Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
May 21, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, MAY 21, 2025
ভারতে ফেসবুক নিজেই ছড়ায় ধর্মীয় বিদ্বেষ

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
24 October, 2021, 06:55 pm
Last modified: 24 October, 2021, 07:50 pm

Related News

  • স্থলবন্দর নিয়ে ‘প্রতিশোধমূলক’ পাল্টা পদক্ষেপ নয়, ভারতকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে: বাণিজ্য সচিব
  • ভারতের নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘমেয়াদে আত্মনির্ভরশীলতার সুযোগ: আসিফ মাহমুদ
  • বিতর্কিত জাত গণনা কেন ভারতের আদমশুমারিতে ফিরছে আবার?
  • জয়শঙ্করকে প্রশ্ন রাহুলের, পাকিস্তানকে অপারেশন সিন্দুরের কথা আগেই জানিয়ে আমরা বিমান হারিয়েছি?
  • পাকিস্তানকে চাপে রাখতে এবার এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়াল ভারত

ভারতে ফেসবুক নিজেই ছড়ায় ধর্মীয় বিদ্বেষ

মোদির বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ রয়েছে নিজ দলের নির্বাচনী স্বার্থে ফেসবুককে ব্যবহার করার। এছাড়া গত বছর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন থেকেও সংশয় জন্ম নিয়েছে, বিজেপির পাল্টা আঘাতের ভয়েই কি ভারতে ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়ানো কনটেন্ট নির্মূলের ক্ষেত্রে ফেসবুক 'সিলেকটিভ' পথে হাঁটছে?
টিবিএস ডেস্ক
24 October, 2021, 06:55 pm
Last modified: 24 October, 2021, 07:50 pm
ছবি: পিটিআই

ভুল তথ্য, ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়ানো এবং উত্তেজনা সৃষ্টিকারী পোস্ট দমনের ক্ষেত্রে ভারতে ফেসবুক "পক্ষপাতদুষ্ট" পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। বিশেষত মুসলিমবিরোধী কনটেন্টের ক্ষেত্রে তাদের এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কোম্পানিটির অনেক কর্মীও তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে। 

সম্প্রতি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের হাতে আসা একটি ফাঁস হওয়া নথি থেকে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেছে। 

২০১৯ সালের কোম্পানি মেমো থেকে শুরু করে চলতি বছরের মার্চ মাসের গবেষণার উপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির আভ্যন্তরীণ নথি সাজানো হয়েছে, যেখানে পরিষ্কারভাবেই দেখা যাচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র ও কোম্পানিটির বৃহত্তম প্রবৃদ্ধি বাজারে আপত্তিকর কনটেন্ট সরাতে ফেসবুককে কতটা বেগ পেতে হচ্ছে। অথচ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার দেখা গেছে ভারতে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টিতে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। 

নথিগুলো থেকে প্রমাণিত যে এসব সমস্যার ব্যাপারে বহু বছর ধরেই অবগত রয়েছে ফেসবুক। ফলে স্বভাবতই এখন প্রশ্ন উঠছে, সবকিছু জানা সত্ত্বেও কি সমস্যা সমাধানে ফেসবুক যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে? অনেক সমালোচক ও ডিজিটাল বিশেষজ্ঞই বলছেন, ফেসবুক এসব সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে; বিশেষত যেসব ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র সদস্যরা জড়িত ছিল। 

গোটা বিশ্বজুড়েই রাজনৈতিক অঙ্গনে ফেসবুকের গুরুত্ব ক্রমশ বেড়েই চলেছে, এবং ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। 

মোদির বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ রয়েছে নিজ দলের নির্বাচনী স্বার্থে ফেসবুককে ব্যবহার করার। এছাড়া গত বছর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন থেকেও সংশয় জন্ম নিয়েছে, বিজেপির পাল্টা আঘাতের ভয়েই কি ভারতে ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়ানো কনটেন্ট নির্মূলের ক্ষেত্রে ফেসবুক 'সিলেকটিভ' পথে হাঁটছে?

