস। সার্জিয়ো প্যারালটা নামে তার অধিক পরিচিতি। তিনিই দুজন চোর নিয়োগ করেন—একজন সাবেক পুলিশ অফিসার ফ্রান্সিসকো রিভেরা অন্যজন একজন ডেকোরেটর হোসে লুইস ভিয়েরা।
এম এ মোমেন
18 December, 2022, 04:05 pm
Last modified: 18 December, 2022, 04:11 pm

১৯৬৬ সালে উদ্ধার করার পর স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জুলে রিমে কাপ দেখাচ্ছেন। চবি: এএফপি

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মোনালিসা চুরির পর এ পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে আলোচিত চুরি হচ্ছে ফুটবলের বিশ্বকাপ চুরি—একবার নয়, দুবার।

বিশ্বকাপের পুরস্কারের নাম তখন জুলে রিমে ট্রফি।

ফরাসি ফুটবল সংগঠক ও প্রশাসন জুলে রিমের জন্ম ১৪ অক্টোবর ১৮৭৩ পূর্ব ফ্রান্সের থিওল কমিউনে। বাবা মুদি দোকানি ভাগ্যান্বেষনে যখন প্যারিস এলেন ছেলের বয়স তখন এগার বছর। ভাগ্য কিছুটা অবশ্যই বদলেছে, জুলে রিমে আইনজীবী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। একই সাথে ১৮৯৭ সালে কোনো ধরনের বৈষম্য না করার আদর্শ নিয়ে রেডস্টার নামের একটি ক্রীড়া ক্লাবও গঠন করেছেন। নির্ধারিত যোগ্যতা থাকলে যে কেউ ক্লাবে সদস্য হতে পারবেন। সাদা না কালো, ইউরোপিয়ার না আফ্রিকান, বাদশাহ না নফর এসব বিবেচ্য হবে না। ১৯০৪ সালে যখন ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্য ফুটবল (ফিফা) গঠিত হয় তিনি শুরু থেকেই এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে চাইলেও তখনই সম্ভব হয়ে উঠেনি, আয়োজনের টাকা লাগবে, অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ফিফা শুরুতে ১৯০৮ সালের লণ্ডন অলিম্পিকে সেধেই অ্যামেচার ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনে অংশ নেয়, তাদেরও অভিজ্ঞতা দরকার। অলিাম্পক আয়োজক ব্যারন পিয়েরে দ্য কুবার্তা, আলাদা পেশাদার ফুটবল হবার বিরোধী, চাইলে ফুটবল অলিম্পিকেই অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, ফিফার কি দরকার। 

প্রথম মহাযুদ্ধ এসে যায়। যুদ্ধে যোগদান বাধ্যতামূলক। জুলে রিমে ফরাসি সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করেন এবং বীরত্বের খেতাবও পান। যুদ্ধকালে ফিফার সব কাজ বন্ধ থাকে। যুদ্ধের পরপরই ১৯১৯ সালে তিনি ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হন। দুবছর পর ১৯২১ এ ফিফার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৫৪ পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। তার সাফল্য তার সময় পর্যন্ত ৮৫টি দেশকে ফিফাভুক্ত করতে পেরেছেন। শুরুর দিকে ইংলিশ, ওয়েলশ ও স্কটিশ দল ফিফা থেকে বেরিয়ে এলেও তার প্রচেষ্টায় আবার ফিরে আসে।

১৯২৮ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের প্রস্তাবে উরুগুয়ে খেলা আয়োজনের ভেন্যু হতে সম্মত হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াত খরচ বহনের প্রস্তাবও দেয়। শুরুতেই উরুগুয়ে ভেন্যু হিসেবে বেছে নেবার কারণে জুলে রিমে সমালোচিত হন। ইউরোপিয় দেশ ফ্রান্স, বেলজিয়াম, রোমানিয়া এবং যুগোস্লাভিয়াকে তার ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে যোগদান করতে রাজি করান।

৮৩তম জন্মদিনের দু'দিন পর ১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ তার মৃত্যু হয়।

সম্মান দেখাতে তার মৃত্যুর পর মূল বিশ্বকাপটির নামকরণ করা হয় জুলে রিমে ট্রফি।

যুদ্ধোত্তর দ্বিধাবিভক্ত পৃথিবীকে ফুটবল উপলক্ষ করে একত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জুলে রিমের নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবিত হয়েছিল। কিন্তু পুরস্কার তিনি পাননি। শুরু থেকেই অ্যামেচার ফুটবল সংস্থা এবং শক্তিশালী সংস্থা অলিম্পিক এবং প্রবর্তনকারী ব্যারন পিয়েরে দ্য কুবার্তা বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট আয়োজনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। জুলে রিমে শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পাননি।

জুলে রিমের মৃত্যুর পর ১৯৫৮ সালে সুইডেন এবং ১৯৬২ সালে চিলিতে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬-র জন্য নির্ধারিত ইংল্যান্ড। জুলাই থেকে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ফিফা জানুয়ারিতেই কাপটি পাঠিয়ে দেয় এবং ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তা গ্রহণ করে। প্রচারনা ও প্রদর্শনী ছাড়া কাপটি ল্যাঙ্কাস্টার গেটে তাদের হেডকোয়ার্টার্স-এই কাপটি সংরক্ষিত রাখে। 

মার্চ মাসে স্ট্যাম্পেক্স প্রদর্শনীর সময় কাপটি গণ-প্রদর্শনের জন্য স্ট্যানলি গিবসন স্ট্যাম্প কোম্পানি অনুমতি লাভ করে। সাথে শর্তযুক্ত হয় যে কাপটি প্রদর্শনীতে সার্বক্ষণিক প্রহরায় রাখতে হবে।

১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের পর উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পল জুডের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দিচ্ছেন জুলে রিমে (বাঁয়ে)। ছবি: কিস্টোন

কাজটির দাপ্তরিক মূল্য ৩০০০ পাউন্ড। এর জন্য ৩০ হাজার পাউন্ডের বীমাও করা হয়। ১৯ মার্চ ১৯৬৬ ওয়েস্টমিনস্টার সেন্ট্রাল হলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এখানে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে কাপ রাখা হলেও এটাই দর্শণার্থীদেও মূল আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠে। দুজন ইউনিফর্মধারী পাহারাদার কাপের সার্বক্ষণিক প্রহরায় থাকেন, অধিকন্ত সাদা পোশাকের বাড়তি দুজন দিনের বেলায় নজরদারি করার জন্য নিয়োজিত। কাপ প্রদর্শনীর কেবিনেটটি দেখে রাখার জন্য বাড়তি গার্ডও নিয়োজিত রাথার কথা। 

কিন্তু কাপের উপর সার্বক্ষণিক দৃষ্টিরাখার মতো যে কেউ ছিলো না এটা প্রমানিত হয়ে যায়। রোববার খ্রিষ্টিয় মেথোডিস্ট ধর্মীয় সার্ভিসের জন্য হল খোলা রাখা হয়।

রোববার ২০ মার্চ ১৯৬৬ দুপুর ১২-১০ মিনিটে প্রহরীদের কারো নজরে পড়েনি কেউ ডিসপ্লে কেইস জোর খাটিয়ে খুলে কাপ নিয়ে গেছে, হলের পেছনের দরজাও খোলা। কাঠের যে ডাসা দরজা বন্ধ করত তা মেঝেতে পরে আছে। দরজার ভেতর ও বাইরের যে সব স্ক্রু আর বল্টু রয়েছে তারা যে পথে এসেছে তাও খুলে ফেলা হয়েছে। প্রদর্শন আলমারির পেছন দিকটাও খোলা। ট্রফিটা তুলে নিয়ে সে পথেই ফিরে গেছে। গার্ডরা সন্দেহজনক কিছু দেখেনি বা শব্দ শুনেনি। একজন গার্ড অবশ্য বলেছে দোতলায় টয়লেটের দিকে যাবার সময় পাবলিক টেলিফোনের পাশে একজন অদ্ভুত লোক তার চোখে পড়েছে।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড মামলাটি হাতে নেয় এবং তাদের ফায়ারিং স্কোয়াডকে দায়িত্ব দেয়। তারা গার্ড এবং রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের জেরা করে। চার্চেও সার্ভিসে আসা একজন নারী একজন সন্দেহভাজনের দেখা পেয়েছেন বলে জানান এবং তার একটি ভিন্ন একটি বর্ণনা দেন। 

