বিতর্কিত জাত গণনা কেন ভারতের আদমশুমারিতে ফিরছে আবার?

ভারতে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে এখনও প্রভাব বিস্তার করে বহু প্রাচীন একটি কাঠামো—জাত প্রথা। এই ব্যবস্থা শুধু সমাজজীবন নয়, বন্ধুত্ব, বৈবাহিক সম্পর্ক, চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বড় ধরনের প্রভাব রাখে।
ভারত সরকার বহুদিন ধরেই বলে এসেছে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশে এমন সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের কোনো জায়গা নেই। ১৯৫০ সালেই দেশটির সংবিধানে জাতভিত্তিক বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সর্বশেষ জাত গণনা করা হয়েছিল ব্রিটিশ ওপনিবেশিক শাসনের সময়। তাই সম্প্রতি যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ঘোষণা করল যে, আসন্ন জাতীয় আদমশুমারিতে ১৯৩১ সালের পর প্রথমবারের মতো জাত গণনা করা হবে তখন অনেকেই বিস্মিত হন।
সরকার এপ্রিল মাসে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জাত গণনার মাধ্যমে 'আমাদের সামাজিক কাঠামো যেন রাজনৈতিক চাপে ভেঙে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা হবে।' এতে আরও বলা হয়, 'এটি সমাজকে আর্থিক ও সামাজিকভাবে আরও মজবুত করবে এবং দেশের অগ্রযাত্রা বাধা ছাড়াই এগিয়ে যাবে।'
তবে ঘোষণায় এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি—কীভাবে জাতসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে, বা কবে এই আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়েও কিছু বলা হয়নি। (মূলত, ২০২১ সালে এই আদমশুমারি হওয়ার কথা থাকলেও তা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।)
তবে এই ঘোষণার পর একটি পুরনো বিতর্ক আবারও জোরালো হয়ে উঠেছে: জাত গণনা কি পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতায়ন ঘটাবে, নাকি সমাজে বিভাজন আরও গভীর করে দেবে?

এই প্রস্তাবটি এতটাই বিতর্কিত, কারণ একটি জাত গণনা সরকারকে বাধ্য করে 'অস্বস্তিকর ও রাজনৈতিকভাবে অপ্রিয়' কাঠামোগত বৈষম্যের মুখোমুখি হতে—বলেছেন পপুলেশন ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক পুনম মুত্ত্রেজা।
তিনি আরও বলেন, গত একশ বছর ধরে জাতভিত্তিক কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য না থাকায় 'আমরা কার্যত অন্ধের মতো নীতিমালা তৈরি করছি—অন্ধকারে হাঁটছি, অথচ বলছি সামাজিক ন্যায়ের পথে চলছি।' তাই, তার মতে, আসন্ন এই জনগণনা হতে যাচ্ছে 'একটি ঐতিহাসিক ঘটনা'।
জাত প্রথা কী?
ভারতের জাত প্রথা এসেছে মূলত হিন্দু ধর্মগ্রন্থ থেকে, যা বহু শতাব্দী ধরে মানুষকে এক সামাজিক স্তরবিন্যাসে ভাগ করে রেখেছে। এর ভিত্তিতে নির্ধারিত হতো কার কী পেশা হবে, কোথায় তারা বাস করতে পারবে এবং কার সঙ্গে তাদের বিয়ে হতে পারে। সময়ের সঙ্গে এই বিভাজন শুধু হিন্দুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; মুসলিম, খ্রিস্টান, জৈন ও বৌদ্ধদের মধ্যেও জাতপরিচয়ের প্রভাব দেখা যায়।
ভারতে কয়েকটি প্রধান জাত রয়েছে এবং তার অধীনে রয়েছে হাজার হাজার উপ-জাত। সর্বোচ্চ স্তরে আছেন ব্রাহ্মণরা, যারা ঐতিহ্যগতভাবে পুরোহিত বা পণ্ডিত হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে নিচু স্তরে রয়েছেন দলিতরা—পূর্বে যাদের 'অস্পৃশ্য' বলা হতো—যাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা ময়লা পরিষ্কার করার মতো কাজ করতে বাধ্য করা হতো।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই নিচু জাতের মানুষ—বিশেষ করে দলিত ও প্রান্তিক আদিবাসী জনগোষ্ঠী—কে 'অশুচি' হিসেবে দেখা হতো। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের উচ্চবর্ণের মানুষের বাড়ি বা মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল, এমনকি একসঙ্গে খাবার খাওয়ার সময় আলাদা বাসন ব্যবহার করতে বাধ্য করা হতো।
ভারত ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এই জাতভিত্তিক বিভাজন মুছে ফেলতে চেষ্টা করে। নতুন সংবিধানে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়—নির্দিষ্ট জাত বিভাগ তৈরি করা হয় যাতে প্রান্তিক জাতের মানুষদের জন্য সংরক্ষণ ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায়। পরবর্তীতে সরকারী চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ আসন এসব জাতের জন্য সংরক্ষিত করা হয়। সেই সঙ্গে 'অস্পৃশ্যতা' বাতিল করে জাতভিত্তিক বৈষম্যকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়।
আদমশুমারিতে জাত গণনা বন্ধ করার সিদ্ধান্তও ছিল এই বৈষম্য দূর করার প্রচেষ্টারই একটি অংশ।
পুনম মুত্ত্রেজা বলেন, 'স্বাধীনতার পর ভারতীয় রাষ্ট্র সচেতনভাবেই আদমশুমারিতে জাত গণনা থেকে সরে এসেছিল। তাদের ধারণা ছিল, জাতকে গুরুত্ব না দিলেই তা ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারাবে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জাতভিত্তিক বৈষম্য আপনাআপনি দূর হয়ে যাবে।'
কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। সময়ের সঙ্গে জাত বিভাজনের প্রাচীর কিছুটা দুর্বল হলেও—বিশেষ করে শহরাঞ্চলে—বিভিন্ন গবেষণা বলছে, এখনও বিভিন্ন জাতের মধ্যে সম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় বড় ধরনের পার্থক্য রয়ে গেছে। মুত্ত্রেজা জানান, পিছিয়ে পড়া জাতগুলোর মধ্যে এখনও অশিক্ষা, অপুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি অনেক বেশি। মাতৃস্বাস্থ্য ও প্রজননস্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রেও তারা কম সুবিধা পান।

এছাড়া সামাজিক বৈষম্যও এখনও প্রবল। ইন্ডিয়া হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সার্ভে অনুসারে, ভারতে মাত্র ৫ শতাংশ বিয়ে আন্তঃজাত বিয়ে—অর্থাৎ ভিন্ন জাতের মধ্যে হয়। একই ধরনের বিভাজন দেখা যায় বন্ধুত্ব, কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য সামাজিক পরিসরেও।
এই বৈষম্যই জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি জোরালো করেছে। অনেকেই মনে করছেন, জাত-সম্পর্কিত তথ্য জানা গেলে কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে আরও বেশি সাহায্য পাওয়া যাবে, এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সম্পদ বণ্টন আরও সুবিচারমূলকভাবে করা যাবে।
এরইমধ্যে বিহারসহ ভারতের কিছু রাজ্য, বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র অঞ্চলগুলো, নিজেরাই জাতসংক্রান্ত জরিপ চালিয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় সরকার—বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি—জাত গণনার পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে।
এখন দেখা যাচ্ছে, সরকার সেই দিকেই এগোচ্ছে।
কেন এখন?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বরাবরই জনগণকে ঐতিহ্যগত জাত পরিচয়ে ভাগ করার প্রবণতার বিরোধিতা করে এসেছেন। তিনি আগেও বলেছিলেন, ভারতের চারটি 'সবচেয়ে বড় জাত' হচ্ছে দরিদ্র, যুবক, নারী ও কৃষক—এদের উন্নয়ন ঘটালেই দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি সম্ভব।