ভুলে গেলে চলবে না, মোদি ও ফেসবুকের চেয়ারম্যান-সিইও মার্ক জাকারবার্গের মধ্যে কিন্তু বেশ ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে। ২০১৫ সালে ফেসবুক হেডকোয়ার্টারে তাদের আলিঙ্গনের দৃশ্য ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। 

ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে ভারতে ঘৃণা ছড়ানো পোস্ট ও ভুল তথ্য প্রসঙ্গে কোম্পানিটির বেশ কিছু আভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফেসবুকের নিজস্ব "রিকমেন্ডেড" ফিচার ও অ্যালগরিদমের মাধ্যমেই এসব কনটেন্ট আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে এসব প্রতিবেদনে কোম্পানির অনেক স্টাফের দুশ্চিন্তার চিত্রও উঠে এসেছে। কোম্পানিটি এসব ইস্যুকে সঠিকভাবে সামলানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় তাদের অনেকে বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। 

নথিগুলো জানাচ্ছে, ফেসবুক ভারতকে বিশ্বের "সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি" হিসেবে দেখত। তারা ঘৃণাবাচক কথাবার্তা ছড়ানোর জন্য হিন্দি ও বাংলা ভাষাকে অটোমেশনের "প্রায়োরিটি"-তেও রেখেছিল। কিন্তু তারপরও, ফেসবুকের কাছে যথেষ্ট সংখ্যক স্থানীয় ভাষার "মডারেটর" বা "কনটেন্ট ফ্ল্যাগিং" না থাকায়, বাস্তব জগতে সহিংসতা সৃষ্টিকারী ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে ফেসবুক উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারেনি। 

এ বছরই এপি-কে দেওয়া একটি বিবৃতিতে ফেসবুক বলেছে, "হিন্দু ও বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষার হেট স্পিচ শনাক্ত করার জন্য তারা প্রযুক্তি খাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে" যার ফলস্বরূপ "ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সামনে আসা হেট স্পিচের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে"। 

কোম্পানিটির একজন মুখপাত্র বলেন, "বিশ্বব্যাপী মুসলিমসহ অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হেট স্পিচের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। তাই আমরা আমাদের এনফোর্সমেন্টকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি অনলাইনে হেট স্পিচ বৃদ্ধি রোধে আমরা আমাদের নীতিমালা হালনাগাদ করার ব্যাপারেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।"

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এবং সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভুল তথ্য ছড়ানোর আশঙ্কা যখন সবচেয়ে বেশি ছিল, একজন ফেসবুক কর্মী বুঝতে চেয়েছিলেন যে ভারতের একজন নতুন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার নিউজফিডে কী দেখবে, যদি সে কেবলই প্ল্যাটফর্মটির নিজের রিকমেন্ড করা পেজ ও গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়। 

ওই কর্মী একটি পরীক্ষামূলক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন এবং তিন সপ্তাহ ধরে সেটিকে সক্রিয় রাখেন। ওই তিন সপ্তাহের মধ্যে ভারতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে প্রধান হলো কাশ্মীরে এক আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সৈন্যের মৃত্যু, যাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। 

ওই নির্দিষ্ট সময়ে ফেসবুকের সেই কর্মী তার অ্যাকাউন্ট থেকে দেখতে পান অনবরত বিভেদ সৃষ্টিকারী জাতীয়তাবাদী কনটেন্ট, ভুল তথ্য, সহিংস ও রক্তাক্ত সব পোস্ট। ফেসবুকের নিজস্ব রিকমেন্ডেশনের মাধ্যমেই এসব পোস্ট হাজির হতে থাকে ওই কর্মীর নিতান্তই নতুন অ্যাকাউন্টের নিউজ ফিডে, যা খুব স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালতে যথেষ্ট। 

যেমন একটি পোস্টে ওই ফেসবুক কর্মী দেখতে পান একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তির রক্তাক্ত মাথা জড়িয়ে ধরে আছে, এবং সেই মাথা আবার ঢাকা পাকিস্তানি পতাকা দিয়ে। এছাড়া "পপুলার অ্যাক্রস ফেসবুক" ফিচারের মাধ্যমে তিনি দেখতে পান সাক্ষ্য-প্রমাণহীন একাধিক কনটেন্ট, যেখানে দাবি করা হচ্ছে ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তানে আক্রমণ চালানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে তিনি লেখেন, "টেস্ট ইউজারের নিউজ ফিড অনুসরণ করে আমি গত তিন সপ্তাহে যে পরিমাণ মৃত মানুষের ছবি দেখিছি, তা আমার সারা জীবনে দেখা মৃত মানুষের ছবির চেয়েও বেশি।"