বিশ্বকাপ চুরির কাহিনী পরের দিনই সারা পৃথিবী জেনে যায়। ব্রিটিশ সরকারের দায়িত্বহীনতা নিয়ে বিব্রতকর সমালোচনা চলতে থাকে বিশ্বজুড়ে। চুরির সংবাদ পৃথিবীর সকল ছোটোবড় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। পুলিশ দু'জন সন্দেহভাজনকে খোঁজ করতে থাকে। কিন্তু সংবাদপত্রে সন্দেহভাজনদের যে বর্ণনা ছাপা হয় তার সাথে চার্চে আগত নারীর বর্ণনার মিল নেই। 

২১ মার্চ অর্থাৎ পরদিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জো মিয়ার্স অজ্ঞাত ব্যক্তির একটি ফোনকল পান। অজ্ঞাত লোকটি জানায় জো মিয়ার্স আগামীকাল (২১ মার্চ ১৯৬৬৬) চেলসি ফুটবল ক্লাবে একটি পার্সেল পাবেন। সেখান থেকে জো মিয়ার্সের বাড়িতে পরদিন একটা পার্সেলটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পার্সেল খোলার পর দেখা যায় এর ভেতরে গোর্ল্ড কাপের উপর সেটে থাকা লাইনিংগুলো রয়েছে এবং মুক্তিপণের একটি নোটও রয়েছে, তাতে ১৫ হাজার পাউন্ড দাবি করা হয়েছে। ১ আর ৫ পাউন্ড নোট তারা চেয়েছে। আর এফএ-কে ইভনিং নিউজ-এ গোল্ডকাপের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দেবে। যদি এফএ-এ বিজ্ঞাপন দেওয়াসহ পরবর্তী নির্দেশগুলো শোনে এবং মান্য করে তাহলে ট্রফি শুক্রবারের মধ্যে ফেরত পাবে, অন্যথায় এবং এফএ যদি বিষয়টি পুলিশ কিংবা গণমাধ্যমের কাছে ফাঁস করে তাহলে ট্রফিটি গলিয়ে ফেলা হবে। 

কিছুক্ষণ পরই মিয়ার্স আর একটি ফোন পান; নিজেকে জ্যাকসন পরিচয় দিয়ে একজন আগের নির্দেশনা একটু সংশোধন করে ৫ ও ১০ পাউন্ড নোট দেবার কথা বলেছে।

জুলে রিমে ট্রফি উদ্ধার করার পর পিকলস ও তার মালিক ডেভিড করবেট। ছবি: কিস্টোন

তাদের হুমকির পরও জো মিয়ার্স পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ফ্লাইং স্কোয়াডের ডিটেকটিভ ইন্সপেক্টর চার্লস বাগির সাথে কথা বলে তার হাতে ট্রফির লাইনিং এবং মুক্তিপণের চিঠি তুলে দেন। পুলিশ পরামর্শ দেয় তাদের কথা মতো ২৪ তারিখের পত্রিকায় যেন বিজ্ঞাপন দেয় এবং একটি ব্যাঙ্কের সাথে কথা বলে ফলস র্যানসম পেমেন্ট বান্ডিল তৈরি করিয়ে নেয়। উপরে ও নিচে প্রকৃত নোট এবং ভেতরে কেবল কাগজ দিয়ে বান্ডিল বানোনো হবে, টাকাগুলো রাখা থাকবে স্যুটকেসে। দুজন পুলিশ অফিসার টাকা হস্তান্তর করতে মিয়ার্সের সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন। তারা তার বাড়িতে আসবেন এবং পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবেন।

