তিন দফা দাবিতে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

তিন দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)-এর শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত 'প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন'-এর ব্যানারে তারা নগরীর তালাইমারী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে দুই পাশে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এর আগে, তিন দফা দাবিতে রুয়েট ক্যাম্পাস থেকে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তালাইমারী মোড়ে এসে অবস্থান নেন। এ সময় প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলেও তারা সড়ক না ছেড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি—
১. বিএসসি পাশ ছাড়া কেউ 'প্রকৌশলী' পদবি ব্যবহার করতে পারবে না,
২. বিএসসি পাশ প্রকৌশলীদের ৯ম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে এবং
৩. ১০ম গ্রেড উন্মুক্ত করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
তাদের অভিযোগ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ছিল বৈষম্যের বিলোপ ও মেধার স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। অথচ প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ডিপ্লোমা পাশকৃতরা টেকনিশিয়ান হওয়া সত্ত্বেও 'প্রকৌশলী' পদবি ব্যবহার করছেন, যা প্রকৌশল পেশার অবমূল্যায়ন।
তারা বলেন, ৯ম গ্রেডে নিয়োগে শুধু বিসিএস বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বিএসসি ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দিতে হবে। কোনো কোটা বা সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। এটা সংবিধানের ২০(১) ও ২৯(১) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের শামিল।
এছাড়া, টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড/উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে এই পদ ১০০ শতাংশ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষিত, যা সংবিধানের ১৯(১), ২৭ অনুচ্ছেদ এবং সরকারি চাকরি আইন ৭(১) লঙ্ঘন করছে। বিএসসি ডিগ্রিধারীদের আবেদন করতে না দেওয়া চরম বৈষম্য ও মেধাবিরোধী।
তৃতীয়ত, 'ইঞ্জিনিয়ার' পদবি ব্যবহারে আইন প্রণয়নের দাবি জানান তারা। তাদের ভাষায়, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক—যেভাবে নির্দিষ্ট যোগ্যতা ছাড়া পদবি ব্যবহার করা যায় না, ঠিক তেমনি 'প্রকৌশলী' পদবির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত। বাংলাদেশ প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের (আইইবি) আইন অনুযায়ী, কেবলমাত্র বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাই প্রকৃত 'ইঞ্জিনিয়ার' হিসেবে স্বীকৃত।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মতে, এই বৈষম্য দূর হলে প্রকৌশল পেশায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত হবে, 'ইঞ্জিনিয়ার' শব্দের অপব্যবহার বন্ধ হবে এবং প্রকৃত পেশাগত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা পাবে। এটি শুধু প্রকৌশলীদের নয়, বরং দেশের সার্বিক উন্নয়ন কাঠামোর প্রশ্ন বলেও মন্তব্য করেন তারা।