কমেছে সবজির দাম, বেড়েছে মুরগির; স্থিতিশীল মাছের বাজার

সবজির দাম কমে ক্রেতাদের স্বস্তি মিলছে। মৌসুমি শাকসবজি বাজারে আসায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে মাংস ও মুরগির বাজারে চাপ অব্যাহত থাকায় ক্রেতাদের খরচ বেড়েছে।
নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা গৃহিণী তাহমিনা বলেন, "সবজির দামে একটু স্বস্তি পেলেও মাংস আর মুরগির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের আয় সীমিত, তাই সরকারের উচিত বাজারে আরও কড়া নজরদারি করা, যাতে আমরা নিত্যপণ্য সহজে কিনতে পারি।"
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর লালবাগ, নিউ মার্কেট সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে। কাঁচা মরিচ এখন কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ টাকা। টমেটো ১০০ টাকা, করলা ৫০–৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ও পটোল ৫০–৬০ টাকা, মাঝারি বেগুন ১০০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে লম্বা বেগুন অপরিবর্তিত থেকে ৬০ টাকা কেজি, গোল বেগুন ১০০–১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা এবং লাউ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁপে ২০–৩০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, কচু ও শসা ৫০–৬০ টাকা, গাজর ৯০–১০০ টাকা এবং ধনেপাতা ১০০–১২০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। আলুর দামও কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ২০–২২ টাকা হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫ টাকা। তবে পেঁয়াজ এখনো কেজিপ্রতি ৭০–৭৫ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে।
শাকের বাজারেও স্বস্তি মিলছে। লাল শাক, পুঁইশাক, কলমিশাক ও ডাটাশাক আঁটিপ্রতি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
লালবাগের ব্যবসায়ী হারুন মিয়া টিবিএসকে বলেন, মৌসুমি সবজি বাজারে আসায় দাম ধীরে ধীরে কমছে এবং শীতকাল ঘনিয়ে এলে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মাছের বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল। রুই মাছ আকারভেদে ৩০০–৪৯০ টাকা, বড় কাতলা ৩৫০–৪০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০–৫৬০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা এবং চাষের শিং ৩০০–৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সিলভার কার্প ১৮০–২৬০ টাকা এবং তেলাপিয়া ২০০–২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইলিশের দাম অপরিবর্তিত—বড় ২,৪০০, মাঝারি ১,৪০০ ও ছোট ইলিশ ১,২০০ টাকা কেজি।
মাছের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি সোনালি কক ৩০০–৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় এ খাতে চাপ তৈরি হয়েছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১,০৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ডিমের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল। লাল ডিম ডজন প্রতি ১৪৪ টাকা, সাদা ডিম ১৪৫ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন বাজারে ২-৩ অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।
দেশি মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১৫৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ১০০ টাকা, মুগ ডাল ১৫০–১৬০ টাকা, খেসারি ১১০–১১২ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা এবং বুটের ডাল ১২৫–১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারেও বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি—পোলাও চাল কেজিপ্রতি ১২৫–১৩০ টাকা, মিনিকেট ৭৮–৮০ টাকা, আর আটাশ/পায়জাম চাল ৬৫ টাকা।
এছাড়া সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৮৫–১৯০ টাকা এবং সুপার তেল ১৭০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। মসলার বাজার তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক হলেও কিসমিসের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৮০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। জিরা ৬৫০ টাকা, এলাচ ৪,৮০০–৫,২০০ টাকা, লবঙ্গ ১,৬০০–১,৭০০ টাকা, দারুচিনি ৬০০ টাকা ও গোলমরিচ ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শুকনো মরিচ কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ৩০০–৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ১৪০ টাকা, চায়না আদা ১৬০ টাকা, দেশি রসুন ১১০ টাকা এবং চায়না রসুন ১৩০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।