অথচ ওই একই সময়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ আসছিল যে ভারতীয় সৈন্য মৃত্যুর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ কাশ্মিরীদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

এ ধরনের পরীক্ষা প্রশ্নের জন্ম দেয় যে ফেসবুকে এসব কনটেন্টের ছড়াছড়ি বাস্তব দুনিয়ায় কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। 

ওই ফেসবুক কর্মী তার নোট শেষ করেন এভাবে, "একটি কোম্পানি হিসেবে আমাদের কি অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়া উচিত না যেন আমাদের রিকমেন্ডেড কনটেন্টের মাধ্যমে যেন কোথাও বড় কোনো ক্ষতি হয়ে না যায়?"

এই নোটটি ফেসবুকের অন্যান্য কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে যে প্রশ্নটি উত্থাপন করা হয়েছিল, তার কোনো সন্তোষজনক উত্তর না মিললেও, এর মাধ্যমে উন্মোচিত হয় যে প্ল্যাটফর্মটির নিজস্ব অ্যালগরিদম বা ডিফল্ট সেটিংসই ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে কতটা অবদান রাখছে। 

ওই কর্মী তার নোটে উল্লেখ করেন যে, ফেসবুকের সিস্টেমে স্পষ্টত কিছু "ব্লাইন্ড স্পট" ছিল, বিশেষত "লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ কনটেন্ট"-এর ক্ষেত্রে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তার এই পরীক্ষা ও প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ফেসবুকের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলাপচারিতার সৃষ্টি হবে, এবং খতিয়ে দেখা হবে যে একজন গড়পড়তা যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীর চেয়ে একজন গড়পড়তা ভারতীয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর জন্য নিউজ ফিডের অবস্থা কতটা ভিন্ন। 

যদিও ওই কর্মীর করা পরীক্ষা বা গবেষণার স্থায়িত্বকাল ছিল মাত্র তিন সপ্তাহ, যা সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যথেষ্ট নয়, তারপরও এর মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায় যে একটি "বড় ধরনের সংকটকালে" ফেসবুকের ভূমিকা কেমন হয়ে থাকে। 

ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, এই পরীক্ষামূলক গবেষণা ফেসবুকের রিকমেন্ডেশন সিস্টেম নিয়ে আরও গভীরতর ও বিস্তারিত বিশ্লেষণের অনুপ্রেরণা যোগায়। 

তিনি বলেন, "পৃথকভাবে ঘৃণা ছড়ানো কনটেন্ট নির্মূলের ক্ষেত্রে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, এবং আমরা আমাদের ঘৃণা শনাক্তকারী সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছি। সেখানে চারটি ভারতীয় ভাষাকেও নিয়ে এসেছি।"

এছাড়া ফাঁস হওয়া অন্যান্য গবেষণার নথি থেকেও দেখা যায়, ভারতে প্ল্যাটফর্মটির প্রভাব কতটা সাংঘাতিক হয়ে উঠেছে। 

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে, অর্থাৎ "টেস্ট ইউজার এক্সপেরিমেন্ট"-এর এক মাস আগেও অন্য একটি মূল্যায়ন ভুল তথ্য ছড়ানো কনটেন্টের ব্যাপারে একই ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। 

ফেসবুক কর্মীদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া একটি প্রেজেন্টেশনে বলা হয়েছিল, ফেসবুকের "মিসইনফরমেশন ট্যাগগুলো" ব্যবহারকারীদের জন্য যথেষ্ট পরিষ্কার নয়, তাই ঘৃণা ও ভুল তথ্য ছড়ানো কনটেন্ট প্রতিরোধের জন্য ফেসবুকের অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। 

এই প্রেজেন্টেশনেও আবারও উল্লেখ করা হয় যে প্ল্যাটফর্মটির কাছে যথেষ্ট সংখ্যক স্থানীয় ভাষার ফ্যাক্ট চেকার নেই, যে কারণে প্রচুর কনটেন্টই ভেরিফিকেশনের হাত থেকে বেঁচে যায়। 

