Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
July 22, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JULY 22, 2025
এই স্থবির নগরীতে ভিআইপিরাই চলবেন, বাকি সবে ‘ফুক্কা’

মতামত

শাহানা হুদা রঞ্জনা
17 September, 2022, 02:40 pm
Last modified: 17 September, 2022, 02:48 pm

Related News

  • সুফল নিয়ে সংশয়, তবুও বিআরটি প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে আরও ৫৫ শতাংশ 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট; ভোগান্তি
  • টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও লাঙ্গলবন্দ সেতু, ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
  • সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা
  • ঈদের ছুটি শেষে ঢাকামুখী মানুষের ঢল, পথে পথে ভোগান্তি

এই স্থবির নগরীতে ভিআইপিরাই চলবেন, বাকি সবে ‘ফুক্কা’

যানজটে দাঁড়িয়ে যখন এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ কানে আসে, তখন মনেহয় আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই এ্যাম্বুলেন্সটাতে তো আমার সন্তান, মা, বাবা, প্রতিবেশি বা বন্ধু যে কেউ থাকতে পারতো, যাকে এখুনি হাসপাতালে নিতে হবে। অথচ নিতে পারছিনা, দাঁড়িয়ে আছি পথের মাঝখানে, পুরো রাস্তা অবরুদ্ধ- তখন রোগীর ভাগ্য আল্লাহর উপরেই ছেড়ে দিয়ে চুপ করে থাকি। মনে মনে বলি “রাখে আল্লাহ মারে কে”।
শাহানা হুদা রঞ্জনা
17 September, 2022, 02:40 pm
Last modified: 17 September, 2022, 02:48 pm
অলংকরণ- টিবিএস

সংস্কৃতে একটি শ্লোক শুনেছিলাম দাদার কাছে, এতে বলা হয়েছিল কোন কোন ধরনের মানুষকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। এরমধ্যে আছেন রোগী, বরযাত্রী ও সম্মানিত জন অর্থাৎ ভিআইপিদের। সেই শ্লোক চালু হওয়ার শত শত বছর পরে এসে আমরা দেখতে পারছি শুধু ভিআইপিরাই এখন এই স্থবির ঢাকা শহরে চলাচলের রাস্তা পাচ্ছেন, বাকিরা সবাই ফুক্কা।

যানজটে দাঁড়িয়ে যখন এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ কানে আসে, তখন মনেহয় আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জানি এই অনুভূতি সবারই হয়। সাথে সাথে মনেহয় এই এ্যাম্বুলেন্সটাতে তো আমার সন্তান, মা, বাবা, প্রতিবেশি বা বন্ধু যে কেউ থাকতে পারতো, যাকে এখুনি হাসপাতালে নিতে হবে। অথচ নিতে পারছিনা, দাঁড়িয়ে আছি পথের মাঝখানে। এরকম সাইরেন শুনলে ডানে তাকাই, বাঁয়ে তাকাই, দেখার চেষ্টা করি কোথাও কোন পথ আছে কিনা। নাহ পুরো রাস্তা অবরুদ্ধ। তখন রোগীর ভাগ্য আল্লাহর উপরেই ছেড়ে দিয়ে চুপ করে থাকি। মনে মনে বলি "রাখে আল্লাহ মারে কে"।

একই অবস্থা ফায়ার ব্রিগেড বা দমকল বাহিনীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বহুবছর আগে বিদেশে বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলাম ফুটপাতের উপর দিয়ে ফায়ার এলার্ম বাজিয়ে দমকল বাহিনীর গাড়ি ছুটে যাচ্ছে আগুন নেভানোর জন্য। খুব অবাকও হয়েছিলাম এইভাবে সবকিছু উপেক্ষা করে দমকল বাহিনীকে ছুটে যেতে দেখে। সেই ফুটপাতগুলোর উচ্চতা রাস্তা লাগোয়া হওয়ায়, ফুটপাতে কোন দোকান বা হকার না থাকায়, ইট-বালু, সুড়কি না থাকায় দমকল বাহিনীর গাড়ি উঠে যেতে পেরেছিল।

কিন্তু আমাদের দেশে এ এক অসম্ভব ব্যাপার। কাজেই আগুন লাগলে, তা বাড়তে বাড়তে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও ফায়ার ব্রিগেড গিয়ে নাও পৌঁছাতে পারে। ঢাকা শহরের যেখানেই আগুন লাগে, একটাই অভিযোগ- দমকল বাহিনী সময়মতো পৌঁছাতে পারে নাই। অবশ্য পৌঁছাতে পারাটা সম্ভবও না। আগুন লাগলেও তাই বলতে হয়, "রাখে আল্লাহ মারে কে"।

যেখানে এ্যাম্বুলেন্স ও দমকল বাহিনীর গাড়ি রাস্তা ফাঁকা পায় না, সেখানে বিয়ের বরকে রাস্তা ছেড়ে দেয়ার তো কোন প্রশ্নই আসেনা। সময়মতো বিয়ে করতে চাইলে সন্ধ্যার বিয়ে, দুপুরে রওনা দিতে হবে। নয়তো মিরপুর এলাকার এক বিয়েতে গিয়ে সবাই যখন পান চিবুতে চিবুতে ১১ টা নাগাদ বের হয়ে যাচ্ছিল, তখন সানাই বাজিয়ে বরের গাড়ি এসে দাঁড়ালো দুয়ারে। সেগুনবাগিচা থেকে মিরপুর আসতে সময় লেগেছিল ৪ ঘণ্টা। কনের দুলাভাই বলেছিলেন, ভাগ্যিস বিয়েটা সকালেই পড়িয়ে রেখেছিলাম, নয়তো অবস্থা কেরোসিন হতো।

কিন্তু সংস্কৃতের সেই শ্লোক এখনো শুধু ভিআইপিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য থেকে গেলো। জাহাঙ্গীর গেটে এক শনিবারে প্রায় ১ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম কোন একজন বড়মাপের ভিআইপি ক্যান্টনমেন্টে এসেছিলেন এবং এখন উনি সেখান থেকে বের হবেন- সেজন্যে। পুরো রাস্তায় গাড়ি চলাচলতো বন্ধই, বন্ধ পথচারি চলাচলও। একটা হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল সেখানে। বিশেষ করে কেন একজন পরীক্ষার্থীকে আটকে দেওয়া হয়েছিল- এই নিয়ে। তাকে হেঁটেও যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। কারণ কর্তব্যরত ট্র্যাফিক বারবার বলছিলেন 'আমার উপর নির্দেশ নাই'।

এখন প্রশ্নটা হচ্ছে কোন কোন ক্ষেত্রে নির্দেশ না থাকলেও মানুষ বা গাড়ি ছাড় পেতে পারে এই চরম ভিআইপি মুভমেন্টের 'কঠোর নিয়ম' থেকে? এরওতো একটা বিধিব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। যেমন ঐ ছেলেটি পরীক্ষা দিতে যেতে পারলো না। কোন রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স থাকলে কী হতো? অথবা দমকল বাহিনীর গাড়ি? সম্মানিত ব্যক্তি তো অবশ্যই একটা আলাদা সুবিধা পাবেন, তাই বলে জনগণের ১২টা বাজিয়ে নয়।

সেদিন পদ্মা ব্রীজ অভিমুখে যাওয়ার সময় একজন ভিআইপির গাড়ি আমাদের সামনে ছিল। যেহেতু ওনার গাড়ির পেছনে পুলিশ বাহিনী ছিল এবং তারাই স্কট করে নিয়ে যাচ্ছিল, তাই আমাদের গাড়িটা বাঁ দিয়ে ঐ গাড়িকে ওভারটেক না করেই পেছনে পেছনে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে একটি গাড়ি আমাদের পাশে ব্রেক করলো এবং দানব চেহরার এক ড্রাইভার গালি দিয়ে আমাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বললো। কারণ এই গাড়িতে ভিআইপির পরিবারের সদস্যরা রয়েছে, তাই তাদেরও বহরের সাথে যেতে হবে। বিশেষ কারণে তাদের গাড়িটা দলছুট হয়ে গিয়েছিল। এখানে আমাদের দোষটা কোথায়? আমাদের কেন ভিআইপির আত্মীয়দের চালকের ধমক খেতে হলো?