মিয়ার্স হাপানি আক্রান্ত, সুতরাং তার স্ত্রী ফোন ধরে জবাব দিতে ফোনটা সহকারি ম্যাকপিকে (প্রকৃত পক্ষে ছদ্মবেশী ডিটেশটিভ ইন্সপেক্টর বাগি) দেন। জ্যাকসনকে নার্ভাস মনে হলো, শেষ পর্যন্ত তাকে রাজি করানো গেল যে বাটেরসা পার্কের গেটে তাদের সাক্ষাৎ হবে। ফ্লাইং স্কোয়াডের বাগি গাড়ি চালিয়ে পার্কের দিকে গেলেন, তাকে অনুসরণ করল অচিহ্নিত কয়েকটি গাড়ি। জ্যাকসনের সাথে দেখা হলো। বাগি তাকে স্যুটকেস দেখালেন। কিন্তু নোটের বান্ডিলে যে কেবলই কাগজ তা জ্যাকসনের নজরে এলো না। টাকা হস্তান্তর করার আগে বাগি ট্রফিটা দেখতে চাইলেন এবং বললেন, পথে কেউ তার কাছ থেকে ট্রফিটা ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পার। জ্যাকসন বাগির গাড়িতে উঠল এবং তাকে ট্রফির কাছে নিয়ে যেতে সম্মত হলো।

রাস্তায় জ্যাকসনের চোখে পড়ল ফ্লাইং স্কোয়ার্ডের ভ্যান তাদের অনুসরণ করছে এবং ফলে বিচলিত হয়ে পড়ল। কেনিংটন পার্ক রোডের ট্রাফিক লাইটে সে বাগিকে গাড়ি থামাতে বলল এবং জানাল ট্রফিটা নিয়ে আসছে। সে যখন গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করে একটা ভ্যান জ্যাকসনকে থামালে সে দ্রুত এক প্রান্ত দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। যখন বাগি তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন বলে ভাবছেন আবার তার অভ্যুদয় ঘটল, বাগি তাকে গাড়িতে উঠতে বললেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্যাকসন চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে ছুট দিল। বাগি প্রথমে গাড়ি নিয়ে ছুটলেও পরে গাড়ি রেখে দৌড়ে একটি হাউস গার্ডেন পর্যন্ত গিয়ে তাকে ধরলেন, তিনি যে পুলিশ অফিসার সে কথা বললেন এবং তাকে গ্রেফতার করলেন, অন্যান্য গাড়ি থেকে অফিসাররা নেমে এলেন এবং জ্যাকসনকে এসকর্ট করে কেনিংটন পুলিশ স্টেশনে নিয়ে  গেলেন।

থানাতে পুলিশ জ্যাকসনকে সনাক্ত করতে পারে, তার আসল নাম এডওয়ার্ড বেচলে, ছিচকে চোর এবং পুরনো গাড়ির ডিলার, চুরিও চোরাইমাল নিয়ে ধরা পড়ার পর তার সাজা হয়েছে। বেচলে কাপ চুরির কথা অস্বীকার করে তবে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে এটা যেখানেই আছে খুঁজে পেতে সাহায্য করবে বলে আশ্বস্ত করে। তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ট্রফিটি চুরির জন্য দরজা ভেঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হলো। বেচলে দাবি করল সে একজন পোলিশকে চেনে, সে তার হয়ে ৫০০ পাউন্ডের দালালির বিনিময়ে এই কাজটা করতে রাজি হয়েছে। মিসেস কুম্ব, যিনি সেন্ট্রাল হলে একজন অদ্ভুত লোক দেখেছেন বলে জানিয়েছিলেন, তিনি সেই লোক হিসেবে বেচলেকে সনাক্ত করলেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা তাকে সনাক্ত করতে পারল না।

২৭ মার্চ ডেভিড করবেট নামের একজন লল্ডনবাসী তার কুকুর পিকলকে নিয়ে দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনের বেওলা হিল-এ হাঁটছিলেন, সে সময় করবেটের বাড়ির ঝোপের মধ্যে একটি পার্সেল কুকুরের নজরে আসে এবং তা শুকতে থাকে। পুরোনো খবরের কাগজে মোড়া, দড়ি দিয়ে বাধা। তিনি তখন পার্সেল খুললেন এবং ট্রফির নিচে বিজয়ীর নাম লেখা দেখলেন তিনি এটা চিনতে পারলেন। তিনি জিপসি হিল পুলিশ স্টেশনে গিয়ে কাপটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেন। পুলিশ করবেট এবং ট্রফি ক্যান রো থানায় নিয়ে এলো, সেখানে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের হ্যারোল্ড মেয়েস ট্রফিটা সনাক্ত করলেন। পুলিশ শুরুতে করবেটকেও সন্দেহ করেছিল। পুলিশ পরদিন সকালে ট্রফি উদ্ধারের ঘোষণা দিল তবে সাক্ষ্যের প্রয়োজনে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তা পুলিশ হেফাজতেই রয়ে গেল। বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট উদ্বোধনের আগে তা এফএ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হলো।