ভুল তথ্য ছড়ানোর পাশাপাশি ফাঁস হওয়া নথিগুলো থেকে ভারতে ফেসবুকের আরেকটি সমস্যার চিত্রও প্রকট হয়ে ওঠে। সেটি হলো : কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর চালানো মুসলিমবিরোধী প্রোপাগান্ডা।

ভারত হলো ফেসবুকের সবচেয়ে বড় বাজার। এখানে রয়েছে ৩৪ কোটির বেশি ব্যবহারকারী। এছাড়াও প্রায় ৪০ কোটি ভারতীয় কোম্পানিটির মেসেজিং সার্ভিস হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে থাকে। দুটি প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এসেছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর। 

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন মোদির দলের একজন রাজনীতিবিদ প্ল্যাটফর্মটিতে একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে তাকে বলতে দেখা যায় যে দিল্লির রাস্তা থেকে পুলিশ যদি মুসলিম বিক্ষোভকারীদের সরাতে না পারে, তাহলে তার সমর্থকরাই যেন সেই কাজটি করে দেয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লির রাস্তায় চরম সহিংসতা শুরু হয়, যার ফলে ৫৩ জন মারা যায়। নিহতদের মধ্যে সিংহভাগই ছিল মুসলিম। ফেসবুক শেষ পর্যন্ত ভিডিওটি তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলেছ বটে, কিন্তু তার আগেই ভিডিওটি পেয়ে যায় হাজারো ভিউ ও শেয়ার। 

এপ্রিল মাসে মুসলিমদের উদ্দেশ্য করে ভুয়া তথ্য আবারও প্ল্যাটফর্মটিতে ভাইরাল হয়। নিউজ ফিড ভেসে যেতে থাকে "করোনাজিহাদ" হ্যাশট্যাগে, যার মাধ্যেম মুসলিম সম্প্রদায়কে দায়ী করা হয় কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য। বেশ কয়েকদিন হ্যাশট্যাগটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকার পরই কেবল টনক নড়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের; তারা সরিয়ে ফেলে হ্যাশট্যাগটি। 

দিল্লির ৫৪ বছর বয়সী মুসলিম হুজুর মোহাম্মদ আব্বাস ওইসব হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে করা পোস্ট দেখে বিপদের আঁচ পান। 

কিছু কিছু ভিডিও ক্লিপ ও পোস্টে দেখা যায়, মুসলিমরা কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালের স্টাফদের গায়ে থুতু মারছে। পরবর্তীতে অবশ্য প্রমাণিত হয় যে ওগুলো ছিল "ফেক ভিডিও", কিন্তু তার আগেই সেগুলো সক্ষম হয় নতুন করে দেশটিতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে। 

এসব ভুয়া তথ্যের কারণে সহিংসতার নতুন ঢেউ ওঠে, এবং মুসলিমদের ব্যবসা বয়কট করে তাদের উপর মুহুর্মুহু গালিবর্ষণ চলতে থাকে। 

আব্বাস সহ ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে বন্দি থাকে। এমনকি অনেককে জেলেও পাঠানো হয়। কেবল আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরই তারা ছাড়া পায়। 

"মানুষজন তখন ফেসবুকে ফেক ভিডিও শেয়ার দিতে থাকে, যেখানে দাবি করা হয় ভাইরাস বিস্তারের পেছনে মুসলিমরাই দায়ী। ফেসবুকে নিছকই মিথ্যা গুজব হিসেবে যেটির সূচনা হয়েছিল, পরবর্তীতে সেটিই লাখ লাখ মানুষের কাছে সত্যে পরিণত হয়," বলেন আব্বাস। 

এসব স্পর্শকাতর ইস্যু সামলানোর ক্ষেত্রে ফেসবুকের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা আরও জোরদার হয়, যখন দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়, কীভাবে মোদির দলের একজন কট্টরপন্থী হিন্দু নেতাকে "বিপদজনক ব্যক্তি" শ্রেণিতে ফেলা যায় কি না, সে ব্যাপারে ফেসবুকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ওই নেতা তার অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কিছু মুসলিমবিরোধী পোস্ট দিয়েছিলেন। যদি তাকে সত্যি সত্যিই "বিপদজনক ব্যক্তি" শ্রেণিতে ফেলা হতো, তাহলে তাকে প্ল্যাটফর্মটি থেকে নিষিদ্ধও করতে হতো। 

