Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
June 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JUNE 14, 2025
বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে

ফিচার

সালেহ শফিক
25 April, 2025, 04:30 pm
Last modified: 25 April, 2025, 08:35 pm

Related News

  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!
  • যে বেলুনের সাথে ছবি তুলতে গুনতে হয় টাকা!

বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে

সালেহ শফিক
25 April, 2025, 04:30 pm
Last modified: 25 April, 2025, 08:35 pm

কাটিং সেকশন থেকে ম্যানেজার চেম্বার আলাদা করার জন্য বিশেষ নকশার বোর্ড ব্যবহৃত হয়েছে রোজ স্টাইলে। ছবি: সালেহ শফিক

জীবন কৃষ্ণ শীল অবেলায় দেহ রাখলেন। বন্ধ হয়ে গেল তার সেলুনটিও। ছেলে পবনকে বললাম, জাতিপেশা ছেড়ে দিলে? ছেলে বলল, নতুন যুগ আসছে কাকু, অল্প টাকার সেলুনে মাছিও বসবে না।'

বাজারের মুখেই ছিল দোকানটি, সরু চিলতে, দুটি চেয়ার বসানো, একটি ওয়েটিং টুল। ফ্যান ঘুরত বলে কাস্টমারদের পছন্দের তালিকায় ছিল এক নম্বরে। সারাদিন একটি ক্যাসেট প্লেয়ার গান বাজতে থাকত। শোনা যেত হেমন্ত, মান্না বা লতা মঙ্গেশকরের গান। তিন ধারের দেয়ালেই গায়ে গায়ে লাগানো বড় বড় আয়না বসানো ছিল। টুলে দুবেলা আড্ডা দিতে দেখতাম সিনিয়র জনাকয় পাড়াতুতো ভাইকে। জীবনদা একটি দৈনিক পত্রিকা রাখতেন। পাতাগুলো চক্রাকারে ঘুরত এর-ওর হাতে। সেসঙ্গে আলোচনা চলত কখনো দেশ নিয়ে, কখনো বিদেশ নিয়ে, খেলা নিয়ে বা ধুলা নিয়ে। মনে হতো আলোচকরা সব জানেন, পারেন না কেবল শাসনক্ষমতা হাতে নেই বলে। 

ঢাকার সেলুনগুলো তখনো জীবনদার দোকানেরই ফটোকপি ছিল। সেই কাঁচি চলছে অবিরাম, ফিনিশিংয়ে ক্ষুর, শেভ করার পর ফিটকিরি। মেঝেতে কাটা চুলেরা এলোমেলো আলুথালু গড়াগড়ি খায়। সাদা ধুতির মতো এক টুকরো কাপড় শরীরে জড়িয়ে বসলেও চুল ঠিকই বিঁধে যায় হাতে, কনুইয়ে, পেটে বা গলায়। বাসায় এসে গোসল না করা পর্যন্ত শান্তি নেই। পার্থক্য যা পেলাম, গ্রামের মানুষদের চুল কিছু বেশি ছিল, শহরের মানুষদের টাক বেশি। আরেকটি তফাত হলো, এখানে আলো জ্বলে অনেক রাত পর্যন্ত, হলুদ আলো, কাস্টমার রাতেও পাওয়া যায়।

তাহলে এই জেন্টস লাইফ স্টাইল সেলুন বা পারলারের চল হলো কবে থেকে ? পলাশ আহমেদ বললেন, ২০১০ সালের পর থেকে।

 বিদেশ থেকে তাগাদা আসছিল

নিজের জীবনকাহিনী থেকেই পলাশ হিসাব মিলাতে বসলেন। হেয়ার কাটার হওয়ার কথা আগে তিনি কখনো ভাবেননি, অন্তত ২০০৯ সালের আগে তো নয়ই। তাদের বৃহৎ পরিবারের বেশ কয়েকজন তখন মালয়েশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যে। তারা ক্রমাগত বলতে থাকল, চুল কাটা রপ্ত করো, পয়সার মুখ দেখবে, ভিসা কোনো ব্যাপার না। মিরপুরে পূরবী সিনেমা হলের কাছে একটি সেলুন ছিল ওই জীবনদার সেলুনের মতোই। উনিশ বা কুড়ি দিন ওখানে কাজ করেছিলেন। তারপর এক বড় ভাইয়ের সূত্র ধরে চলে গেলেন ১০ নম্বরের কমফোর্ট সেলুনে।

