Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 17, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 17, 2025
নারী কেন নারীবিদ্বেষী হন?

মতামত

শাহানা হুদা রঞ্জনা
25 April, 2025, 06:40 pm
Last modified: 25 April, 2025, 06:43 pm

Related News

  • এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না: একই আসনে নারী ও পুরুষ এমপি নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার
  • নারীর অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টার ঘোষণাকে এমজেএফ-এর স্বাগত
  • নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা: যা ছিল ঘোষণাপত্রে
  • কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে নিহত ২
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচি; দেখুন ভিডিও

নারী কেন নারীবিদ্বেষী হন?

পোশাক বা আচরণ দেখে মুহূর্তে কোনো মেয়েকে ‘ভালো মেয়ে বা মন্দ মেয়ে’ হিসেবে বিচার করার এবং ‘মন্দ মেয়ে’ বলে মনে হলে তাদের ওপর আক্রমণের মানসিকতা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ নারীর ওপর এ আক্রমণ করাটাকে মানুষ যৌক্তিক বলে মনে করছেন।
শাহানা হুদা রঞ্জনা
25 April, 2025, 06:40 pm
Last modified: 25 April, 2025, 06:43 pm
শাহানা হুদা রঞ্জনা। স্কেচ: টিবিএস

আমরা অনেকেই ভাবি, নারীর প্রতি পুরুষের বিদ্বেষ থাকতে পারে, কিন্তু নারীর প্রতি নারীর বিদ্বেষ কেন থাকবে? একজন নারী কেন আরেকজন নারীকে ছোট করবেন, মন্দ কথা বলবেন, চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন? বাস্তবে দেখেছি, নারী হয়েও একজন নারী অন্য নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করছেন, গালাগালি করছেন, মারামারি করছেন—সবই করছেন। কিন্তু কেন এরকমটা হচ্ছে? নিয়ম অনুযায়ী একজন নারীর উচিত আরেকজন নারীর পাশে দাঁড়ানো, কাঁধে হাত রেখে সহযোগিতা করা।

এরকমটা হয় না, কারণ নারীর মধ্যেও নারীবিদ্বেষ বা মিসোজিনি কাজ করে। নারীবিদ্বেষ বলতে বোঝায় নারীর প্রতি ঘৃণা বা বিরাগ মনোভাব, যেখানে নারীকে শুধু নারী হওয়ার কারণে ঘৃণা করা হয়, কম যোগ্য মনে করা হয় বা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। একজন নারীও অন্য নারীকে এ চোখেই দেখছেন—এটা অসম্ভব মনে হলেও বাস্তব। নানা ধরনের কারণ রয়েছে এর পেছনে।

হাজার হাজার বছর ধরে নারীবিদ্বেষ ব্যাপকভাবে চর্চা হয়ে আসছে—পরিবার, শিল্প, সাহিত্য, সমাজ কাঠামো, ঐতিহাসিক ঘটনাবলি, পৌরাণিক কাহিনী, দর্শন এবং বিভিন্ন ধর্ম ব্যবসায়ীদের দ্বারা। যে সমাজ সভ্য ও যথার্থ শিক্ষিত হয়েছে, তারা এর থেকে বেরিয়ে এসেছে। যারা পারেনি, তারা সে তিমিরেই রয়ে গেছে—বরং আরও প্রোথিত হয়েছে। যেমন, বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে, বেড়েছে নারীবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদ, অবমাননা, যৌন হয়রানি এবং নারীহত্যা। নারীর প্রতি বেড়েছে বলপ্রয়োগ—শারীরিক ও মানসিক, দুইই। নারীর মধ্যেও বিদ্বেষের রূপ এভাবেই দানা বাঁধে।

আর একজন নারী যখন দেখেন, অন্য কোনো নারী তার চাইতে অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, প্রশাসনিক বা কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন, তখনও তিনি সে সফল নারীর ওপর বিদ্বেষ পোষণ করতে পারেন। কোনো নারী স্বাধীনচেতা হলে বা স্বাধীনভাবে, স্বাধীন পোশাক পরে ঘুরে বেড়ালেও, অন্য নারী আপত্তি করেন, অবমাননা করেন।

ফেসবুকে সেদিন একজন নারীকে প্রশ্ন করা হলো, আনন্দ শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টের ভয়াবহ মুখোশটি আপনার কেমন লেগেছে? সুশ্রী চেহারার ওই নারী হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন, 'আমার শাশুড়ির চেহারার মতো।' এ উত্তর দিয়ে তিনি আর হাসি থামাতেই পারছিলেন না, নিজের উত্তরে নিজেই যেন মোহিত হয়ে ছিলেন। আমি এবং আমার মতো অনেকেই উত্তর শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, তিনি কি বুঝে-শুনে এ মন্তব্য করলেন, না-কি ফাইজলামি করে বলেছেন?

