‘বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন

আদালতের হৃদয়স্পর্শী সব ভাইরাল মুহূর্তের জন্য পরিচিত মার্কিন বিচারক ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের প্রোভিডেন্স শহরের সাবেক এই বিচারক অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'মানুষের প্রতি তার সহানুভূতি, নম্রতা ও অটল বিশ্বাসের জন্য তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। বিচারক ক্যাপ্রিও আদালতের ভেতরে ও বাইরে তার কাজের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে ছুঁয়ে গেছেন।'
ক্যাপ্রিও তার টিভি শো 'কট ইন প্রোভিডেন্স'-এর মাধ্যমে অনেকের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। এ অনুষ্ঠানের ভিডিও ক্লিপগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আদালতে ক্যাপ্রিওর সহানুভূতি ও দুঃস্থদের প্রতি দেখানো উদারতার জন্য তিনি 'বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
২০০০ সালে অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার শুরু হয়। এটি চারটি ডে-টাইম এমি মনোনয়ন লাভ করে।
ক্যাপ্রিও তার 'কমপ্যাশন ইন দ্য কোর্ট: লাইফ-চেঞ্জিং স্টোরিজ ফ্রম আমেরিকাস নাইসেস্ট জাজ' বইয়ের প্রচারণার সময় বলেছিলেন, 'সহানুভূতি, বোঝাপড়া ও মমত্ববোধের মতো গুণগুলো মূলত আমার বেড়ে ওঠা এবং শৈশব থেকেই উৎসারিত। আমার বাবা-মা ইতালির মানুষ; তারা প্রতিবেশীদের যত্ন নিতেন, তাদের সাহায্য করতেন। সেই প্রভাবগুলোই আমার জীবনকে প্রকৃত অর্থে প্রভাবিত করেছে।'
২০২৪ সালে এনবিসি বোস্টনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাপ্রিও বলেন, 'কখনও কখনও আপনি শুধু কারও কাঁধে হাত রেখে এবং তাকে বিশ্বাস করেন—এই কথাটি বলেই ওই মানুষটি জীবন বদলে দিতে পারেন।'
ক্যাপ্রিওর ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, তার জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৩ নভেম্বর; বেড়ে ওঠেন রোড আইল্যান্ডের প্রভিডেন্স শহরে। সেখানেই তিনি প্রায় ৫০ বছর পর মিউনিসিপ্যাল কোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আইন পেশায় আসার আগে তিনি প্রভিডেন্সের হোপ হাই স্কুলে মার্কিন সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বিষয়ে শিক্ষকতা করতেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বোস্টনের সাফোক ইউনিভার্সিটি স্কুল অভ ল-তে সান্ধ্যকালীন কোর্সে পড়াশোনা করেন।
ক্যাপ্রিও ১৯৮৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রভিডেন্স মিউনিসিপ্যাল কোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ৮৭তম জন্মদিনের কদিন পরই, ক্যাপ্রিও তার ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার খবর জানান।
২০২৪ সালের মে মাসে ক্যাপ্রিও তার শেষ রেডিয়েশন থেরাপি সম্পন্ন করেন। মঙ্গলবার ক্যাপ্রিও তার অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে জানান, তার 'শারীরিক অবস্থার অবনতি' হয়েছে এবং তিনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, মৃত্যুকালে ক্যাপ্রিও তার প্রায় ৬০ বছরের সঙ্গী স্ত্রী জয়েস ক্যাপ্রিও, পাঁচ সন্তান, সাত নাতি-নাতনি ও দুই প্রপৌত্র-প্রপৌত্রী রেখে গেছেন।