ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আনার সুবিধা বছরে একবারে সীমিত করার পরিকল্পনা সরকারের

স্বর্ণ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাগেজ রুলসে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বাজেটে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, কোনো যাত্রী বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনতে পারবেন না।
বর্তমানে ঘোষণা দিয়ে একজন যাত্রী বছরে যতবার ইচ্ছা ১১৭ গ্রাম বা ১০ ভরি স্বর্ণ আনতে পারেন এবং এতে ৪০ হাজার টাকা কর দিতে হয়।
এই বিধানে পরিবর্তন এনে বছরে কেবল একবার এই সুবিধা নিতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (১৯ মে) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনবিআরের কর্মকর্তারা এ প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা নীতিগত অনুমোদন পায় বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা।
এছাড়া, ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার, এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য কিছু কর-সুবিধার বিষয়েও আলোচনায় অনুমোদন পাওয়া গেছে।
এদিকে বাণিজ্যিকভাবে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি থাকলেও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নেতারা বলছেন, আমদানির তুলনায় ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আনা তুলনামূলক সস্তা। তাই অনেকে আমদানির বদলে যাত্রীদের মাধ্যমে ব্যাগেজ রুলস ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এমনকি অনেক চোরাচালানকারীও এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের এক উপকমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "একজন যাত্রী মাসে একাধিকবার বিদেশ গিয়ে এই নিয়মে স্বর্ণ নিয়ে আসছেন। আইনে কোনো বাধা না থাকায় আমরা তাদের থামাতে পারছি না।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা এবারের বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছি, যেন বছরে একবারের বেশি এই সুবিধা নেওয়া না যায়। এতে ফরমাল চ্যানেলে স্বর্ণ আমদানি বাড়বে এবং সাপ্লাই চেইনের হিসাব রাখা সহজ হবে।"
২০১৮ সালে দেশে বাণিজ্যিকভাবে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ওই বছর থেকে চার বছরে দেশে এসেছে মাত্র ১৪৫ কেজি স্বর্ণ। সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে স্বর্ণের যে বার্ষিক চাহিদা রয়েছে, তার এক শতাংশও বাণিজ্যিকভাবে আমদানি হয়নি।
তবে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় প্রতিদিন শত কেজির বেশি স্বর্ণ দেশে প্রবেশ করছে, যা আইনি হলেও আমদানির হিসাব ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকছে।
উল্লেখ্য, ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন নারী যাত্রী ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার বিনা শুল্কে আনতে পারেন।