যেখানে থেকে ট্রফি উদ্ধার করেছে, সেখানে ছবি তুলছে পিকলস। ছবি: সেন্ট্রাল প্রেস

কুকুর পিকল সেলেব্রিটিতে পরিণত হলো। সমস্ত গণমাধ্যমে তার ছবি দেখা গেল, টেলিভিশন ও সিনেমাতেও পিকল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। ডেভিড করবেট খেলোয়াড়দের সেলেব্রেশন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত হলেন এবং ৬ হাজার পাউন্ড পুরস্কারও পেলেন। জনগণের উদযাপনের জন্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ট্রফির একটি রেপ্লিকা তৈরি করে দিল।

এডওয়ার্ড বেচলে টাকা দাবিকরা সহ অন্যান্য অপরাধে যুগপৎ কার্যকরী দু'বছরের সাজা পেল। ১৯৬৯ সালে বেচলে শ্বাসযন্ত্রের রোগ এমফিসিমাতে মৃত্যুবরণ করে।

ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন জার্নালিস্ট টম পেটিফোর তার দীর্ঘ গবেষণা ও অনুসন্ধান শেষে জানিয়েছেন জুলে রিমে ট্রফি চুরি করছে সিডনি কুগালির। এ নিয়ে একটি দীর্ঘ ডকুমেন্টারি মুভি তিনি তৈরি করেছেন। 

১৯৭০ সালে মেক্সিকোর অ্যাজটেক স্টেডিয়ামে ইতালিকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ব্রাজিল চিরদিনের জন্য ট্রফিটি লাভ করে। কিন্তু ১৯৮৩ সালে কাপটি আবার চুরি হয়। চুরির পেছনে মূল ষড়যন্ত্রকারী একজন ব্যাংকার ও ফুটবল ক্লাবের এজেন্ট সার্জিয়ো পেরেইরা আইরেস। সার্জিয়ো প্যারালটা নামে তার অধিক পরিচিতি। তিনিই দুজন চোর নিয়োগ করেন—একজন সাবেক পুলিশ অফিসার ফ্রান্সিসকো রিভেরা অন্যজন একজন ডেকোরেটর হোসে লুইস ভিয়েরা। দুজন ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন অফিসে প্রবেশ করে নৈশপ্রহরীকে পরাস্ত করে জুলে রিমে ট্রফিসহ আরও দুটি ট্রফি ইকুইটাভিটা এবং জুরিটো নিয়ে যায়। আবারো তোলপাড় শুরু হয়।

এন্টোনিও সেত্তা নামের একজন তালাচাবিকাটার তস্কর সাক্ষ্য দেয় প্যারালটা কাজটা করে দেবার জন্য তার কাছে এসেছিল, কিন্তু কাজটা তার দেশপ্রেমের সাথে সাংঘর্ষিক বলে রাজি হয়নি। তাছাড়া ব্রাজিলের জুলে রিমে কাপ বিজয়ের আনন্দে হার্ট অ্যাটাক করে তার ভাই মারা যায়, এই স্মৃতিটা সে বহন করছে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে জুলে রিমে ট্রফি নিচ্ছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ববি মুর, ১৯৬৬ বিশ্বকাপে। ছবি: ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড

 

