শুল্কবিরোধ অবসানে চীনের সঙ্গে 'চমৎকার' বাণিজ্য চুক্তির প্রত্যাশা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে বিরোধ এবং বিরল খনিজ নিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধ চলমান থাকা সত্ত্বেও—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মাসের শেষে বেইজিংয়ের সঙ্গে একটি 'চমৎকার' বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সোমবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, "আমি মনে করি চীনের সঙ্গে আমরা শেষ পর্যন্ত একটি চমৎকার বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছি।"
তার এই আশাবাদ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে, এবং চীন বিশ্ববাজারে তার বিরল খনিজ উপাদানের রপ্তানি সীমিত করার হুমকি দিয়েছে।
বিরল খনিজের উৎস নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রও সচেষ্ট রয়েছে। গত ২০ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বিরল খনিজ প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা এবং এক বিলিয়ন ডলার যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্পের ঘোষণা দেন। এসব খনিজ নিত্যপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিকস থেকে শুরু করে সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য।
চীন ৯ অক্টোবর বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার পর এই পদক্ষেপ আসে। এর জবাবে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, ১ নভেম্বরের মধ্যে যদি বাণিজ্য চুক্তি না হয়, তবে চীন থেকে আমদানির ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৫৭ শতাংশ পর্যন্ত করা হবে।
বিরল খনিজের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও চীনের পাল্টা শুল্ক দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য রপ্তানি কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক, এবং এ কারণে মার্কিন কৃষকরা এই বছরের ফসল বিক্রি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
ট্রাম্প বলেন, "ওরা আমাদের সয়াবিন কেনা বন্ধ করেছে, কারণ তারা ভেবেছে এটি আমাদের জন্য শাস্তি হবে। এটা আমাদের কৃষকদের জন্য শাস্তি বটে, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।"
বাণিজ্য যুদ্ধে চলমান উত্তেজনা সত্ত্বেও ট্রাম্প দাবি করেছেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি "গভীর শ্রদ্ধা" দেখিয়েছে এবং তিনি আশা করছেন, দুই দেশ তাদের মতপার্থক্য নিরসন করতে পারবে। আসন্ন এশিয়া সফরে ট্রাম্প ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করবেন। এসময়ে তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের কথা রয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, "আমি মনে করি আমরা একটি চুক্তি করব। তারা আমাদের বিরল খনিজ দিয়ে হুমকি দিয়েছে, আর আমি তাদের শুল্ক দিয়ে হুমকি দিয়েছি।"
এ সফরে সামরিক ইস্যুগুলোও আলোচনার টেবিলে আসবে বলে জানা গেছে। তবে তাইওয়ান প্রণালিতে উত্তেজনা নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প—যেখানে মূল ভূখণ্ড চীন দ্বীপটির ওপর পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
"আমি এখনই সে বিষয়ে কথা বলব না," বলেন ট্রাম্প।