‘শহীদ পরিবার ও আহতদের খোঁজ কেউ নেয় না’: ক্ষোভ হতাহতদের স্বজনের

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবার ও আহতদের খোঁজ কেউ নেয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হতাহতদের পরিবারের স্বজনেরা।
আজ মঙ্গলবার (১জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমামেলন কেন্দ্রে 'গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪, জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে আর কোনোদিন ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে দেওয়া হবে না বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা।
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের পরিবার এবং বিগত সরকারের আমলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজিদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন ও মায়ের ডাক সংগঠনের আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, গুম-নিখোঁজ হয়ে যারা ফেরত আসেননি এবং জুলাই আরো যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার আমরা চাই। যতদিন আমাদের শেষ রক্ত আছে, ততদিন এ বিচার কায়েম করে ছাড়ব। বিচার না করে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না করে আমরা মৃত্যুবরণ করব না।
শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, 'আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের বয়স ১৭ বছর, ছোট ছেলের বয়স ১৪ বছর। আমার বড় ছেলে শহীদ হওয়ার ১৪ দিনের মাথায় আমার ছোট ছেলের ক্যান্সার ধরা পরে। সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।'
তিনি বলেন, 'মে মাসের ১৮ তারিখে আমার স্বামী ব্রেনস্ট্রোক করে মারা যান। আমরা বিএনপি পরিবার থেকে আমার ছোট ছেলের খোঁজ-খবর নেয় এবং তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। আগামী শুক্রবার ছোট ছেলের আরেকটা অপারেশন হবে। আমার শেষ অবলম্বনটুকু যেন আমরা কাছে থাকে, এজন্য সবাই দোয়া করবেন।'
সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই উপদেষ্টা ও অন্তবর্তী সরকার আজ পর্যন্ত আমাদের খোঁজ নিতে পারে নাই। আমার ছেলের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতা পেল, তারা একবারও আমাদের খোঁজ নিল না। এমনকি সারজিস-হাসনাতকে আমরা ১০০টা ফোন দিলেও তারা রিসিভ করেন না।'
শহীদ ইয়ামিনের বাবা মহিউদ্দিন বলেন, 'সব শহীদের হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। যদি এই সরকার বিচার করতে না পারে, তাহলে বড় দল হিসেবে বিএনপির কাছে আমাদের দাবি থাকবে বিচার শেষ করার।'
শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী বলেন, 'আবু সাঈদ বুক পেতে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সাহস জুগিয়েছিল। যার কারণে আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিদায় করতে পেরেছি।'
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, এজেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।