সবজির দাম চড়া, বেড়েছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দামও

রাজধানীর খুচরা বাজারে আবারও চড়া সবজির দাম, বিশেষ করে কাঁচা মরিচের দামে ক্রেতারা নাভিশ্বাস ফেলছেন। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছিল কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ২০০ টাকারও বেশি বেড়েছে দাম।
অন্যদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭৫ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, হাইব্রিড পেঁয়াজ ৭০ থেকে বেড়ে ৭৫ টাকায় উঠেছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর ) রাজধানীর হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা একজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'বৃষ্টি হলেই কি দাম বেড়ে যাবে! আমরা কি খাব বুঝতেছি না। সকল সবজি, মাছ ও মুরগির এত দাম; মনে হচ্ছে ডিম নিয়ে বাড়ি যেতে হবে।'
কেবল কাঁচামরিচই নয়, বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই চড়া। লম্বা বেগুন কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গোল বেগুন মানভেদে ১৪০ থেকে ২০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ও করলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, আর শিম কেজিপ্রতি ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ সবজি, যেমন পটোল, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, শসা—সবকটির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। ৭০ টাকার নিচে এখন আর কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।
হাতিরপুলের সবজি ব্যবসায়ী তারেক বলেন, 'টানা বৃষ্টি ও পূজার কারণে মালামাল না আসায় দাম একটু বেশি '
শুধু সবজি নয়, মাংস ও মাছের দামও বেড়েছে। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকায় ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি আগের মতো ১৮০ টাকা থাকলেও পাকিস্তানি সোনালি কক বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মাছও ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাঝারি আকারের রুই ও কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৫৬০ টাকা ও পাবদা ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে ডিমের দাম কমেছে। প্রতি ডজনে ডিমের ৫ টাকা কমে ১৩৫ টাকা ডজনে পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে মসলার বাজারেও ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত। কিশমিশ, আলুবোখারা, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও জিরা ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০, গোলমরিচ এক লাফে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজিতে , দেশি আদা ১৪০ বেড়ে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, চায়না আদা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় পৌঁছেছে।
এদিকে দেশি রসুনের দাম কমে ১১০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় নামলেও এর প্রভাব বাজারে পড়েনি। ক্রেতারা বলছেন, 'এক-দুই টাকার পার্থক্য দিয়ে কোনো স্বস্তি মেলে না।'
মিনিকেট ও পোলাও চালের চালের দাম সামান্য কমেছে। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৭৮-৮০ টাকা থেকে কমে ৭৬-৭৭ টাকায়, পোলাও চাল ১২৫-১৩০ টাকা থেকে নেমে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে দেশি মসুর ডাল ১৫০ টাকায় নেমে এলেও মুগ ডালের দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০ টাকা। খেসারি ও বুটের ডালের দাম সামান্য কমেছে। তবে বাজারে তার প্রভাব তেমন একটা পড়েনি।