বুঝেই বলুন আর ফাইজলামি করেই বলুন—উত্তরটি বেশ তারছেঁড়া টাইপের। কেউ কেন উদাহরণ হিসেবে শাশুড়িকে টেনে আনবেন? আর এত ক্রুর একটি অভিযোগ দেওয়ার পর তিনি হেসে গড়িয়ে পড়ছিলেন কেন? শাশুড়ির প্রতি যদি সাংঘাতিক কোনো ক্ষোভ থাকে, তাও প্রকাশ্যে, বিশেষ করে ক্যামেরার সামনে এ ধরনের উক্তি করাটা অনভিপ্রেত।

একই পরিবারের দুজন হলে একজন নারী কেন আরেকজন নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করছেন? দেশে কি পুরুষ ফ্যাসিস্ট ছিল না? চরিত্রহীন, লম্পট, অসৎ ও অসভ্য পুরুষ নেই? তবে আমরা এর আগে কখনও শুনিনি, কেউ তার শ্বশুর বা স্বামীকে একনায়ক বা মন্দ বোঝানোর জন্য কোনো পুরুষের উদাহরণ দিয়েছেন।

এমনও হতে পারে, ওই সাক্ষাৎকার প্রদানকারী নারী শাশুড়ির কাছ থেকে খুব খারাপ আচরণ পান। কিন্তু তাদের ঘরের খবর আমরা জানি না। অন্যদিকে, তার বিরুদ্ধে শাশুড়িরও হয়তো অনেক অভিযোগ থাকতে পারে—সেটাও আমরা জানি না। তাই তিনি যখন অসংখ্য মানুষের সামনে শাশুড়ির চেহারার সঙ্গে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ডাইনি চেহারার মিল খুঁজে পেলেন এবং তা বলেও ফেললেন, তখন বিষয়টি খুবই রুচিহীন হয়ে গেল। তার শাশুড়ি, সন্তান, স্বামী, পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু, পাড়া-প্রতিবেশি—সবাই দেখলেন, জানলেন শাশুড়ির প্রতি তার মনোভাব। শাশুড়িকে যারা চেনেন না, তারাও এ কথার ওপর ভিত্তি করে শাশুড়িকে বিচার করলেন।

নারীর ভেতরে যে 'ইন্টারনাল মিসোজিনি' কাজ করে, সেটাই বিভিন্ন সময়ে বের হয়ে আসে। তখন নারীবিদ্বেষকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ২০২২ সালে, নরসিংদী রেলস্টেশনে একজন তরুণী ও তার বন্ধু স্থানীয় একদল মানুষের তীব্র রোষের মুখোমুখি হন। তাদের এ রোষের কারণ ছিল তরুণীটির পরনের পোশাক। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, স্টেশনে ভোরবেলা গিয়ে মেয়েটি এক নারীর তীব্র বাক্যবানের মুখে পড়েন। প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষার সময় আরেকজন নারী ওই তরুণীকে 'এ ধরনের পোশাক পরেছেন কেন' জিজ্ঞেস করেন। সে নারী উত্তেজিত হয়ে মেয়েটিকে গালাগালি, কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করলে অন্যরাও এসে যোগ দিয়েছিলেন।

তরুণীটি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, 'আমি বুঝতে পারলাম না, উনি এলেন, তারপর ইচ্ছেমতো গালিগালাজ শুরু করলেন। আমি তাকিয়ে আছি আর বারবার জিজ্ঞাসা করছি, আন্টি, আপনি কেন আমার সঙ্গে এরকম করছেন? নরমালভাবে কথা বলেন। আপনি বলেন, আমার প্রবলেমটা কী? আমি শুনছি আপনার কথা। উনি আমার কোনো কথাই শুনবেন না। এক পর্যায়ে তিনি আমার বাবা-মা, আমার পরিবারকে নিয়ে ইচ্ছেমতো গালিগালাজ করতে শুরু করেন। বলেন, আমার ফ্যামিলি আমাকে শাসন করে না, এ জন্যেই এ অবস্থা হচ্ছে।'