ফাঁস হওয়া নথিগুলো থেকে জানা যায়, সিদ্ধান্তটি গ্রহণে ফেসবুকের শীর্ষস্থানীয় নেতারা কেমন ইতস্তত ও গড়িমসি করেছিলেন। এতে করে ফেসবুকের কয়েকজন কর্মী ক্ষেপে যান। তাদের মধ্যে একজন লেখেন, ফেসবুক কেবল অহিন্দু কট্টরপন্থী সংস্থাগুলোকেই "বিপদজনক" হিসেবে আখ্যা দিতে প্রস্তুত আছে। 

এছাড়া ফাঁস হওয়া নথিগুলো থেকে আরও জানা যায় যে কোম্পানিটির দক্ষিণ এশিয়ার পলিসি প্রধান নিজেই তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এমন কিছু পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেগুলোকে অনেকেই চিহ্নিত করেছে "ইসলামোফোবিক" হিসেবে। এমনকি পূর্বের ঘটনায়ও তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে মোদির দলের ওই রাজনীতিবিদকে "বিপদজনক" শ্রেণিতে ফেলা যাবে না, কেননা এতে করে ভারতে ফেসবুকের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে। 

এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে আরেকটি আভ্যন্তরীণ নথিতে একজন রাজনৈতিক অভিনেতাদের ব্যাপারে ফেসবুকের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে লেখেন, "ফেসবুক নিয়মিতই কনটেন্ট পলিসি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমতাবান অভিনেতাদের ছাড় দিয়ে থাকে।"

ওই নথিতে ফেসবুকের একজন সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে আরও উল্লেখ করা হয় যে, "যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে স্থানীয় পলিসি প্রধানদের সাধারণত ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল থেকে নেওয়া হয়, এবং এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু জাতি বা ধর্মীয় গোষ্ঠীর কথা খুব কমই চিন্তা করা হয়। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই সিদ্ধান্ত-গ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষমতাবাদনের প্রতি পক্ষপাত দেখা যায়।"

মাস কয়েক পর ওই বিতর্কিত পলিসি প্রধান ফেসবুক ছাড়েন। ফেসবুক থেকে ওই রাজনীতিবিদকেও নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু তারপরও ফেসবুকের অনেক কর্মীই মনে করে, পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে ফেসবুকের অনেক গলদ ছিল, কেননা তারা ভারতীয় সরকারের সঙ্গে বিবাদে না জড়ানোর লক্ষ্যে পক্ষপাতিত্ব করেছে।

"ভারতীয় পলিসি নেতৃত্বে থাকা ওই নারী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা দেখে আমাদের বেশ কয়েকজন মুসলিম সহকর্মী খুবই বিরক্ত হয়েছেন/আঘাত পেয়েছেন," একজন ফেসবুক কর্মী লেখেন। 

এছাড়া ফেসবুকের আরেক কর্মী লেখেন, জেনেবুঝেই নেটওয়ার্কটিতে বর্বরতাকে ডানা মেলতে সাহায্য করা হচ্ছে। 

ফাঁস হওয়া নথিগুলোও বলছে, এগুলো ফেসবুকের এমন একটি সমস্যা, যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। 

এই বছরের মার্চ মাসেও, ফেসবুকের কর্মীদের মাঝে তর্ক-বিতর্ক চলছিল যে তাদের পক্ষে মোদির সংশ্লিষ্টতা থাকা কট্টর ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের "ভয় বিক্রি করা, মুসলিমবিরোধী ন্যারেটিভ"-কে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কি না। 

"লোটাস মহল" শীর্ষক একটি নথিতে কোম্পানিটি উল্লেখ করেছে, বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ থাকা অনেক সদস্য মুসলিমবিরোধী কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলছে। সেসব কনটেন্টের মধ্যে রয়েছে "ভারত থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে উৎখাতের আহ্বান" থেকে শুরু করে "লাভ জিহাদ"-এর মতো অপ্রমাণিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। 

