ইরান হামলা নিয়ে মূল্যায়নের জেরে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করল পেন্টাগন

ইরানে মার্কিন হামলার প্রভাব নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে হোয়াইট হাউসের তিরস্কারের শিকার হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহের মাথায় পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফরি ক্রুস আর যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (ডিআইএ) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন না। আরও দুজন সিনিয়র সামরিক কমান্ডারকেও অপসারণ করেছে পেন্টাগন।
তবে এই বরখাস্তের বিষয়ে প্রতিরক্ষা দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।
গত জুনে ফাঁস হওয়া ডিআইএর একটি প্রতিবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই মূল্যায়নে প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলায় 'সীমিত ক্ষতি' হয়েছে; অথচ ট্রাম্পের দাবি ছিল এর সম্পূর্ণ উল্টো।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, ইরানে চালানো হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে। হোয়াইট হাউস তখন সংস্থাটির মূল্যায়নকে 'পুরোপুরি ভুল' বলে আখ্যা দেয়।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো 'সম্পূর্ণ ধ্বংস' করে দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে 'ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক হামলাকে হেয় করার চেষ্টার' অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি।
ওই সময় ন্যাটো সম্মেলনে হেগসেথ বলেছিলেন, প্রতিবেদনটি 'দুর্বল গোয়েন্দা তথ্যের' ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল এবং এফবিআই এর তথ্য ফাঁসের বিষয়টি তদন্ত করছে।
ক্রুসের বরখাস্তের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট।
পেন্টাগনের অধীন ডিআইএ সামরিক অভিযানে সহায়তা দিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালায়। সংস্থাটি বিপুল পরিমাণ প্রযুক্তিগত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করলেও সিআইএর মতো অন্যান্য সংস্থা থেকে এটি আলাদা।
শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, হেগসেথ ইউএস নেভাল রিজার্ভের প্রধান ও নেভাল স্পেশাল ওয়ারফেয়ার কমান্ডের কমান্ডারকেও অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এর আগেও ট্রাম্প এমন অনেক কর্মকর্তাকে অপসারণ করেছেন, যাদের বিশ্লেষণ প্রেসিডেন্টের মতের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করা হয়েছে।
গত জুলাইয়ে চাকরির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশের পর ট্রাম্প 'অবিলম্বে' শ্রম পরিসংখ্যান কমিশনার এরিকা ম্যাকএন্টারফারকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে এপ্রিলে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) পরিচালক জেনারেল টিমোথি হগ ও হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের আরও এক ডজনের বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হ্যাগসেথও পেন্টাগন থেকে বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বিমানবাহিনীর জেনারেল সি কিউ ব্রাউনকে বরখাস্ত করেন। তার সঙ্গে আরও পাঁচজন অ্যাডমিরাল ও জেনারেলকেও বরখাস্ত করা হয়েছিল।