এ যে নারী হয়েও উনি নারীর ওপর মোরাল পুলিশিং করেছেন, এর অন্যতম কারণ ওনার ভেতরে জমে থাকা হিংসা ও অপ্রাপ্তি এবং ভয়। নারীর পছন্দের পোশাকের প্রতি অন্য নারীর যে ক্ষোভ, এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। এর সঙ্গে সম্পর্ক আছে হীনতা, নীচতা, যৌন ঈর্ষা ও নিজের স্বামী বা ছেলেকে নিয়ে অনিরাপত্তার বোধ (ইনসিকিউরিটি)। নারী যে কারণে অন্য নারীকে পোশাকের জন্য হেয় করে, সেটার মূল কারণ হলো নারীবিদ্বেষ (ইন্টারনালাইজড মিসোজিনি)।

হিংসা ও অপ্রাপ্তিটা হচ্ছে, উনি কেন ওই তরুণীর মতো স্বাধীন জীবন কাটাতে পারছেন না, কেন যেমন ইচ্ছা তেমন পোশাক পরতে পারছেন না? আর ভয়টা হচ্ছে নিজের স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে। এ ধরনের নারীরা আশঙ্কা করেন, তাদের ছেলে, স্বামী ও পরিচিত পুরুষরা এমন আধুনিক ও চমৎকার পোশাক পরা মেয়েদের ফাঁদে পড়তে পারেন। তাদের স্বামী, ছেলেরা পথভ্রষ্টও হতে পারেন। এ বিষয়ে একটি গবেষণা বলছে, আমাদের দেশে ইন্টারনালাইজড মিসোজিনি বাড়ছে। পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে নারী নারীর বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন।

এরকম প্রসঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ান দার্শনিক কেট ম্যান যুক্তি দেন যে, আধুনিক নারীবাদীরা যে 'মিসোজিনি' শব্দটি ব্যবহার করেন, তা নারীর প্রতি সাধারণ ঘৃণা নয়, বরং 'ভালো' ও 'খারাপ' নারীর মধ্যে পার্থক্য করার ব্যবস্থাকে বোঝায়। কেট ম্যান লিখেছেন, নারীবিদ্বেষ একটি পুলিশ বাহিনীর মতো, যা এ বিচারের ভিত্তিতে নারীদের পুরস্কৃত বা শাস্তি দেয়। আমাদের দেশে ঘটনা তেমনটাই দেখতে পারছি।

২০২২ সালে করা 'বাংলাদেশে ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির সহজ বিস্তার এবং নারীর প্রতি সহিংসতা' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, শতকরা ৭৪ জন উত্তরদাতা মনে করেন, 'মন্দ' মেয়েরা, 'মন্দ' ছেলেদের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক। আর সমাজে 'ভালো' ও 'মন্দ' এ দুই ধরনের মেয়ে আছেন, এমনটা বিশ্বাস করেন শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা। গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, মন্দ মেয়ের মতো আচরণ সমাজে অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ মন্দ মেয়ে অন্য ছেলেমেয়েদের নষ্ট করে ফেলতে পারে বলে মনে করেন শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা। উত্তরদাতাদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়ই আছেন। তাই যারা মন্দ মেয়ের মতো আচরণ করেন, তাদের ভালো করার জন্য তাদের হেয় করা, মন্দ কথা বলা ও অপমানজনক আচরণ করা সমাজের জন্য মঙ্গল বলে মনে করেন শতকরা ৪৪ জন উত্তরদাতা।

শতকরা ৮১ জন উত্তরদাতা মনে করেন, যেসব মেয়েরা খোলামেলা পোশাক পরেন, স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মেলামেশা করেন, নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেন, সে মেয়েদের নানাভাবে হেয় করা ও তাদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করা অপরাধ নয়। এ মতামত দাতাদের মধ্যে শতকরা ৩৯ জন নারী ও ৪২ জন পুরুষ।