রোজ স্টাইলে ভেক্টর আর্ট। ছবি: সালেহ শফিক

সেটি ছিল একটি এসি সেলুন। অবশ্য বাড়তি সার্ভিস, যেমন ফেসিয়াল, মাসাজ ইত্যাদি কিছুই ছিল না। সেলুন মালিক তাকে ২০ টাকা করে দিতেন রোজ। তাতেই খুশি ছিলেন পলাশ। কারণ কাজ শেখাটাই ছিল মুখ্য। কাজ শিখছিলেনও দ্রুত। তিন বছর ছিলেন কমফোর্টে। এর মধ্যে নিজের কিছু কাস্টমার তৈরি হয়েছিল, যারা তার হাতে চুল কাটাতে, শেভ করাতে পছন্দ করতেন। হঠাৎই কমফোর্ট বন্ধ হয়ে গেলে তিনি ভাবলেন নিজে একটি সেলুন দিবেন, বিদেশেও যাবেন না।

পলাশ তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নিয়মিত কাস্টমারের কাছে পরামর্শ চাইলেন। তারা বললেন, তুমি পারবে, তবে আরো কিছুদিন সময় নাও। এর মধ্যে মিরপুর ৬ নম্বরে একটি আধুনিক সেলুন গড়ে উঠছিল, নাম ঢাকা সেলুন। সেলুন মালিক যেহেতু নিজে হেয়ার কাটার নন, তাই পলাশ হয়ে উঠলেন তার প্রধান ভরসা। পলাশ কমফোর্টের পাকা কারিগর বা হেয়ারকাটারদের নিয়ে এলেন ঢাকা সেলুনে। সেলুনের ডেকোরেশন, উপকরণ সংগ্রহেও পরামর্শ দিয়েছেন পলাশ। কমফোর্টে থাকার সময় তিনি পাশের এক সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে বিদেশের, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের সেলুনগুলোর সাজসজ্জা দেখতেন, হেয়ার কাটের বিভিন্ন নমুনাও দেখতেন। কাস্টমার ধরতে এগুলো তাকে সাহায্য করেছিল। নতুন সেলুন, আধুনিক ও ঝকঝকে, সব চলছিল ভালো। কিছুকাল পরে সেলুনটির মালিকানা হস্তান্তর হলে পলাশ আবার নিজের জন্য দোকান খুঁজে বেড়াতে লাগলেন। 