আরেকবার প্লেনে রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফিরছিলাম। বিমানের দ্বিতীয় সিটে আমার জায়গা হলো। সামনের দুটি সিট খালি থাকলেও বিমানটি ভরে গিয়েছিল। কিন্তু সময়ের ১০/১৫ পরেও উড়োজাহাজ ছাড়ছিল না। যাত্রীরা উশখুশ শুরু করলে জানানো হলো একজন ভিআইপির জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। অবশেষে ভিআইপি এলেন স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধু সমেত। আমাকে আমার সিট থেকে তুলে দিয়ে ভিআইপির পুত্র ও পুত্রবধুকে বসানো হলো। আমি খুবই বিরক্ত হয়ে দু'চারটা কথা বললেও সরে গেলাম। বুঝলাম কর্তৃপক্ষের হাত পা বাঁধা।

ভিআইপিরা যানজটে কিছুসময় আটকা থাকলে কী হতে পারে এর নজির আমরা পেয়েছি পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি সাহেবের যানজটে আটকা পড়ার ঘটনায়। তিনি কোম্পানীগঞ্জ এলাকা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাওয়ার সময় কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল এলাকায় তীব্র যানজটের কবলে পড়েন। প্রায় ৩০ মিনিট যানজটে আটকা থাকার পর বিষয়টি তিনি কুমিল্লা পুলিশ সুপারকে জানান। খবর পেয়ে সাদাপোশাকে মহাসড়কে যান মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাসিম।

কিন্তু ততক্ষণে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আদেশ জারি করা হয়। অর্থাৎ ওসি সাহেব শাস্তি পেয়ে গেছেন ইতোমধ্যে। ভিআইপির সময়ের মূল্য ওসি সাহেব বুঝতে পারেননি, সাধারণ মানুষের মূল্যহীন সময়ের মতো মনে করেছিলেন। পত্রিকায় দেখলাম, মুরাদনগর থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি আবুল হাসিম বলেছেন, 'ডিআইজি স্যার ওই পথে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন, এমন কোনো তথ্য আমার কাছে ছিল না। পরবর্তী সময়ে আমি খবর পেয়ে যানজট নিরসনে যাই। এরপর আমি চিঠি পাই'।

এই তিলোত্তমা ঢাকা শহরে আমরা যারা বাধ্য হয়ে থাকি, তারা নাস্তানাবুদ ও নাকাল শব্দ দুটির সাথে খুবই পরিচিত। কারণ সকাল থেকে রাত অব্দি এই নাকাল হওয়ার ভেতর দিয়েই আমাদের যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে শব্দদূষণ বা গাড়িন হর্নের শব্দে জীবন ওষ্ঠাগত। শুধু যে রাস্তায় বের হলেই এই ভোগান্তি, তা নয়। ঘরে বসে থাকলেও সকাল ৭ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত অবিরাম গাড়ির হর্ন, সাইরেন, সাইলেন্সার পাইপবিহীন মটর সাইকেলের শব্দ, মানুষের চিৎকার, চেঁচামেচি, ঝগড়া আরা অনেককিছু মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে।

এই যে বিনা কারণে যানজটে দাঁড়িয়ে থেকে হর্ণ বাজানোর অভ্যাস, এটা কি কোনভাবেই বন্ধ করা যায় না? এর সাথে যোগ হয়েছে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়ির উচ্চশব্দযুক্ত হর্ণ। যা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে তাদের চালক বাহাদুররা ব্যবহার করে। এমনকি ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়েও তারা এই হুইসেল ব্যবহার করে। এটা বাজানোর কোন নিয়ম নীতি কি আছে?

শব্দদূষণ ঢাকার মানুষকে শ্রবণ প্রতিবন্ধী করে তুলছে। শিশুদের জন্য যা আরো ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনছে। সকাল থেকে রাত যদি অস্বাভাবিক শব্দের মধ্যে মানুষকে অবস্থান করতে হয়, তাহলে তাদের শ্রবণ প্রতিবন্ধী না হয়ে আর কী উপায় আছে?

সকাল ৮ থেকে ৩ টা পর্যন্ত সরকারি অফিসের সময়সূচি করা হয়েছে, যেন যানজট কম হয়। কিন্তু আদতে হচ্ছেটা কী? কেউ কি খোঁজ নিয়ে দেখছেন? যদি সরকারি অফিস ৮ টা থেকে হয়, তাহলে আমরা যারা ৮টা বা পৌনে আটটায় বের হই সাড়ে ৮ টা বা ৯টায় অফিস ধরার জন্য, তারা কেন দেখি অনেক সরকারি স্টিকার লাগানো ও হুইসেল বাজানো গাড়ি আসাদগেট, মোহাম্মদপুর বা শ্যামলী এলাকায়? এনারা তাহলে কখন অফিসে পৌঁছাবেন? আমাদের মতো প্যাসেঞ্জারদের ধারণা নতুন অফিস টাইম অকার্যকর হয়েছে।