তবে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে পিছিয়ে পড়া জাতিগুলোর মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরোধী দলগুলোর পক্ষে জনসমর্থন বাড়িয়ে তোলে। এই নির্বাচনে মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেও, তাঁর দল বিজেপি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়—ফলে রাজনৈতিক ক্ষমতাও কিছুটা খর্ব হয়।
এমন পরিস্থিতিতে জাতভিত্তিক আদমশুমারির সিদ্ধান্ত মোদির 'নীতি বদল' বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, এটি আসন্ন কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সমর্থন ধরে রাখার কৌশল, বিশেষ করে বিহারে—যেখানে জাত প্রশ্নটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এবং বরাবরের মোদি-বিরোধী নেতা এম. কে. স্টালিন এক্স (প্রাক্তন টুইটার)–এ লিখেছেন, 'এই সময়ে হঠাৎ জাত গণনার সিদ্ধান্ত কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। এতে রাজনৈতিক সুবিধাবাদের গন্ধ স্পষ্ট।'
২০২৩ সালে বিহার রাজ্যে পরিচালিত নিজস্ব এক জাত জরিপে দেখা যায়, প্রান্তিক জাতির মানুষের সংখ্যা পূর্বানুমানের চেয়ে অনেক বেশি। এরপর থেকেই কোটা বাড়ানোর দাবিতে সেখানে আইনি লড়াই চলছে।
ভারতের একাধিক রাজ্য ইতিমধ্যেই নিজেরা জাতভিত্তিক জরিপ চালিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব জরিপ ছিল 'স্বচ্ছতা ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন' এবং 'কিছু জরিপ ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত', যা সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।
সরকারের জাতগণনার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। তারা দাবি করছে, মোদি তাদের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে বিজেপি নেতারা বলছেন, কংগ্রেস নিজের ক্ষমতায় থাকাকালে কখনও জাতগণনার উদ্যোগ নেয়নি, আর এখন তারাই রাজনৈতিক স্বার্থে বিষয়টিকে কাজে লাগাতে চাইছে।
তবে উল্লেখযোগ্যভাবে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকার ২০১১ সালে জাতভিত্তিক এক জাতীয় জরিপ করেছিল। তবে সেই জরিপের সম্পূর্ণ ফলাফল কখনও প্রকাশ পায়নি। আংশিক যে তথ্য সামনে এসেছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল—তথ্যে অসংগতি ছিল এবং জরিপ পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা হয়। তাছাড়া, এই জরিপটি ২০১১ সালের জাতীয় আদমশুমারি থেকে আলাদা ছিল, ফলে দুই জরিপের তথ্য পরস্পর তুলনাযোগ্য নয়।
কবে নতুন জাতগণনা হবে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমেরিটা ও জনসংখ্যাবিদ সোনালদে দেশাই বলছেন, সরকারের হাতে এখনো যথেষ্ট সময় আছে যাতে সঠিক পদ্ধতি তৈরি করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করা যায়।
তবে এই জরিপ শেষ হওয়ার পর সামনে আসবে আরেকটি বড় প্রশ্ন: এই তথ্য কীভাবে নীতি নির্ধারণে ব্যবহার করা হবে?
বিতর্কিত প্রস্তাব
তবে জাতভিত্তিক আদমশুমারির এই প্রস্তাবকে সবাই স্বাগত জানাচ্ছেন না।
সমালোচকদের মতে, ভারতে জাতিগত পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করা উচিত, সেখানে সরকার তা আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিচ্ছে। অনেকের বিশ্বাস, জাতভিত্তিক কোটা বা অগ্রাধিকারমূলক নীতির পরিবর্তে অর্থনৈতিক শ্রেণিভিত্তিক নীতি গ্রহণ করাই হবে সঠিক পদক্ষেপ।
ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ অ্যাপ্লায়েড ইকোনমিক রিসার্চে প্রয়োগিক অর্থনৈতিক গবেষণার অধ্যাপক সোনালদে দেশাই জাতগণনার পক্ষে বলেন, বিরোধীরা হয়তো মনে করেন এমন জরিপ দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবে, কারণ এটি মানুষকে জাতের গণ্ডিতে আটকে রাখে, যেখানে জাতের ঊর্ধ্বে উঠে সমানাধিকার নিশ্চিত করাই হওয়া উচিত একটি আধুনিক সমাজের লক্ষ্য।
এখানে আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো: যদি এই জাতগণনায় দেখা যায়, প্রান্তিক জাতির সংখ্যা পূর্বানুমানের চেয়েও বেশি—যেমনটা বিহারের জরিপে দেখা গিয়েছিল—তাহলে সরকার তাদের জন্য আরও বেশি কোটা বরাদ্দ করতে পারে। এতে করে ঐতিহ্যগতভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত কিছু জাতি ক্ষুব্ধ হতে পারে, যারা কোটা ব্যবস্থার বিরোধিতা করে আসছে।
বছরের পর বছর ধরে ভারতে কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়েছে, যার কিছু সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এসব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা সরকারকে 'উল্টো বৈষম্যের' অভিযোগে দোষারোপ করেছেন—যেমনটা আমেরিকায় বর্ণভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির নীতিকে ঘিরেও হয়েছে।
পুনম মিত্রেজা মনে করেন, এই শ্রেণির মানুষরাই জাতগণনার বিরোধিতা করবে।
এরই মধ্যে কিছু বিরোধীদলীয় নেতা ৫০ শতাংশ কোটা সীমা তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বেসরকারি খাত ও বিচার বিভাগেও কোটা চালুর দাবি তুলেছেন—যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

তবে জাতগণনার সমর্থকরা বলছেন, এটি বহু আগেই হওয়া উচিত ছিল। মিত্রেজা ও দেশাই দুজনেই সিএনএনকে বলেন, এই জরিপ জাতীয় বিভাজন আরও গভীর করবে—এমনটি তারা মনে করেন না। তাদের মতে, জাতিগত বৈষম্য ভারতীয় সমাজে এতটাই প্রকট ও বাস্তব যে, এই তথ্য সংগ্রহ শুধু বিদ্যমান বাস্তবতাকে তুলে ধরবে, নতুন কোনো ক্ষতি করবে না।
দেশাই বলেন, এটি দেখাতে পারে গত একশ বছরে ক্ষমতা ও সুবিধার ভারসাম্য কীভাবে বদলেছে। ১৯৩১ সালের আদমশুমারির পর থেকে, কিছু প্রান্তিক জাতি হয়তো অগ্রাধিকারমূলক নীতি ও অন্যান্য উদ্যোগের মাধ্যমে উন্নতি করেছে, আবার যেসব জাতি আগে সুবিধাপ্রাপ্ত ছিল, আজ তারা আর তেমন অবস্থানে নেই।
এই কারণেই তিনি মনে করেন, ভারতের সরকার এই তথ্য ব্যবহার করে একটি 'পুনঃশ্রেণীবিভাজন' করবে — অর্থাৎ, কোন জাতি কোন বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হবে, তা নতুন করে নির্ধারণ করবে যাতে যথাযথভাবে সুবিধা ও সম্পদ বরাদ্দ করা যায়।
মুত্ত্রেজা বলেন, এই জনগণনা স্পষ্ট করে দেবে কার কী ধরনের সাহায্য দরকার আর কীভাবে তা সবচেয়ে ভালোভাবে পৌঁছানো যাবে। পুরোনো তথ্যের ওপর ভরসা না করে, তারা দেখাতে পারবে গ্রামীণ এলাকার একজন মেয়ের সমস্যার মাত্রা, শহরের একজন ছেলের তুলনায় কতটা বেশি, কিংবা কোন জাতির মানুষ বেড়ে গেছে, তাই বেশি তহবিল দরকার।
তিনি বলেন, 'এটি স্কুলের জন্য টাকা বরাদ্দ, স্বাস্থ্যসেবা, চাকরির সুযোগ তৈরিতে অনেক সাহায্য করবে। এতে নিশ্চিত হবে যে সুবিধা সত্যিই দরকারি জাতির জন্য যাচ্ছে।'
মুত্ত্রেজার মতে, যখন এই তথ্য সামনে আসবে, সরকার কাজ করতে বাধ্য হবে। যারা এখনও জাতি বৈষম্য নেই বলে বিশ্বাস করে বা অগ্রাধিকার দরকার নেই বলে মনে করে, তাদের জন্য তিনি বলেন, 'এই তথ্য তাদের চোখের সামনে থাকবে।'