মহল্লার একটি আটপৌরে সেলুন। ছবি: সালেহ শফিক

রোজ স্টাইল জেন্টস পারলার

আড়াই মাস পরে পলাশ ঢাকা সেলুনের গুটিকয় বাড়ির পরে সাড়ে পাঁচশ বর্গফুটের একটি জায়গা পেয়ে গেলেন। ১৩ লক্ষ টাকায় চার বছরের জন্য চুক্তি হলো। এর মধ্যে দুজন কাস্টমার ধার দিয়েছিলেন দুই লাখ করে, ব্যাংক থেকে নিলেন ৪ লাখ এবং পার্টনার নিলেন একজন। নিজের মনের মতো করে সেলুন সাজাতে শুরু করলেন, তুষার থাই অ্যালুমিনিয়াম হলো তার ইন্টেরিয়র পার্টনার। ম্যানেজারের বসার জন্য আলাদা ডেস্ক রাখলেন, উল্টো দিকে ওয়েটিং সোফা আর সোফার বিপরীত দিকে একটি এলইডি টিভি। ম্যানেজার ডেস্ক থেকে হেয়ার কাটিং সেকশন আড়াল করলেন জাফরিকাটা বোর্ড দিয়ে। সিলিংজুড়ে প্রায় একশ স্পটলাইট লাগালেন। মেঝেতে বসালেন সাদা-কালোর ছককাটা টাইলস। পাঁচ সিটের হেয়ার কাটিং সেকশন তার। একটি থেকে আরেকটি সিটের মাঝখানে চার ফুট ফারাক রাখলেন যেন কাস্টমার স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং কাটারের চলাচল হয় সহজ। প্রতিটি সিটের সঙ্গে আলাদা করে মিরর দিলেন। মার্বেল টাইলসের মাঝখানে বসালেন গোলাকার সিংক, গরম ও ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা রাখলেন, হ্যান্ড শাওয়ার রাখলেন। প্রতিজন হেয়ার কাটারের জন্য আলাদা আলাদা ট্রেতে থাকে বিভিন্ন রকম চিরুনি, কাঁচি, ট্রিমার, ব্রাশ, ব্লেড, ক্ষুর ও লেভেলার। স্যাভলন, আফটার শেভ লোশন, হেয়ার জেল, হেয়ার কালার, হেয়ার অয়েল, পাউডার ইত্যাদির তাক দেয়ালে সংযুক্ত। টিস্যুর মধ্যে ব্যবহার করেন নেক টিস্যু, ফেশিয়াল টিস্যু, পেপার ন্যাপকিন ইত্যাদি। সেলুনের নাম রাখলেন রোজ স্টাইল জেন্টস পারলার। যশোরে থাকার সময় মনিহার সিনেমা হলে দেখেছিলেন টাইটানিক ছবিটি। ছবিতে নায়িকার নাম ছিল রোজ (কেট উইন্সলেট)। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেয়ে হলে নাম রাখবেন রোজ। এখন তার মেয়ের বয়স ছয়, মেয়ে হওয়ারও ছয় বছর আগে তিনি সেলুনের নাম রেখেছিলেন রোজ। 

প্রথম দফা চুক্তি শেষ হওয়ার পরে আবার নতুন চুক্তি করলেন। এখন নিচতলার পুরোটায় এবং দোতলার কিছু অংশে রোজ স্টাইল। সবমিলিয়ে আয়তন দাঁড়াল সাড়ে সতের শ বর্গফুট। সিট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২টি। একটি ম্যানিকিওর-পেডিকিওর সেকশন এবং একটি স্পা সেকশনও করেছেন। এ সময় বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসা এক বড় ভাই তাকে অর্থ জোগান দিয়েছিলেন। 

পাঁচটি থেকে রোজের সিট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে। ছবি: সালেহ শফিক

পলাশের মতে, যখন ট্রিমার ছিল না তখন চুল কাটা ছিল শিল্প। আগে অল্প কয়েকটি কাট ছিল: বয়াতী, সুন্নতী, বাটি ছাঁট, আর্মি আর স্কয়ার কাট। কাঁচির আমলে সেগুলো মিলাতেই ঘাম ছুটে যেত। ট্রিমার আসার পর এখন চুল কাটা হয়ে গেছে হাতের খেলা। ট্রিমারে নম্বর সেট করে দিলে সে অনুযায়ী সামনে পিছনে চুল ছোট-বড় হয়ে যায়। স্টাইল যদিও বদলায় প্রতি মাসেই, কিন্তু তাতে কাটারের বেগ পেতে হয় না কিছু। পলাশ বললেন, '২০১৩ সালে চুল কাটতে নিতাম ৭০ টাকা, তারপর নিতাম ৮০ টাকা, পরে ১০০ টাকা হয়ে এখন ১৫০ টাকা। তবে স্টাইল যোগ হলে রেট ভিন্ন হয়ে যায়।'

