সুইজারল্যান্ডে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে গতিসীমা লঙ্ঘন, চালককে ১ লাখ ১০ হাজার ডলার জরিমানা

সুইজারল্যান্ডের লোজান শহরে গাড়ি চালানোর সময় এক চালক গতিসীমার চেয়ে ঘণ্টায় ২৭ কিলোমিটার বেশি গতিতে গাড়ি চালানোয় তার ওপর জরিমানা হতে পারে সর্বোচ্চ ৯০হাজার সুইস ফ্র্যাঙ্ক , যা কিনা প্রায় ১ লাখ ১০হাজার ডলার!
যদিও তার পক্ষে এই জরিমানা বহন করা কোনও ব্যাপারই না। সুইস সংবাদপত্র '২৪ আওয়ার' অনুযায়ী, যদিও সে চালককে শনাক্ত করা যায়নি, তবে তিনি ফরাসি নাগরিক এবং সুইস অর্থনৈতিক সাপ্তাহিক 'বিলান'-এর তালিকায় দেশটির ৩০০ সমৃদ্ধ ব্যক্তির একজন। ইতোমধ্যেই তার নাম অপরাধীদের রেকর্ডে আছে।
তবে গতিসীমা লঙ্ঘনের জন্য এত মোটা অঙ্কের জরিমানা হওয়ার কারণ কী?
সুইজারল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, আইন ভঙ্গের শাস্তি হিসেবে জরিমানা নির্ধারণ করা হয় ব্যক্তির আয়, সম্পদ বা আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে। সে অনুযায়ী, বিত্তশীল অপরাধীদের জন্য সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি জরিমানা ধার্য করা হয়।
পুলিশের স্বয়ংক্রিয় রাডার চালককে প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) গতিসীমায় ৭৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতি রেকর্ড করতে দেখেছে। এরপরই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ জরিমানা হিসাব করা হয়।
তবে ভো ক্যান্টনের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের মুখপাত্র ভিনসেন্ট ডেরুয়ান্ড জানান, অভিযুক্ত চালক এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেননি।
এক্ষেত্রে, অবশ্য সুইসরা একা নয়। জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া এবং নর্ডিক দেশগুলোতেও আর্থিক জরিমানা নির্ধারণ করা হয় 'অপরাধীর ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক অবস্থার' ভিত্তিতে।
২০১০ সালে, পূর্বাঞ্চলীয় স্ট. গ্যালেন ক্যান্টনের এক ফেরারি চালক গতিসীমা লঙ্ঘনের জন্য প্রায় ২ লাখ ৯০হাজার ডলারের জরিমানা পেয়েছিলেন।
তখন সুইস নিরাপত্তা সংস্থা 'রোড ক্রস' জানায়, আগে সাধারণত ধনী চালকদের ওপর হালকা শাস্তি আরোপ করা হতো। তবে তিন বছর আগে ভোটারদের পক্ষে একটি দণ্ডসংক্রান্ত আইন সংস্কার পাস হওয়ায় নতুন নিয়ম চালু হয়।
এই নিয়ম অনুযায়ী, বিচারকরা ব্যক্তির আয় ও সম্পদের ওপর ভিত্তি করে অতিরিক্ত অর্থ জরিমানা দিতে পারেন, যেমন—গতিসীমা অতিক্রম বা মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে।
আজকের নিয়ম অনুযায়ী, দারিদ্র্যগ্রস্ত বা অল্প আয়ের কেউ জরিমানার বদলে এক রাত কারাগারে কাটাতে পারেন, আর দেশের সবচেয়ে ধনী চালক প্রায় লাখ লাখ সুইস ফ্র্যাঙ্ক জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন।
সুইজারল্যান্ডের ভো ক্যান্টনের একটি আদালত সম্প্রতি সিদ্ধান্ত দিয়েছে, কোনও বিত্তবান ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করলে প্রথমে তিনি ১০হাজার সুইস ফ্র্যাঙ্ক (প্রায় ১২ হাজার ৩০০ ডলার) জরিমানা পরিশোধ করবেন। আগামী তিন বছরের মধ্যে অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে আরও ৮০ হাজার ফ্রাঙ্ক জরিমানা হতে পারে।