স্থলবন্দর নিয়ে ‘প্রতিশোধমূলক’ পাল্টা পদক্ষেপ নয়, ভারতকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে: বাণিজ্য সচিব

ভারতে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, সমস্যার সমাধানে আলোচনা এবং সচিব পর্যায়ে বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সচিব পর্যায়ে বাংলাদেশের একটি ফোরাম রয়েছে। ইতোমধ্যে ওই ফোরামে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে গত সপ্তাহে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। 'সেই চিঠির জবাব এলে আমরা জানতে পারব, কবে বসা যায়।'
মঙ্গলবার (২০ মে) সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা কোনো ধরনের রিটালিয়েটরি [প্রতিশোধমূলক] কর্মসূচি নেব না। তারা [ভারত] এটা করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে এনগেইজ [আলোচনা] করব।'
সচিব জানান, স্থলবন্দর হয়ে পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণে অংশীজনদের নিয়ে আজকের এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
মাহবুবুর রহমান বলেন, 'এতে শুধু আমাদের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কাজেই আসুন আমরা বসি, একটা সুরাহার পথ বের করি।'
তিনি আরও বলেন, 'আজকে আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি, তাদের মতামত নিয়েছি। পরিস্থিতির যাতে আর অবনতি না ঘটে, সেজন্য আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে।'
বৈঠকে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ মে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, 'বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের তৈরি পোশাক কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে না। এগুলো কেবল মুম্বাইয়ের নাভা শেভা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে।'
ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ সুতা আমদানি বন্ধ করার এক মাসের মাথায় বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক পণ্য, ফলমূলসহ অন্তত সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি।
এসব পণ্যের মধ্যে আরও রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কোমল পানীয়, সুতা, প্লাস্টিক ও পিভিসি সামগ্রী, কাঠের তৈরি ফার্নিচার ইত্যাদি।
ভারত এখন কেবল কলকাতা ও মুম্বাই সমুদ্রবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি করার সুযোগ দিচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে কোনো ধরনের আমদানি আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের কোনো স্থল কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশন বা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে করা যাবে না।