রালটা ও অন্যান্যদের গ্রেফতার করা হলে তারা জানায় আর্জেন্টিনার স্বর্গের ডিলার ওয়ান কার্লোস হার্নান্দেজ ট্রফিটাকে গলিয়ে সোনার বার বানিয়ে ফেলেছে। হার্লান্দেজ অভিযোগ অস্বীকার করে। তার ফাউন্ড্রিতে অভিযান চালানো হলে ট্রফির স্বর্ণের সাথে মেলে এমন কোনো স্বর্ণের নমুনা পাওয়া যায়নি, তাছাড়া ট্রফি যেহেতু সলিড গোল্ডের তৈরি নয়, এটা দিয়ে বার বানানো সম্ভব নয়। ফেডারেশন পুলিশ অফিসার বলেছেন গলানোর চেয়ে আস্ত রাখলেই তো বেশি দাম পেতো।

হার্নান্দেজ ও সন্দেহভাজন অন্যরা গ্রেফতার হয়, মামলার রায় হবার পর তারা সকলেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাদেরই একজন চিকো বারবুড়ো ১৯৮৯ সালে একটি পানশালায় গুলিতে নিহত হয়; লুই বিগোডে পুনরায় গ্রেফতার হয়ে সাজা খেটে ১৯৯৮ সালে মুক্ত হয়। এন্টোনিও সেত্তা গাড়ি দুর্ঘটনায় ১৯৮৫ সালে নিহত হয়। প্যারালটা ১৯৯৮ সালে জেল থেকে বেরিয়ে ২০০৩ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। হার্লান্দেজ ফ্রান্সে পালিয়ে যায়, পরে ড্রাগ চোরাচালানিতে গ্রেফতার হয়।

জুলে রিমে ট্রফি আর উদ্ধার করা যায়নি। ফিফা ব্রাজিলকে জুলে রিমের একটি রেপ্লিকা দিয়েছে।

১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে পশ্চিম জার্মানির অধিনায়ক ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। ছবি: কিস্টোন

কখনো কি আবিষ্কার হবে যে ট্রফিটি গলানো হয়নি—এখনও অক্ষত রয়েছে। যদি থাকে এবং উদ্ধার হয় তাহলে এটাই হবে জুলে রিমের প্রতি শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

Related Topics

টপ নিউজ

ফুটবল / জুলে রিমে / বিশ্বকাপ চুরি / জুলে রিমে কাপ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: রয়টার্স
    দক্ষ কর্মীদের ভিসা ফি ১,৫০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করলেন ট্রাম্প
  • অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (বামে), কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
    ৩২ বছরে প্রথমবার শীর্ষ তিনের বাইরে অক্সফোর্ড-কেমব্রিজ, টানা দ্বিতীয়বার সেরা এলএসই
  • হতাশার ডিগ্রি: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না?
    হতাশার ডিগ্রি: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না?
  • চট্টগ্রাম বন্দর। ফাইল ছবি: টিবিএস
    চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
  • প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
    সমুদ্রপথে আম-কাঁঠালের বিদেশযাত্রা: কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত

Related News

  • ‘ও কীভাবে মারা গেল, বলতে পারেন?’: ‘ফিলিস্তিনি পেলে’র মৃত্যুতে উয়েফার শোকপ্রকাশের ধরনে সমালোচনা সালাহর
  • নারী ফুটবলারকে চুমু: সাবেক স্প্যানিশ ফুটবলপ্রধান রুবিয়ালেসের আপিল খারিজ, শাস্তি বহাল
  • বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ: স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকদের দীর্ঘ সারি
  • ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে
  • ম্যারাডোনার মৃত্যু মামলার বিচারপ্রক্রিয়া 'বাতিল'

Most Read

1
ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

দক্ষ কর্মীদের ভিসা ফি ১,৫০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করলেন ট্রাম্প

2
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (বামে), কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

৩২ বছরে প্রথমবার শীর্ষ তিনের বাইরে অক্সফোর্ড-কেমব্রিজ, টানা দ্বিতীয়বার সেরা এলএসই

3
হতাশার ডিগ্রি: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না?
বাংলাদেশ

হতাশার ডিগ্রি: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না?

4
চট্টগ্রাম বন্দর। ফাইল ছবি: টিবিএস
অর্থনীতি

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

5
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

সমুদ্রপথে আম-কাঁঠালের বিদেশযাত্রা: কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net