গাজায় রয়টার্সের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতার’ অভিযোগে চাকরি ছাড়লেন সাংবাদিক
কানাডার ফটোসাংবাদিক ভ্যালেরি জিঙ্ক রয়টার্সে আট বছর কাজ করার পর স্ট্রিংগার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, নিজস্ব সংবাদকর্মী থাকা সত্ত্বেও সংস্থাটি গাজায় সাংবাদিক হত্যাকে ইসরায়েলের পক্ষে 'ন্যায্য বলে প্রচার করছে ও সমর্থন দিচ্ছে'।
তার এই ঘোষণা আসে সোমবার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা পর। গাজার দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাসপাতালে চালানো ওই হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিকও ছিলেন বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ফেসবুকে এক পোস্টে ভ্যালেরি জিঙ্ক অভিযোগ করেন, রয়টার্সসহ পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো সাংবাদিকদের হামাসের সঙ্গে জড়িত দেখানোর ইসরায়েলের যাচাইবিহীন দাবিকে জোর দিয়ে প্রচার করেছে। তার মতে, এ ধরনের প্রচারণা এমন এক পরিস্থিতিতে করা হয়েছে যেখানে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ডজনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, আল জাজিরার খ্যাতনামা সাংবাদিক আনাস আল-শরীফকে, যিনি চলতি মাসের শুরুতে গাজা সিটিতে তার ক্রুসহ নিহত হন।
জিঙ্ক লিখেছেন, 'রয়টার্স ইসরায়েলের সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি প্রকাশ করেছে যে, আল-শরীফ নাকি একজন হামাস সদস্য ছিলেন।' হামলার আগে ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছিল, আল-শরীফ হামাসের একজন কমান্ডার, তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
জিঙ্ক আরও উল্লেখ করেন, আনাস আল-শরীফের কাজ রয়টার্সের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার এনে দিলেও, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী তাকে যখন হত্যার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল তখন সংস্থাটি তার পক্ষে দাঁড়ায়নি।
তিনি রয়টার্সের সমালোচনা করেন নিজেদের সাংবাদিক নিহত হওয়ার পরও যথাযথ প্রতিক্রিয়া না জানানোর জন্য। নাসের হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে রয়টার্সের ক্যামেরাম্যান হোসাম আল-মাসরিও ছিলেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জিঙ্কের অভিযোগ, পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো যাচাই না করেই ইসরায়েলের দাবিগুলো বারবার প্রচার করেছে এবং কার্যত 'ইসরায়েলি প্রচারণার সরবরাহ চেইন' হিসেবে কাজ করেছে।
প্রেস স্বাধীনতা সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২৪৫ জনে পৌঁছেছে।
