ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন মুশফিক

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পর থেকেই আলোচনায় বাংলাদেশ দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগামী বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় তা থাকবেন কিনা বা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হবে কিনা; গত কিছু দিনে বেশ কবার এমন প্রশ্ন শুনতে হয়েছে বিসিবির কর্তাদের। এটা নিয়ে যখন আলোচনা চলমান, তখনই ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন মুশফিক। এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, গত কয়েক সপ্তাহ তার জন্য কঠিন সময় ছিল। এই সময় পেরিয়ে নিজের নিয়তি বুঝতে পেরেছেন তিনি। আর এ কারণেই অবসরের সিদ্ধান্ত।
অবসরের ঘোষণায় মুশফিক লিখেছেন, 'আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে আজ আমি আমার অবসর ঘোষণা করছি। সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক মঞ্চে আমাদের অর্জন খুবই সামান্য ছিল, তবে একটা জিনিস নিশ্চিত করে বলতে পারি; যখনই দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে নিজের শতভাগের বেশি উজাড় করে দিয়েছি।'
'শেষ কয়েকটা সপ্তাহ আমার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং এরপর বুঝতে পেরেছি আমার শেষটা এখানেই। মহান আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন এবং সকলকে সৎ ঈমান দান করুন। পরিশেষে, আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার পরিবার, বন্ধু এবং আমার ভক্তদের; যাদের জন্য শেষ ১৯টা বছর আমি ক্রিকেট খেলেছি। জাযাকাল্লাহ খাইর।' লেখেন তিনি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন মুশফিক, আজ নিলেন ওয়ানডে থেকে। এখন থেকে শুধুই টেস্ট খেলবেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। যদিও ফরম্যাটটি নিয়ে নিজের কোনো পরিকল্পনার কথা অবসরের ঘোষণায় জানাননি তিনি।
মুশফিকের পারফরম্যান্সে ভাটার টান স্পষ্ট। দলের ভরাডুবির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশনে তিনিও ছিলেন বিবর্ণ। দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন তিনি। ভারতের বিপক্ষে দলের দুঃসময়ে উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই আউট হন মুশফিক, সাজঘরে ফেরেন শূন্য হাতে। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হাসেনি তার ব্যাট, ২ রান করেই থামেন। দুই ম্যাচে তার রান মাত্র ২। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার আউটের ধরনও ছিল দৃষ্টিকটু। এই ফরম্যাটে মুশফিক সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেন দুই বছর আগে। ১০০ রানের ইনিংসটি খেলেন ২০২৩ সালের মার্চে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
তবে এই ফরম্যাটে তার পথচলা দারুণ ছিল, অনেক সাফল্যই যোগ হয়েছে তার ১৯ বছরের দীর্ঘ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে। ২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। এর পর থেকে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭৪টি ম্যাচ খেলেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৬.৪২ গড় ও ৭৯.৭০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৭ হাজার ৭৯৫, যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সেঞ্চুরিতেও যৌথভাবে দ্বিতীয় সেরা তিনি, সাকিব আল হাসানেরও ৯টি সেঞ্চুরি। ১৪টি সেঞ্চুরি নিয়ে সবার উপরে তামিম ইকবাল।