১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলো। ঐদিনই প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যে গেলেন। উনাকে বিদায় জানাতে আরো ১০০ ভিআইপি বিমানবন্দরে গেলেন। বিএনপি বেশ কয়েকটি জায়গায় সংগ্রাম কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। এয়ারপোর্ট-উত্তরা সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের বেহাল অবস্থা। ফলে ঐদিন ট্র্যাফিক সামলাতে পুলিশ বাহিনীকে গলদঘর্ম হতে হয়েছে।

অনেক পরীক্ষার্থী ১১ টায় পরীক্ষা বলে ৭ টায় বাসা থেকে বের হয়েছে। অনেকে রাতে কেন্দ্রের আশেপাশে হোটেলে অবস্থান নিয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবারের ট্র্র্যাফিক বিপর্যয় দেখে মানুষজন ১৫ তারিখ বৃহস্পতিবার কী হতে পারে, এই ভেবে রীতিমত ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এই আসলে আমাদের প্রতিদিনের চিত্র।

ঢাকা শহরে মানুষ বাড়ছে তো বাড়ছেই। সরকারি হিসেবে সাড়ে ৪ কোটি হলেও, হয়তো মূল জনসংখ্যা আরো বেশি, অর্থাৎ ৫ কোটিরও বেশি। সেইসাথে বাড়ছে গাড়ি। কিন্তু সড়ক বাড়ছে না। ঢাকায় সড়ক আসলে ২/৪ টাই। এরমধ্যে কোন একটাতে ঝামেলা বাঁধলে বাকিগুলোও অকার্যকর হয়ে পড়ে। এত মানুষ যখন ঢাকার মতো পরিকল্পনাহীন একটা শহরে এসে ভীড় করবে, যে যেভাবে পারে গাড়ি থামাবে, যেখানে-সেখানে পার্কিং করবে, তখন সেই শহর, মৃত শহর ছাড়া আর কী হবে। এছাড়া এলোপাথারি চলাচল, চালকদের দুর্বিনীত আচরণ, গণপরিবহণের কম সংখ্যা, তীব্র হর্ণ, রাস্তার অভাব, ভাঙ্গা রাস্তা ও পথচারিদের নিয়ম না মানার খেসারতো আমাদের সবাইকে দিতে হবে, দিচ্ছিও।

এর খেসারত হিসেবে যাত্রীরা ফ্লাইট মিস করছেন, ট্রেন মিস করছেন, অফিসে লেট হচ্ছে, মিটিংয়ে সময় মতো পৌঁছাতে পারছেননা, ইন্টারভিউ থাকলে সময়মতো হাজির হতে পারছেননা। এই যে সবকিছু মিলে একটা গতিজড়তা তৈরি হয়েছে, এর থেকে নিস্তার কী?

ঢাকা থেকে উত্তর বা দক্ষিণাঞ্চল যেদিকেই বের হবেন বা ঢুকবেন, অবশ্যম্ভাবি ভীড়ে পড়তেই হবে। প্রবেশমুখেই নষ্ট হবে ৩/৪ ঘণ্টা। নৈমিত্তিক এই নিপীড়ন নিয়ে বেঁচে থাকাটা যেন ঢাকাবাসীর জানের উপরে উঠে গেছে। কিন্তু আয়, পড়াশোনা, চাকুরির সুযোগ, ব্যবসা, মন্ত্রণালয়ের কাজ ইত্যাদি কারণে মানুষকে ঢাকামুখী হতেই হচ্ছে।

ঢাকায় ১ ঘণ্টার কোন কাজের জন্য বের হলে মিনিমাম ৪ ঘণ্টা রাস্তায় থাকতেই হবে। অসুস্থ কাউকে ডাক্তারের চেম্বারে নিতে হলে, কোনো শিশুকে নিয়ে কোথাও যেতে হলে মানুষের যে ভোগান্তি হয় তা অস্বাভাবিক। অধিকাংশ মানুষকে অফিসে আসার আগেই জ্যামে বসে থেকে, গরমে ঘেমে নেয়ে, পুরো ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে হয়, কাজের এনার্জি শেষ হয়ে যায়।

দিন দিন অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে একটা সময়ে মনে হয় শহরটা থেমে গেছে। অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোঃ হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলছেন, "ঢাকা শহরের হৃৎস্পন্দন ভয়াবহভাবে কমে গেছে। গাড়ির ঘণ্টা প্রতি গতি, এটা একজন সুস্থ মানুষের হাঁটার গতির চাইতেও কম।"  