পোশাক বা আচরণ দেখে মুহূর্তে কোনো মেয়েকে 'ভালো মেয়ে বা মন্দ মেয়ে' হিসেবে বিচার করার এবং 'মন্দ মেয়ে' বলে মনে হলে তাদের ওপর আক্রমণের মানসিকতা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ নারীর ওপর এ আক্রমণ করাটাকে মানুষ যৌক্তিক বলে মনে করছেন। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, এ যে অনলাইনে নারীর প্রতি অবমাননাকর যে ইমেজ দেখানো হয়, তা সমাজে প্রচলিত 'মন্দ মেয়ে'র ইমেজকে আরও শক্তিশালী করে। যখন কেউ 'মন্দ' মেয়ের মতো আচরণ করেন, তখন তার প্রতি বিরূপ মন্তব্য করে, টিটকারি কাটে শতকরা ৭১ জন পথচারী—এর মধ্যে শতকরা ৩৩ জন নারী ও ৩৮ জন পুরুষ।

এরাই নারীর কাজকর্ম, চলাফেরা, পোশাক, কথা বলার ওপর ভিত্তি করে 'ভালো মেয়ে' ও 'মন্দ মেয়ে'র তকমা এঁটে দেয়। সমাজ যা নির্ধারণ করে দেয়, সে তকমা ধরেই মেয়েদের চরিত্র বিচার করা হয়। এ বিচার নারীও করেন, পুরুষও করেন। মূলত ক্ষমতাবান পুরুষ যেভাবে বিচার করেন বা যে চোখে নারীকে দেখেন, নারীও সেভাবেই নারীকে দেখে। পুরুষ যাকে মন্দ নারী মনে করেন, নারীও তাকেই মন্দ নারী মনে করেন। একধরনের জমে থাকা ক্ষোভ থেকে নারীর প্রতি অন্য নারীর ঘৃণা, অপছন্দ বা অবিশ্বাস কাজ করে। শুধু তাই নয়, নারীদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠিত নানাধরনের কুসংস্কারও নারীকে নারীর বিরুদ্ধে দাঁড় করায়।

নিউ সাউথ ওয়েলসের উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী মাইকেল ফ্লাড নারীবিদ্বেষকে নারীর প্রতি ঘৃণা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, যদিও পুরুষদের মধ্যে নারীবিদ্বেষ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তবুও নারীদের মধ্যে অন্য নারীর প্রতি, এমনকি নিজের প্রতিও ঘৃণা থাকে এবং তারা তা চর্চা করে।

নারীকে নারীর বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর প্রবণতা আমাদের মধ্যে আছে এবং আমরা এটা করে সুখ পাই। নারীর ঝগড়াটে রূপ দেখানোর জন্য প্রথমেই বলে বসি, 'মেয়েদের মতো ঝগড়া করে' অথবা 'কলতলার কালচার' ইত্যাদি। বউমা আর শ্বাশুড়ির দ্বন্দ্ব এ সমাজে নতুন না, বরং বহুল পরিচিত। পুরুষতন্ত্রের হাত ধরেই নারীবিদ্বেষের উত্থান ঘটেছিল। সব ধর্মই পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোকে উৎসাহিত করেছিল। প্রায় প্রতিটি মানব সংস্কৃতিতেই নারীবিদ্বেষের প্রমাণ রয়েছে।

প্রাচীন রোমের দার্শনিক মার্কাস টুলিয়াস সিসেরো বলেছেন, গ্রীক দার্শনিকরা নারীবিদ্বেষের কারণ হিসেবে 'গাইনোফোবিয়া' বা নারীদের প্রতি একধরনের ভয়কে বিবেচনা করতেন। সে ভয় এখনো সমাজে বর্তমান। পুরুষদের যে অংশ নারীকে ঠেকিয়ে রাখতে চায়, তারা আদতে নারীর উত্থানকে ভয় পায়। তারা মনে করেন, নারী কাজেকর্মে পুরুষের সমান হলে, পুরুষ আর নারীকে আটকে রেখে নির্যাতন চালাতে পারবেন না, পারবেন না কোনঠাসা করে রাখতে। তাই তারা সে অতীত থেকেই নারীকে আটকে রাখতে চেষ্টা করছেন, যাতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে পারেন। পরিবারের পুরুষদের অন্য নারীর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো কোনো নারীর ক্ষেত্রেও এ গাইনোফোবিয়া কাজ করে। গ্রীক সাহিত্যে নারীবিদ্বেষকে একটি রোগ—একটি অসামাজিক অবস্থা—হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

