মিজোরামে 'বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের' বাস্তুচ্যুতদের বায়োমেট্রিক তথ্য রেকর্ড করবে ভারত

মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার ও বাংলাদেশের বাস্তুচ্যুতদের বায়োমেট্রিক ও জনসংখ্যাগত তথ্য নথিভুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আগামী জুলাইয়ের শেষ নাগাদ এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে শনিবার (১৯ জুলাই) এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় রাজ্যজুড়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের জন্য অনলাইনে 'ফরেনার্স আইডেন্টিফিকেশন পোর্টাল'-এর মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন হবে। তবে, ইন্টারনেট সংযোগহীন প্রত্যন্ত এলাকায় বিকল্পভাবে অফলাইনেও তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) লুংলেইয়ে 'ফরেনার্স আইডেন্টিফিকেশন পোর্টাল অ্যান্ড বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট'-বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। লুংলেই জেলা পর্যায়ের মিয়ানমার ও বাংলাদেশ শরণার্থী সংক্রান্ত কমিটি এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুতদের সঠিকভাবে শনাক্ত ও নিবন্ধনের জন্য কর্মকর্তাদের সচেতন ও দক্ষ করে তুলতেই এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
লুংলেইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কি. বেইহমোতোসা জানান, বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য ইতোমধ্যে ১০টি দল গঠন করা হয়েছে এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির আবেদন জানানো হয়েছে।
প্রথম দফায় লুংলেই জেলার রামথার শিবির থেকে নিবন্ধন শুরু হবে এবং পরবর্তীতে আরও আটটি শিবিরে এ কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানানো হয়।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ২৭ জন দল সদস্যকে মাস্টার ট্রেইনাররা ব্যবহারিক ও অংশগ্রহণমূলক সেশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেন। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও একই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে মিজোরামের ১১ জেলায় ৩২ হাজারের বেশি মিয়ানমার নাগরিক অবস্থান করছেন। তবে এই সংখ্যা প্রতিদিনই পরিবর্তন হচ্ছে, কারণ অনেকেই মাঝে মাঝে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে আবার মিজোরামে প্রবেশ করেন।
এছাড়া, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আসা ২ হাজার ৩৭১ জন এবং মণিপুরের জাতিগত সহিংসতায় বাস্তুচ্যুত ৭ হাজারের বেশি জো জনগোষ্ঠীর মানুষও মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির চিন রাজ্য থেকে বহু মানুষ মিজোরামে পালিয়ে আসেন। আর ২০২২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু হলে সেখান থেকেও অনেকে আশ্রয়ের জন্য মিজোরামে প্রবেশ করেন।
মিজোদের সঙ্গে মিয়ানমারের চিন, বাংলাদেশের বম এবং মণিপুরের কুকি-জো জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও জাতিগত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, যা এই আশ্রয়প্রাপ্তদের প্রতি স্থানীয়দের সহানুভূতির একটি বড় কারণ বলেও মনে করা হয়।