সমুদ্রপথে আম-কাঁঠালের বিদেশযাত্রা: কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো আম ও কাঁঠাল সমুদ্রপথে রপ্তানি করা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে। এর মধ্য দিয়ে দেশের কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে নতুন ধাপের সূচনা হলো। এতদিন এসব ফল কেবল আকাশপথেই রপ্তানি করা হতো।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী মৌসুমে সমুদ্রপথে ছয়টি দেশে মোট ৩৯ হাজার ১৪১ কেজি আম রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে গেছে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৮৭৭ কেজি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৪ হাজার ৫৮০ কেজি, যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজার ৮৩৪ কেজি, ইতালিতে ১ হাজার ৯৫০ কেজি, বেলজিয়ামে ৫০৪ কেজি এবং কানাডায় ৩৯৬ কেজি।
চট্টগ্রাম উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের (সমুদ্রবন্দর) উপপরিচালক মো. শাহ আলম টিবিএসকে বলেন, "এবার প্রথমবার সমুদ্রপথে আম রপ্তানি হয়েছে। দুবাইতে পাঠানো ফ্রেশ আমের মান কিছুটা খারাপ হলেও ফ্রোজেন আকারে যেসব দেশে গেছে, সেখানে তেমন সমস্যা হয়নি।"
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, "আগে দেশে রপ্তানিযোগ্য মানের আমের উৎপাদন কম ছিল। এখন কৃষকদের সহযোগিতায় প্রচুর ভালো মানের আম উৎপাদন হচ্ছে। এ বছর প্রথমবার সমুদ্রপথে কিছু আম রপ্তানি হয়েছে, যদিও সময় বেশি লাগায় মান শতভাগ অক্ষুণ্ন থাকেনি।"
শুধু আম নয়, কাঁঠাল রপ্তানিতেও এসেছে পরিবর্তন।
রাজধানীর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্স স্টাইল গত মে মাসে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে ৩ হাজার ৫০০ কেজি কাঁঠাল দুবাই পাঠায়। যদিও কনটেইনার পৌঁছাতে ১২ দিনের বদলে ২৬ দিন লেগেছিল, তারপরও কাঁঠালের মান প্রায় অক্ষুণ্ন ছিল।

খরচের দিক থেকেও সমুদ্রপথ লাভজনক। বিমান পরিবহনে প্রতি কেজি ফল রপ্তানিতে খরচ হয় প্রায় ১৬০ টাকা। বিপরীতে সমুদ্রপথে ৩০-৩২ টনের একটি কনটেইনার পাঠাতে খরচ পড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা, অর্থাৎ প্রতি কেজি খরচ মাত্র ১৩-১৪ টাকা। ফলে খরচ কমিয়ে বৈদেশিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
তবে সময় বেশি লাগায় ফলের মান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ সুবিধা।
কাঁঠালের ক্ষেত্রে প্রায় পুরো রপ্তানিই হয়ে থাকে আকাশপথে। চলতি মৌসুমে রপ্তানিকৃত ১ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টনের মধ্যে সমুদ্রপথে গেছে মাত্র সাড়ে ৩ মেট্রিক টন, বাকিগুলো বিমানে রপ্তানি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংঘনিরোধ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের কাঁঠাল মূলত মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন ও আয়ারল্যান্ডে রপ্তানি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। দ্রুত পরিবহন সুবিধার কারণে এতদিন রপ্তানিকারকদের প্রথম পছন্দ ছিল আকাশপথ।
শুধু ফল নয়, সবজি রপ্তানিতেও এসেছে ইতিবাচক অগ্রগতি।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সমুদ্রপথে সবজি রপ্তানি হয়েছে ৫৮ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন—যা আগের বছরের তুলনায় ৩১৩ শতাংশ বেশি।
জানুয়ারি থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হয়ে রপ্তানি হয়েছে ৫৫ হাজার ৭০৪ মেট্রিক টন সবজি। এর মধ্যে আলু সবচেয়ে বেশি—৩৮ হাজার ৪৬ মেট্রিক টন। এছাড়া বাঁধাকপি ১৫ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন, মরিচ ২৭৭ মেট্রিক টন, টমেটো ১৬৭ মেট্রিক টন, মিষ্টি কুমড়া ৬৯৮ মেট্রিক টন এবং হিমায়িত সবজি ৮৮০ মেট্রিক টন।
উপপরিচালক মো. শাহ আলম টিবিএসকে বলেন, "দেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ ফল ও সবজি উৎপাদিত হলেও প্রক্রিয়াজাত সুবিধার অভাবে খুব অল্প অংশ রপ্তানি হয়। যদি প্যাকিং হাউসসহ আধুনিক অবকাঠামো তৈরি করা যায়, তাহলে সমুদ্রপথে রপ্তানি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।"
সংশ্লিষ্টদের মতে, এ উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে খরচ কমবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং নতুন বাজার তৈরি হবে। তবে এজন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা ও অবকাঠামো।
তবে সময় বেশি লাগায় ফলের মান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ সুবিধা।
কাঁঠালের ক্ষেত্রে প্রায় পুরো রপ্তানিই আকাশপথে হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে রপ্তানিকৃত ১,৫৩১ মেট্রিক টন কাঁঠালের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩ মেট্রিক টন সমুদ্রপথে পাঠানো হয়েছে, বাকি সব বিমানে রপ্তানি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংঘনিরোধ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের কাঁঠাল মূলত মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন ও আয়ারল্যান্ডে রপ্তানি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে।
দ্রুত পরিবহন সুবিধার কারণে এতদিন কাঁঠাল রপ্তানিতে আকাশপথই রপ্তানিকারকদের প্রথম পছন্দ ছিল।
শুধু ফল নয় সবজি রপ্তানিতেও ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সমুদ্রপথে সবজি রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮,৭৬৬ মেট্রিক টন—যা আগের বছরের তুলনায় ৩১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
জানুয়ারি থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হয়ে রপ্তানি হয়েছে মোট ৫৫,৭০৪ মেট্রিক টন সবজি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে আলু—৩৮,০৪৬ মেট্রিক টন। এছাড়া বাঁধাকপি ১৫,৬৩৬ মেট্রিক টন; মরিচ ২৭৭ মেট্রিক টন; টমেটো ১৬৭ মেট্রিক টন; মিষ্টি কুমড়া ৬৯৮ মেট্রিক টন এবং হিমায়িত সবজি ৮৮০ মেট্রিক টন।
উপপরিচালক মো. শাহ আলম টিবিএসকে বলেন, "দেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ ফল ও সবজি উৎপাদিত হলেও প্রক্রিয়াজাত সুবিধার অভাবে খুব অল্প অংশ রপ্তানি হয়। যদি প্যাকিং হাউসসহ আধুনিক অবকাঠামো তৈরি করা যায়, তাহলে সমুদ্রপথে রপ্তানি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।"
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ব্যয় কমবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং নতুন বাজার তৈরি হবে। তবে এর জন্য জরুরি প্রক্রিয়াজাত সুবিধা, আধুনিক প্রযুক্তি ও অবকাঠামো।