যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে না: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে না। তিনি জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসি সফরে এসে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।
বুধবার ট্রাম্প বলেন, 'আমি খুব বেশি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে চাই না।' তিনি আরও বলেন, 'এই দায়িত্ব ইউরোপকেই নিতে হবে।'
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগেই জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের একটি 'প্রাথমিক' অর্থনৈতিক চুক্তি প্রস্তুত রয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, ওই চুক্তিতে এখনো কোনো মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষ করার জন্য কিয়েভের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানান, ওয়াশিংটনে এই সপ্তাহের শেষের দিকে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের ওপর চুক্তিটি পুরোপুরি নির্ভর করতে পারে।
তিনি বলেন, 'এই চুক্তিটি বড় সফলতা হতে পারে, আবার নীরবে হারিয়েও যেতে পারে। আমাদের এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যকার আলোচনার ওপরই এই সফলতা নির্ভর করছে।'
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রতিদান হিসেবে এই প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে।
হোয়াইট হাউজ কিয়েভের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ, প্রতিরক্ষা এবং পারমাণবিক শিল্পে ব্যবহৃত তার বিশাল খনিজ মজুতের ওপর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারে।
এই চুক্তি ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ট্রাম্পের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন পাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
কিয়েভে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই কাঠামোগত অর্থনৈতিক চুক্তি পূর্ণ চুক্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ, যা ইউক্রেনের সংসদে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
বুধবার, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম ইউএস মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প জেলেনস্কির সফরের ঘোষণা দেন এবং চুক্তিটিকে 'একটি খুব বড় চুক্তি' হিসেবে প্রশংসা করেন।
ট্রাম্প বলেন, 'পূর্ববর্তী প্রশাসন আমাদের একটি খুব খারাপ অবস্থানে ফেলেছিল। কিন্তু আমরা এমন একটি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে আমরা টাকা ফেরত পাব এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক টাকা পাব।'
ট্রাম্প ইউক্রেনের ন্যাটো সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন। তিনি বলেন, 'ন্যাটো ভুলে যান। আমি মনে করি, সম্ভবত এটি সেই কারণ, যা পুরো ঘটনা শুরু করেছে।'
খনিজ সম্পদ চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করে এবং রুশ নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদে মার্কিন বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে ক্রেমলিনও ট্রাম্পের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক বিরোধ নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠক করবেন, যা একটি বিস্তৃত সংলাপের অংশ। উভয় পক্ষই ইউক্রেন যুদ্ধে শেষ করার জন্য এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।