রোজ স্টাইলে স্টেরিলাইজার মেশিন আছে। প্রতিদিনই যন্ত্রপাতিগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয়। তোয়ালে ও অ্যাপ্রন ধোয়া হয় তিন দিনে ১ বার। তিন মাস পরপর নতুন তোয়ালে কেনা হয়। পলাশ জানালেন, তার সেলুনে ব্যবহৃত সব কসমেটিকসই খোলা তাকে রাখা হয়, যেন কাস্টমার দেখতে পান কী উপকরণ দিয়ে তিনি ফেসিয়াল বা হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন। 

সাদাকালো হেয়ার ল্যাব

বাড়ির দোতলার ভাড়াটিয়া চলে গেলে তানভীর ভাবলেন নতুন কাউকে ভাড়া দেবেন না। নিজে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাবেন। ১০ বছর আগের কথা। অনেক রকম ভাবনা এলো মাথায়। শেষে থিতু হলেন সেলুনে এসে। কী কারণ? নিজের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে দেখেছেন, মিরপুরে চুল কাটার পরিচ্ছন্ন দোকান কম, চাপাচাপি করে বসতে হয়, একজন আরেকজনের ঘাড়ের ওপর দিয়ে কথা বলে, পুরো পরিস্থিতি বিরক্তিকর। তানভীর চাইলেন এমন একটি সেলুন হোক যেখানে মানুষ আরামে বসতে পারবে। যেন অবসর কাটাতে এসেছে। দোকানের আয়তন যতটা, তাতে তিনি ৮টি সিট বসাতে পারতেন; কিন্তু বসিয়েছেন ৫টি আর একটি টয় কারে আছে শিশু সিট। দোকানের নাম হেয়ার ল্যাব। ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট থিমে তিনি দোকান সাজাতে লাগলেন। দক্ষ সব হেয়ার কাটার জোগাড় করলেন। নিয়মিত তাদের সঙ্গে কর্মশালা করতে থাকেন। তিনি বোঝাতে চাইলেন, এটা তাদেরই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এটি পরিচ্ছন্ন রাখা, কাস্টমারের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, ভালো সার্ভিস দেওয়ার মধ্য দিয়ে বস্তুত তাদেরই উপকার হবে।

প্রতিজন হেয়ার কাটারের জন্য আলাদা আলাদা ট্রেতে থাকে বিভিন্ন রকম চিরুনি, কাঁচি, ট্রিমার, ব্রাশ, ব্লেড, ক্ষুর ও লেভেলার। ছবি: সালেহ শফিক

তানভীর নিজে ফ্যাশন ডিজাইনার। নিজেদের বাড়িতে থাকেন, তার চলে যায় ভালোই। সে অর্থে নিজের পকেটে এখান থেকে কিছু চালান না করলেও চলবে। তবে অর্থকরী হওয়া এ কারণেই দরকার, যেন ভর্তুকি না দিতে হয়। কারণ ভর্তুকি দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানই বেশি দিন চালানো যায় না। হেয়ার কাটাররা সাধারণত মজুরি বা বেতন পান না। তাদের ও মালিকের মধ্যে ৪০ ও ৬০ শতাংশ হারে অর্থ ভাগাভাগি হয়। মানে দাঁড়াল, যদি কোনো কাটার দিনে ১০ জনের চুল কাটেন আর তাতে যদি ১ হাজার টাকা আয় হয় তবে ৪০০ টাকা পাবেন কাটার আর ৬০০ টাকা পাবেন মালিক। 

নিজে ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ায় আজিজুর রহমান তানভীরের পক্ষে দোকান সাজানো সহজ হয়ে গিয়েছিল। কাচ দিয়ে ঢাকা দোকানের বাইরের অংশে বড় বড় ভেক্টর আর্ট (গণিতভিত্তিক কম্পিউটার ইমেজ) লাগিয়েছেন যার কোনোটা ক্ষুর-কাঁচির, কোনোটা নতুন ধরনের হেয়ার কাটের।