কয়েকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকা বসবাসের জন্য অত্যন্ত অযোগ্য নগরী। এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকাতে বাস করা সবচাইতে স্ট্রেসফুল বা মানসিক চাপের ব্যাপার। এর একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল ঢাকার যানজটকে। এই রিপোর্ট বের হয়েছিল ২০১৭ তে। ২০২২ এসে অবস্থাতো আরো বেগতিক হয়েছে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি যে ভয়াবহ তা বারবার বিভিন্ন রিপোর্টে বলা হচ্ছে। নাক, কান, গলা, শ্বাসতন্ত্র, মেদ-ভুড়ি, পা, কোমড় সবকিছু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন বাতাসে অতিমাত্রায় সীসা বিশেষ করে শিশুদের বেশি আক্রান্ত করে। এতে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে এবং স্নায়ুবিক ক্ষতি হতে পারে। এতে শিশুদের আই-কিউ কমতে থাকে। তার মানে আমরা কিন্তু কম আই-কিউ, কম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন ডা. বেননুর।

বছর পনের আগে ঢাকার যানজটের কারণে তৈরি স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেছিল বাংলাদেশ লাঙ ফাউন্ডেশন এবং সরকারের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ প্রিভেনশন অ্যান্ড সোশাল মেডিসিন। সেই গবেষণা দলে ছিলেন কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর। ওনার কথা আজকে এসে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের মানুষের আইকিউর লেভেল এখন ১৪৯ তম, যা আফগানিস্থান ও পাকিস্থানের চাইতেও নিচে।

সাধারণ মানুষের আইকিউ কমছে কমুক। সাধারণ মানুষের ভবিষ্যত প্রজন্ম আরো বোকা হবে হোক, এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভাবেন কিনা জানিনা। এর চাইতেও ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে যানজটের কারণে মানুষের রাগ, বিরক্তি, উদ্বেগ ও রক্তচাপ বাড়ছে। খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে মেজাজ। রাস্তায় চালকদের নিজেদের মধ্যে অথবা যাত্রীদের সাথে ঝগড়া, হাতাহাতি, মারামারি প্রতিদিনের ব্যাপার। কারণ যানজটে বসে থাকার কারণে সময়মতো কাজ করতে না পারা, গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারা, কাজের ক্ষতি, সময় নষ্ট, আর্থিক ক্ষতি এগুলো সব মিলে জীবন বিষময় হয়ে উঠেছে। রাস্তায় বের হওয়ার ব্যাপারটাই ক্রমশ ভীতিপ্রদ হয়ে উঠছে।

  • লেখক: সিনিয়র কেঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

 

Related Topics

টপ নিউজ

শাহানা হুদা রঞ্জনা / যানজট / ঢাকার যানজট / ভিআইপি / ট্রাফিক আইন / আইকিউ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ল উত্তরার বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য
  • মাইলস্টোনে আহত ছোট বোনকে একাই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এল কলেজপড়ুয়া রোহান
  • জামিন দিলে সব টাকা শোধ করে দেব, পালিয়ে যাব না: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম
  • ৬ দফা দাবিতে মাইলস্টোন কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
  • মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা সেই শিক্ষক ১০০% দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন
  • সাবেক আইজিপি বেনজীরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিলামে তোলা হচ্ছে

Related News

  • সুফল নিয়ে সংশয়, তবুও বিআরটি প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে আরও ৫৫ শতাংশ 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট; ভোগান্তি
  • টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও লাঙ্গলবন্দ সেতু, ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
  • সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা
  • ঈদের ছুটি শেষে ঢাকামুখী মানুষের ঢল, পথে পথে ভোগান্তি

Most Read

1
বাংলাদেশ

সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ল উত্তরার বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য

2
বাংলাদেশ

মাইলস্টোনে আহত ছোট বোনকে একাই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এল কলেজপড়ুয়া রোহান

3
বাংলাদেশ

জামিন দিলে সব টাকা শোধ করে দেব, পালিয়ে যাব না: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম

4
বাংলাদেশ

৬ দফা দাবিতে মাইলস্টোন কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

5
বাংলাদেশ

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা সেই শিক্ষক ১০০% দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন

6
বাংলাদেশ

সাবেক আইজিপি বেনজীরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিলামে তোলা হচ্ছে

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net