ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
আজ শনিবার (৯ আগস্ট) রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে আজ সকালে রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিইসি বলেন, 'মানুষ তো ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অভ্যাসটাই ভুলে গেছে আসলে। ভোটের দিন ছুটি থাকে, আমি ঘুমাই—কারণ আমি না গেলেও তো ভোটটা কেউ না কেউ দিয়ে দেবে- এ ধরনের একটা মন-মানসিকতা ছিল।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন সিস্টেমের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা, মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা, এ দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, এই বিশ্বাস স্থাপন করা- এসব আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি আরও বলেন, 'যেগুলো দৃশ্যমান চ্যালেঞ্জ, সেগুলো নিয়েই বলব। প্রথমে আইনশৃঙ্খলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনের পর থেকে দেশে যে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেদিক থেকে এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। এরপরও আমি বলব- আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গত বছরের ৫ আগস্টের পরে অনেক উন্নতি হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করতে পারব।'
তিনি বলেন, 'আমার বিশ্বাস নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থার আরও উন্নতি হবে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে নিয়ে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যেখানে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।'
সিইসি বলেন, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের মধ্যে একটা পরিবর্তন আসবে। সব জায়গায় যে শিক্ষকদের দিয়ে করাবো, এমন নাও হতে পারে। আমরা বিকল্প চিন্তা করছি। এখন মানুষ তো বিদেশ থেকে আমদানি করে নির্বাচন করতে পারা যাবে না। দেশের মানুষ দিয়েই তো করতে হবে।
তিনি বলেন, 'এ দেশে আগেও তো সুন্দর নির্বাচন করেছি। মানুষ যদি দেখে এখানে ধান্দাবাজি নেই, মানুষ যদি বুঝতে পারে এরা সত্যিকার অর্থে একটা সুন্দর নির্বাচন দিতে চায়, তাহলে দেখবেন মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে।'
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনকে নিজের ঈমানি দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'আমরা জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আমি এবং আমার সহকর্মীরা এটাকে ঈমানি দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছি। আমার সিদ্ধান্ত কারো পক্ষে-বিপক্ষে যেতে পারে। কিন্ত এটা আমার কারণে নয়, এটা আইন-কানুনের জন্য। যতক্ষণ আমার হুশ আছে, ততক্ষণ আমি কারো পক্ষে নই বরং নিরপেক্ষভাবে কাজ করব।'
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারকে বড় সমস্যা উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, 'অস্ত্রের চেয়ে মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এআই ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার আমাদের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মানুষের ছবি দিয়ে বক্তব্য বানানো হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না।'
তিনি আরও বলেন, ''এটা মোকাবিলা কীভাবে করা যায়, আমরা তা নিয়ে ভাবছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের খবর এলে যাচাই-বাছাই না করেই এক-দুই হাজারবার শেয়ার হয়ে যায়। যার সম্পর্কে দেওয়া হয়, তার 'বারোটা' বেজে যায়।''