গবেষণায় উঠে এসেছে, ফেসবুক কখনোই এ জাতীয় কনটেন্টকে "ফ্ল্যাগড" করেনি বা এগুলোর বিরুদ্ধে "অ্যাকশন" নেয়নি, কেননা তাদের হিন্দি ও বাংলা ভাষায় "ক্লাসিফায়ার" ও "মডারেটর"-এর অভাব রয়েছে। 

অবশ্য ফেসবুক দাবি করছে, তারা ২০১৮ সাল থেকে হিন্দুতে এবং ২০২০ সাল থেকে বাংলায় "হেট স্পিচ ক্লাসিফায়ার" চালু করেছে। 

ফেসবুক কর্মীরা আরও লিখেছেন, "রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কথা মাথায় রেখে ফেসবুক এখনও কট্টর হিন্দুপন্থী গোষ্ঠীর জন্য কোনো ধরনের উপাধির মনোনয়ন দেয়নি।"

কোম্পানিটির দাবি, তারা ধর্ম, আদর্শ কিংবা আঞ্চলিকতা ভেদে পক্ষপাত না করে, নিরপেক্ষভাবে সহিংসতা ও ঘৃণার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে। কিন্তু হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে তারা কী ধরনের ব্যবস্থা নেয় বা তাদের "বিপদজনক" শ্রেণিতে ফেলেছে কি না, তা প্রকাশ করেনি। 

সূত্র: এনপিআর

Related Topics

টপ নিউজ

ফেসবুক / ভারত / হিন্দু-মুসলিম বিরোধ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আনার সুবিধা বছরে একবারে সীমিত করার পরিকল্পনা সরকারের
  • বিলাসবহুল বিমানটি বিক্রির কোনো উপায় পাচ্ছিল না কাতার, তখনই নজরে আসে ট্রাম্পের
  • 'মিস-কনসেপশন দূর হয়েছে': এনবিআর-এর বিভক্তি বজায় রাখার কথা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা
  • মাঙ্গায় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস, আতঙ্কে জাপান ভ্রমণ বাতিল করছেন পর্যটকরা
  • প্রাকৃতিক ঢাল: মৌচাক কীভাবে বাংলাদেশে হাতির সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্বের সমাধান দিতে পারে
  • আইয়ুব খানের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ফিল্ড মার্শাল পদমর্যাদা পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

Related News

  • স্থলবন্দর নিয়ে ‘প্রতিশোধমূলক’ পাল্টা পদক্ষেপ নয়, ভারতকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে: বাণিজ্য সচিব
  • ভারতের নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘমেয়াদে আত্মনির্ভরশীলতার সুযোগ: আসিফ মাহমুদ
  • বিতর্কিত জাত গণনা কেন ভারতের আদমশুমারিতে ফিরছে আবার?
  • জয়শঙ্করকে প্রশ্ন রাহুলের, পাকিস্তানকে অপারেশন সিন্দুরের কথা আগেই জানিয়ে আমরা বিমান হারিয়েছি?
  • পাকিস্তানকে চাপে রাখতে এবার এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়াল ভারত

Most Read

1
বাংলাদেশ

ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আনার সুবিধা বছরে একবারে সীমিত করার পরিকল্পনা সরকারের

2
আন্তর্জাতিক

বিলাসবহুল বিমানটি বিক্রির কোনো উপায় পাচ্ছিল না কাতার, তখনই নজরে আসে ট্রাম্পের

3
বাংলাদেশ

'মিস-কনসেপশন দূর হয়েছে': এনবিআর-এর বিভক্তি বজায় রাখার কথা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

4
আন্তর্জাতিক

মাঙ্গায় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস, আতঙ্কে জাপান ভ্রমণ বাতিল করছেন পর্যটকরা

5
বাংলাদেশ

প্রাকৃতিক ঢাল: মৌচাক কীভাবে বাংলাদেশে হাতির সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্বের সমাধান দিতে পারে

6
আন্তর্জাতিক

আইয়ুব খানের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ফিল্ড মার্শাল পদমর্যাদা পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net