তানভীর বললেন, 'আমাদের আগে মিরপুরে কোনো সেলুনে ভেক্টর আর্ট লাগানো ছিল না। আগে তারকাদের ছবি দোকানের সামনে বা ভিতরে লাগানো থাকত। আমরা ভিন্নতা আনতে চেয়ে এটা করেছিলাম, পরে দেখলাম এটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠল। এখন প্রায় সব সেলুনেই ভেক্টর আর্ট ব্যবহৃত হচ্ছে। বছরে দু-তিনবার এগুলো বদলাই। তাতে নতুন লুক তৈরি হয়।'

ইন্ডাস্ট্রি হয়ে উঠছে কি?

তানভীরের কাছেও জানতে চাইলাম, নতুন ধারার সেলুন কবে থেকে চালু হয়েছে বলে মনে হয়? তিনি বললেন, 'আগে উচ্চবিত্ত লোকজন ফাইভ স্টার হোটেল বা গুলশানের কোনো সেলুনে চুল কাটাতেন। সেগুলোতে স্টাইল অনেক না থাকলেও পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হতো বলেই মনে হয়। তবে এখন যেমন সব এলাকাতেই দু-চারটি আধুনিক সেলুন দেখেন, তার চল শুরু হয়েছে ৮-১০ বছর।'

আরো জানতে চাইলাম, আপনি তো হেয়ার ল্যাবের এমডি। আপনাদের ম্যানেজারও আছে। আছে সার্ভিস বয়। মনে হচ্ছে কর্পোরেট একটি ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছেন আপনারা। আসলেই কি তাই?

মিররের ম্যানিকিওর-প্যাডিকিওর ঘর। ছবি: সালেহ শফিক

তানভীর বললেন, 'এটার উত্তর সহজে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আগে কোনো সেলুনে এমডি থাকার ব্যাপারটি ভাবা যেত না। সাধারণত কাটাররা মিলে একটি দোকান দিত। এটি ছিল বংশপরম্পরার একটি পেশা। এখন আর তা নেই। এখন তিন-চারজন বন্ধু মিলে কোটি টাকা ইনভেস্ট করেও সেলুন দিচ্ছে। আমাদের একেকটি চেয়ারের দাম ৩৬ হাজার টাকা। কেনা হয়েছিল ২০১৫ সালে। তারপর ফেসিয়াল মেশিন আছে, স্কাল্প ক্লিনার আছে, স্পা বেড আছে। যত দিন যাচ্ছে ততই আপডেটেড ইন্সট্রুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে, বিনিয়োগও বাড়ছে। ফলে পরিবর্তন আসছে, তা বলা যায়। তবে ইন্ডাস্ট্রি হয়ে উঠতে আরো সময় লাগবে মনে হচ্ছে।'

সম্মান বেড়েছে

হেয়ার ল্যাবের একজন কাটার আলাউদ্দিন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার বাড়ি। ঢাকায় চুল কাটার কাজ শিখতে এসেছিলেন প্রায় ১০ বছর আগে। তখন তার বয়স পনেরোর কাছে। আক্তার আলী, যাকে এখন ঢাকার নাম্বার ওয়ান স্টাইলার বলা হয়, তার কাছে কাজ শেখার সুযোগ পান আলাউদ্দিন। তখনো তার নাম ছড়িয়ে পড়েনি। তবে আক্তার আলী এখন সুপারস্টার শাকিব খান, ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ও মেহেদী হাসান মিরাজের চুল দাড়ি কেটে সুখ্যাত। হেয়ার ল্যাবে কাজ করে আলাউদ্দিন সুখেই আছেন, কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান তানভীরের আচার-ব্যবহার ভালো। তিনি কর্মীবৎসল। 