অনেক নারীবাদী বলেছেন, 'ভালো' নারী এবং 'মন্দ' নারীর ধারণা নারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, নারীকে নারী দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। যেসব নারীকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ, অথবা যারা নিজেদের নিপীড়নের কথা বলেন, তাদেরকে ভালো মনে করা হয়। যারা প্রতিবাদ করেন, তাদের মন্দ নারী বলে মনে করা হয়। খারাপ এবং ভালো এ শ্রেণিবিভাগও নারীদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণ হয়। নাইজেরিয়ান নারীবাদী লেখিকা চিমামান্ডা এনগোজি আদিচি পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, যখন নারীরা হয়রানি বা লাঞ্ছিত হওয়ার বর্ণনা দেন, তখনই তাদের সহানুভূতির যোগ্য হিসেবে দেখা হয়। অসহায় নারীকেই 'ভালো' নারী বলে মনে করা হয়।

আমেরিকান র‍্যাডিক্যাল নারীবাদী লেখিকা আন্দ্রেয়া ডোয়ার্কিন ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত তার 'ওম্যান হেটিং' বইতে নারীবিদ্বেষকে চিত্রিত করার জন্য ঐতিহ্যবাহী রূপকথার গল্প ব্যবহার করেছেন। রূপকথায় কিছু নারীকে 'ভালো' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন: স্লিপিং বিউটি এবং স্নো হোয়াইট, যারা জড় ও নিষ্ক্রিয় চরিত্র। তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, এ চরিত্রগুলো 'কখনও চিন্তা করে না, কাজ করে না, সূচনা করে না, মুখোমুখি হয় না, প্রতিরোধ করে না, চ্যালেঞ্জ করে না, অনুভব করে না, যত্ন করে না বা প্রশ্ন করে না। কখনও কখনও তাদের গৃহকর্ম করতে বাধ্য করা হয়—তারাই ভালো।'

বিপরীতে, রূপকথার গল্পে 'দুষ্ট' নারীরা হলেন রানী, ডাইনি এবং ক্ষমতাধর অন্যান্য নারী। অধিকন্তু, রূপকথার পুরুষদের তাদের কর্ম নির্বিশেষে ভালো রাজা এবং ভালো স্বামী বলা হয়। ডোয়ার্কিনের মতে, রূপকথা এ ধারণা দেয় যে, নারীবিদ্বেষের অধীনে কেবল ক্ষমতাহীন নারীদেরই ভালো হিসেবে দেখা যেতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে একই রকম বিচার প্রয়োগ করা হয় না। এরকম একটা ধারণা নিয়ে নারী, পুরুষ বড় হয়।

তিনি আরও বলেছেন যে, নারীবিদ্বেষী নারীদের দ্বারা সেসব ক্ষমতাশালী নারীদের সহ্য করা হয়, যারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে পুরুষদের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং নারীবাদের বিরোধিতা করে। এমনকি নারীরা যদি যথেষ্ট 'ভালো' হয়—অর্থাৎ বাধ্য বা জড় হয়—তাহলে তাদের পূজা করাও যেতে পারে বা পুরুষদের চাইতেও শ্রেষ্ঠ বলা যেতে পারে।


শাহানা হুদা রঞ্জনা: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক


বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফলন। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।

 

Related Topics

টপ নিউজ

নারীবিদ্বেষ / নারী বিদ্বেষ / নারী / নারীর পোশাক / নারীর প্রতি সহিংসতা / নারী অধিকার / লিঙ্গ সমতা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইরানের নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, তেহরানে কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের
  • পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে
  • ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন
  • ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ যেভাবে শেষ হতে পারে...
  • ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে
  • বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কূটনৈতিক সংযোগ বাড়াতে ৫ দেশে নতুন মিশন খুলবে বাংলাদেশ

Related News

  • এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না: একই আসনে নারী ও পুরুষ এমপি নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার
  • নারীর অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টার ঘোষণাকে এমজেএফ-এর স্বাগত
  • নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা: যা ছিল ঘোষণাপত্রে
  • কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে নিহত ২
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচি; দেখুন ভিডিও

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ইরানের নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, তেহরানে কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের

2
আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে

3
আন্তর্জাতিক

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন

4
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ যেভাবে শেষ হতে পারে...

5
আন্তর্জাতিক

ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে

6
বাংলাদেশ

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কূটনৈতিক সংযোগ বাড়াতে ৫ দেশে নতুন মিশন খুলবে বাংলাদেশ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net