‘ও কীভাবে মারা গেল, বলতে পারেন?’: ‘ফিলিস্তিনি পেলে’র মৃত্যুতে উয়েফার শোকপ্রকাশের ধরনে সমালোচনা সালাহর

'ফিলিস্তিনি পেলে' নামে পরিচিত ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে তার মৃত্যুর কারণ এড়িয়ে যাওয়ায় উয়েফার তীব্র সমালোচনা করেছেন লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহ।
প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ) জানিয়েছে, বুধবার দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালালে সে আক্রমণে নিহত হন ৪১ বছর বয়সি সুলেইমান আল-ওবেইদ।
উয়েফা শুক্রবার এক্স প্ল্যাটফর্মে লেখে, 'বিদায় সুলেইমান আল-ওবেইদ, "ফিলিস্তিনি পেলে"। এমন এক প্রতিভা, যিনি সবচেয়ে অন্ধকার সময়েও অগণিত শিশুকে আশা জুগিয়েছেন।'
শনিবার এ পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় সালাহ লেখেন, 'ও কীভাবে মারা গেল, বলতে পারেন? কীভাবে, কোথায় এবং কেন মারা গেল?'
লিভারপুলের এই মিশরীয় তারকা ফুটবলার ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ক্রমাগত গাজাবাসীদের পক্ষে কথা বলে আসছেন। দুই বছর আগে তিনি গাজায় ত্রাণকার্যে সহায়তার জন্য মিশরীয় রেড ক্রসকে অনুদানও দিয়েছিলেন।
পিএফএ গত সপ্তাহে জানায়, ২০০৭ সালে অভিষেক হওয়ার পর ফিলিস্তিন জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন ওবেইদ। দেশের হয়ে ২৪ ম্যাচ খেলে দুটি গোল করেন তিনি। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় গোলটি ছিল ২০১০ সালের ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে করা একটি সিজার-কিক।

পিএফএ আরও বলে, 'দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৪১ বছর বয়সি আল-ওবেইদ ১০০টিরও বেশি গোল করেছেন, যা তাকে ফিলিস্তিনি ফুটবলের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত করেছে।'
মাঠের এই প্রতিভার জন্যই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ফুটবলারের নামানুসারে তিনি 'ফিলিস্তিনি পেলে' নামে পরিচিতি পান।
ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় প্রাণ হারানো ক্রীড়াবিদদের ক্রমবর্ধমান তালিকায় ওবেইদের মৃত্যু নতুন সংযোজন। এ পর্যন্ত অন্তত ৬৬২ জন ক্রীড়াবিদ ও তাদের আত্মীয় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পিএফএ বলেছে, 'নিহত বা অনাহারে মারা যাওয়া ফুটবলারের সংখ্যা ৪২১-এ পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে ১০৩ জনই শিশু।'
পিএফএর তথ্যমতে, গাজা ও পশ্চিম তীরজুড়ে স্টেডিয়াম, প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে শুরু করে জিম ও ক্লাবহাউসসহ ২৮৮টি ক্রীড়া স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে গাজায় ২৬৮টি স্থাপনা, পশ্চিম তীরে ২০টি। এগুলোর প্রায় অর্ধেক সরাসরি ফুটবলের সঙ্গে জড়িত ছিল।
হামলার শিকার হওয়া স্থানগুলোর মধ্যে গাজায় পিএফএর সদর দপ্তরও রয়েছে।
মে মাসের শেষদিকে মার্কিন ও ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।