জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পাকিস্তান-আফগানিস্তান, নিহত অন্তত ১১

মঙ্গলবার রাতে ৬.৬ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান আর ভারতের একাংশ। এতে দুই দেশের অন্তত ১১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানের ইমার্জেন্সি সার্ভিসের মুখপাত্র বিলাল ফাইজি বার্তা সংস্থা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, দেশটির উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকা অঞ্চলে ১০০ জনেরও বেশি লোককে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ফাইজি এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ভবনের ছাদ ধসে নয়জন নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে আহত হয়েছে আরও কয়েক ডজন লোক। এছাড়াও কম্পনের ফলে কিছু পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়, যান চলাচল ব্যাহত হয়।
আফগানিস্তানে জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য তালেবান নিযুক্ত মুখপাত্র শরাফত জামান আমার বলেছেন, ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে কমপক্ষে ২ জন মারা গেছে এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে।
"দুর্ভাগ্যবশত ভূমিকম্পটি এত শক্তিশালী ছিল যে আমরা আশংকা করছি হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে", যোগ করেন তিনি।
এদিকে ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের জেরে দিল্লিসহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশেও অনুভূত হয়েছে জোরালো কম্পন। অনেকের দাবি, দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় কম্পনের মাত্রা এতটাই ছিল যে রীতিমতো পা কাঁপতে থাকে।
দেশটির জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফে জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টা ১৭ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে আফগানিস্তানের ফৈজাবাদের দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্বে ভূমিকম্প হয়েছে। উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৫৬ কিলোমিটার গভীরে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৬। অর্থাৎ সেই ভূমিকম্প 'তীব্র' শ্রেণির মধ্যে পড়ছে।
তবে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিয়োসায়েন্সের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভূমিকম্পের তীব্রতা আরও বেশি ছিল। তাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ এলাকায় ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভূপৃষ্ঠের ১৮৪ কিলোমিটার গভীরে ছিল বলে জানানো হয়।
ভারতে অনুভূত কম্পন
দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর-সহ উত্তর ভারতের একাংশে জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে। দিল্লিতে থাকা 'হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা'-র প্রতিনিধির বয়ান অনুযায়ী, যখন কম্পনটা অনুভূত হল, তখন সবকিছু কেঁপে উঠল। পা পুরো কাঁপছিল। মাথা ঘুরছিল। বাকিদেরও একই অবস্থা হয়। সবাই দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। দিল্লিতে প্রায়ই কম্পন অনুভূত হলেও এরকম অনুভূতি কখনও হয়নি।
দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে 'হিন্দুস্তান টাইমস'-র সাংবাদিকদের পাঠানো ভিডিওতে দেখা গেছে যে, কম্পন অনুভূত হওয়ার পর আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন মানুষজন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের চোখেমুখে আতঙ্ক ধরা পড়েছে। সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, কম্পনের পর উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের মতো এলাকায় মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন।