কাল থেকে সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি, বন্ধ থাকবে যান চলাচল

পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলেটে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। কর্মসূচির ফলে ওই দিন থেকে গণপরিবহনসহ কোনো যানবাহন চলবে না বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি এবং সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে, গত রোববার প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়ে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তবে ওইদিন রাতে এক সভায় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি লোকমান আহমদ ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করে বাস চলবে বলে জানান। এতে কর্মবিরতি নিয়ে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
তবে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন-মালিক সমিতির নেতারা জানান, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকেই কর্মবিরতি শুরু হবে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে।
দাবি পূরণের দাবিতে আগে পাঁচ দফা থাকলেও এখন ছয় দফায় উন্নীত হয়েছে। নতুন করে এতে যুক্ত হয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহারের দাবি।
ছয় দফা দাবিগুলো হলো—
১. সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৬ ধারা অনুযায়ী বাস-মিনিবাসের ২০ বছর, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের ২৫ বছর এবং সিএনজি ও ইমা লেগুনার ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল;
২. সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল ও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া;
৩. বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র ব্যবস্থা বাতিল ও গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের ওপর আরোপিত বাড়তি কর প্রত্যাহার;
৪. সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুৎ মিটার ফেরত, ভাঙচুরকৃত মিল ও গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর-বালুর ক্ষতিপূরণ প্রদান;
৫. সড়কে বালু-পাথরবাহী ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনের চালকদের হয়রানি বন্ধ;
৬. সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় জেলা প্রশাসককে অবিলম্বে প্রত্যাহার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ময়নুল হক বলেন, 'লোকমান আহমদ কে? তাকে আমরা চিনি না। তার কোনো গাড়ি নেই, তিনি মালিক সমিতির নেতাও নন। তিনি কর্মসূচিতে আছেন কি-না, তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাব।'
তিনি বলেন, '২০১৮ সাল থেকে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ। এতে পাথরসংশ্লিষ্ট সবাই চরম দুর্ভোগে আছেন। সরকার অবৈধ পাথর লুটপাট বন্ধ করতে না পারলেও বৈধভাবে উত্তোলন ও পরিবহন করতে দিচ্ছে না।'
এদিকে, সিলেট জেলা ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে জেলার পণ্য পরিবহন খাতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে, যা শনিবার থেকে শুরু হয়ে আজ (সোমবার) শেষ হওয়ার কথা।