নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার আগেই বিজয়ীর নাম ফাঁসের অভিযোগ, তদন্তে কর্মকর্তারা

নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণার আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা নোবেল কমিটির ভেতর থেকে তথ্য ফাঁসের এই বিরল ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছেন নরওয়ের কর্মকর্তারা।
অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট 'পলিমার্কেট'-এ এ বছরের শান্তি পুরস্কার বিজয়ীকে নিয়ে অস্বাভাবিক বাজি ধরার ঘটনা তদন্তকারীদের নজরে আসে। দেখা যায়, নরওয়ের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের কিছু পরেই ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোর পক্ষে বাজির দর হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টিয়ান বার্গ হারপভিকেন বলেন, 'মনে হচ্ছে, আমরা কোনো অপরাধী চক্রের শিকার হয়েছি, যারা আমাদের তথ্য ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে চায়।'
এর কয়েক ঘণ্টা পর, স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনিই প্রথম ভেনেজুয়েলান হিসেবে এই সম্মানজনক পুরস্কার পেলেন। নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তাকে ফোন করে বিজয়ী হওয়ার খবর জানান।
কিন্তু ঘোষণার পর নরওয়ের দুটি সংবাদপত্র, 'আফতেনপোস্টেন' ও 'ফিনানসাভিসেন', অনলাইন জুয়ার বাজারে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি উদ্ঘাটন করে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পলিমার্কেটে সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায় এগিয়ে ছিলেন রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া।
তবে মধ্যরাতে হুট করেই যেখানে মারিয়া কোরিনা মাচাদোর জয়ের সম্ভাবনা যেখানে মাত্র ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছিল, সেখানে দুই ঘণ্টারও কম সময়ে তা বেড়ে ৭২ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছায়। তার জয়ের পক্ষে বিপুল পরিমাণ বাজি ধরা হয়েছে।
ফিনানসাভিসেন পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, একজন ব্যবহারকারী তার পক্ষে বাজি ধরে ৬৫ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি জিতেছেন। আরেকজন বিজয়ী যে প্রোফাইল থেকে বাজি ধরেছিলেন, সেটি তৈরি করা হয়েছিল বাজি ধরার দিনই।
নোবেল কমিটির প্রধান ইয়োর্গেন ভাৎনে ফ্রাইডনেস আফতেনপোস্টেনকে বলেন, 'কমিটির গোপনীয়তা রক্ষার দীর্ঘদিনের সুনাম রয়েছে।' হারপভিকেন জানান, বিজয়ীর নাম আসলেই ফাঁস হয়েছে কি না, তা ' এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না', তবে তিনি এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হবে বলে আশা করছেন।