মাশরাফিদের হারিয়ে ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

হার দিয়ে এবারের বিপিএল শুরু হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। পরের দুই ম্যাচেও সঙ্গী হয় হার। টানা তিন হারে কোণঠাসা অবস্থা। এর পরের গল্পটা অবশ্য পুরোপুরি ভিন্ন। ধ্বংস্তূপ থেকে কিভাবে ফিনিক্স পাখির মতো উড়াল দিতে হয়, সেটা করে দেখিয়েছে দলটি। ওই তিন হারের পর কেবল জয়ের মালাই গেথে গেছে দলটি, তাদেরকে হারের স্বাদ দিতে পারেনি কোনো দলই। পারলো না মাশরাফি বিন মুর্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্সও। রেকর্ড টানা ১০ জয় তুলে নিয়ে বিপিএলের ফাইনালে উঠে গেল কুমিল্লা।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিপিএলের ফাইনালে উঠলো দলটি। আর ফাইনালে উঠলে কুমিল্লা কখনোই হারে না, আগের তিনবারই শিরোপা ওঠে তাদের ঝুলিতে। হারলেও ফাইনালে ওঠার পথ বন্ধ হয়ে যায়নি সিলেটের। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লড়বে মাশরাফির দল।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে সিলেট। শুরুর ধাক্কায় এলোমেলো হয়ে যাওয়া দলকে মাশরাফি ও নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাট হাতে পথ দেখালেও পরের ব্যাটসম্যানরা অধিনায়কের পথে হাঁটতে পারেননি। পরে কেবল মুশফিকুর রহিম কিছু রান করেন, ১৭.১ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় সিলেট। ছোট লক্ষ্যে বেগ পেতে হয়নি কুমিল্লাকে। সুনিল নারিনের ঝড়ের পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেলেদের ব্যাটে ২০ বল হাতে রেখেই জিতে যায় তারা।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা খুব বেশি ভালো হয়নি কুমিল্লার। দলীয় ৩২ রানে ওপেনার লিটন কুমার দাসকে হারায় তারা। ১০ বলে ৭ রান করে থামেন তিনি। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা সুনিল নারিনও বেশি পথ পাড়ি দিতে পারেননি, কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফেরেন ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার। ফেরার আগে খুনে ব্যাটিংয়ে ১৮ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন।
১০ রান পর জনসন চার্লসও ফিরলে চাপ বাড়ে কুমিল্লার। যদিও দলকে চাপ বুঝতে দেননি অধিনায়ক ইমরুল ও মোসাদ্দেক। কুমিল্লাকে ৭৩ রান পর্যন্ত পৌঁছে দেন তারা। ইমরুল ১৫ বলে ১৩ রান করে আউট হন। এরপর মোসদ্দেক ও মঈন আলী ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলকে আরও অনেকটা এগিয়ে দেন। মঈন ১৩ বলে ২১ রান করে থামেন। বাকি কাজ সারেন মোসাদ্দেক ও রাসেল। মোসাদ্দেক ২৭ বলে ২৭ ও রাসেল ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের রুবেল হোসেন ৩টি এবং তানজিম হাসান সাকিব ও শফিকুল্লাহ গাফারী একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ২৯ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৮ রান করেন। এই ইনিংসে আসরের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪০০ রান পূর্ণ করেন তিনি। ১৩ ম্যাচে তার রান ৪১২। অধিনায়ক মাশরাফি ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৬ রান করেন। এ ছাড়া মুশফিক ২৯ ও জর্জ লিন্ডে ১৩ রান করেন।
দলটির বাকি ৭ ব্যাটসম্যানের কেউ-ই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। কুমিল্লার স্পিনার ৪ ওভারে ৩০ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন। ৩ ওভারে ২ রানে ২টি উইকেট নেন রাসেলও। ২ উইকেট শিকারে মুস্তাফিজুর রহমানের খরচা ২৫ রান। একটি করে উইকেট নেন মঈন, নারিন ও মুগ্ধ।