বিরাট কোহলিসহ আরও তারকাদের চুল কেটে পরিচিতি পেয়ে গেছেন আক্তার আলী। ছবি: সংগৃহীত

আলাউদ্দিনের কাছে জানলাম, চুলের অনেক রকম স্টাইল দেখা যাচ্ছে ইদানীং। তার মধ্যে বেশি জনপ্রিয় ট্যাপার ও মুলেট। এর মধ্যে মিড ট্যাপার বা হাই ট্যাপারও আছে। গুগল করেই ক্যাটালগ পাওয়া যায়, তা দেখিয়ে ক্লায়েন্ট যেমন ফরমায়েশ দেন, কাটাররা তেমন তেমন কেটে দেন। আধুনিক সেলুনগুলোতে সাদা স্পটলাইট ব্যবহার করা হয় বেশি। এতে চুলের ওপর বেশি আলো ফেলা যায়, তাই কাটাও যায় নিখুঁতভাবে। কিছুদিন আগেও রোনাল্ডো, মেসি, বিরাট কোহলি কাট জনপ্রিয় ছিল, এখন কাটের জন্য তারকাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। গুগলে শত শত কাটের নমুনা আছে। 

মিররের ম্যানেজার চেম্বার। ছবি: সালেহ শফিক

আলাউদ্দিনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, নতুন নতুন কী যন্ত্রপাতি আপনারা ব্যবহার করছেন। তিনি ট্রিমারের নামই করলেন বেশি করে। নাকের চুলের জন্যও আলাদা নোজ ট্রিমার ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্লিপের ব্যবহারও বেড়ে গেছে অনেক বেশি। ক্ষুর আর কাঁচির ব্যবহার কমে গেছে, তবে ক্লায়েন্ট চাইলে তা-ও ব্যবহার করা হয়।

পরিবর্তিত পরিস্থিত আপনাদের জন্য কতটা ভালো হয়েছে? আলাউদ্দিন বললেন, 'সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সম্মান বেড়েছে। আমাদেরকে এখন লোকে বলে হেয়ার স্টাইলিস্ট। এ পেশাটাকে আগে মানুষ নীচু চোখে দেখত। এখন আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে কুণ্ঠা বোধ করি না।'

মিররের রেট চার্ট। ছবি: সালেহ শফিক

আপনারা হাইজিন (স্বাস্থ্যবিধি ) কতটা রক্ষা করে চলেন? তানভীর বললেন, 'এ ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স বলতে পারেন। আমরা প্রতি দুই দিনে টাওয়েল ক্লিন করি। নির্দিষ্ট সময় পরপর মেঝেতে পড়ে থাকা চুল পরিষ্কার করে নিই। কাটাররাও স্বাস্থ্যবিধি ফলো করেন।'

মিরর জেন্টস পারলার

মীরপুর বেনারসি পল্লীতে যাওয়ার মুখে মিরর। ম্যানেজারের চেম্বারটি সুন্দর করে সাজানো। চেম্বারে কাটারদের নাম লেখা ভিজিটিং কার্ড আছে। রেস্টুরেন্টের মেনু চার্টের মতো তাদের রেট চার্ট আছে। চারটি সেকশনে ভাগ করা ১,৫০০ বর্গফুটের এ জেন্টস পারলার। কাটিং সেকশনে সিট সংখ্যা ৯টি। প্রতিটি কেনা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে, জানালেন ম্যানেজার মাইনুদ্দিন। এগুলো নরম, আরামদায়ক, নমনীয়, উঁচু-নিচু করা যায় সহজে।

মাইনুদ্দিন বললেন, 'পারলারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন কাস্টমাররা রিলাক্স ফিল করেন। এখানে এসে যেন তাদের ক্লান্তি মোচন হয়।'

রোজ স্টাইলে ব্যবহৃত সব কসমেটিকসই খোলা তাকে রাখা হয় যেন কাস্টমার দেখতে পান কী উপকরণ দিয়ে তিনি ফেশিয়াল বা হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন। ছবি: সালেহ শফিক

মিররের কাটারদের ড্রেস কোড আছে। মাইনুদ্দিন নিজেই কসমেটিকস বা যন্ত্রপাতির স্টকগুলো পরীক্ষা করে কিনে আনেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ উপকরণগুলোই তারা ব্যবহার করেন। 

মিররের ওয়াসিম মূলত হেয়ারকাটার। তবে ফেস ওয়াশ, ফেসিয়ালও জানেন। দিনে কতজনকে সার্ভিস দিয়ে থাকেন, জানতে চাইলে ওয়াসিম বললেন, এটা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। কোনোদিন ১০ জন, কোনোদিন ১৫ জন। এপ্রিলের ১২ তারিখে তিনি উপার্জন করেছিলেন ৩ হাজার ৯০০ টাকা। সেলুন কর্তৃপক্ষকে তাদের ভাগ বুঝিয়ে দেওয়ার পর তিনি ১ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে বাসায় গিয়েছিলেন। সিনিয়র কাটার বলে তিনি শতকরা ৪৫ ভাগ হারে নিজের অংশ বুঝে নেন।

ওয়াসিমের কাছে জানতে চাইলাম, নতুন নতুন সার্ভিস যুক্ত হওয়ার কারণ কী? কাস্টমাররা কী কারণে এসব সার্ভিস নিয়ে থাকেন? ওয়াসিম বললেন, 'নতুন সার্ভিসগুলো কেবল সৌন্দর্য বাড়ায় না, ত্বকেরও যত্ন নেয়। এগুলোর মাধ্যমে ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল হয়। ত্বক যে দেহের একটি অঙ্গ, এটি আগে কম মানুষই মনে রাখত। কাস্টমাররা আগের চেয়ে এখন বেশি স্বাস্থ্যসচেতন, তাই এসব সার্ভিস নিয়ে থাকেন।' 

রোজ স্টাইলের নাম রাখা হয় টাইটানিকের রোজ থেকে। ছবি: সালেহ শফিক

মিররে ক্যাটালগ হেয়ার কাট ২০০ টাকা, শেইভ ১০০ টাকা, হেয়ার ট্রিটমেন্ট ৪৫০-১৫০০ টাকা, ফেসিয়াল ৬০০-২০০০ টাকা, ম্যানিকিউর ৪৫০ টাকা, বর সাজানো স্পেশাল প্যাকেজ সাড়ে ৮ হাজার টাকা। 

আগে পারলার বলতে শুধু মেয়েদের সেলুনকেই বোঝাত, ছেলেদেরও যে ম্যানিকিওর, পেডিকিওর দরকার, তা বেশিরভাগ লোকের জানা ছিল না। এখন বদলাচ্ছে সময়, তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে জেন্টস পারলারগুলোও। বান থাই, হেয়ার পোর্ট, মেনস প্লানেট, পারসোনা অ্যাডামস, ট্রুফিট অ্যান্ড হিল, রেজরস অ্যান্ড সিজরস, স্টুডিও মেনজ, হেডশটসহ আরো বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানের জেন্টস পারলার আছে এখন ঢাকায়। দুঃখ শুধু জীবনদা এসবের কিছুই দেখে যেতে পারলেন না। এ পরিবর্তন দেখলে সম্ভবত তিনি খুশিই হতেন। 

Related Topics

টপ নিউজ

সেলুন / স্যালুন / সেলুনের বিবর্তন / ফিচার / ফ্রাইডে ফিচার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা
  • ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলা, নিহত অন্তত ৩, আহত কয়েক ডজন; ইরানেও চলছে হামলা
  • বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প
  • ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার
  • আলীকদমে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম গ্রেপ্তার
  • ইরান হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলকে শতাধিক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র

Related News

  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!
  • যে বেলুনের সাথে ছবি তুলতে গুনতে হয় টাকা!

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা

2
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলা, নিহত অন্তত ৩, আহত কয়েক ডজন; ইরানেও চলছে হামলা

3
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প

4
বাংলাদেশ

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার

5
বাংলাদেশ

আলীকদমে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম গ্রেপ্তার

6
আন্তর্জাতিক

ইরান হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলকে শতাধিক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net