রংপুরে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক: ৩ উপজেলায় আক্রান্ত ১১ জন

রংপুরের তিনটি উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পীরগাছায় ৮ জন, মিঠাপুকুরে ১ জন এবং কাউনিয়ায় ২ জনের অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
আজ বুধবার (১ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুরের সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা টিবিএসকে বলেন, "জেলার কাউনিয়া, মিঠাপুকুর ও পীরগাছা এই তিন উপজেলায় ১১ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছেন। এতে কেউ আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবায়োটিক আছে। এর চিকিৎসা করা হয় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও এবিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেওয়া আছে।"
সংক্রমণের সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আহমেদ নওশের আলম বলেন, "অসুস্থ গরু বা ছাগল জবাই করা হলে সেখান থেকে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ ঘটতে পারে।"
তিনি আরও জানান, আক্রান্ত এলাকায় প্রাণিসম্পদ বিভাগ ইতোমধ্যেই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, "এটি ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, সতর্ক থাকার বিষয়। আতঙ্কিত না হয়ে মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।"
অ্যানথ্রাক্স কী?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, অ্যানথ্রাক্স একটি জুনোটিক বা প্রাণী থেকে মানবদেহে ছড়াতে পারে এমন রোগ, যা গ্রাম-পজিটিভ স্পোর-গঠনকারী ব্যাকটেরিয়া ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস দ্বারা সৃষ্ট। এ রোগ মূলত গবাদিপশু এবং তৃণভোজী বন্যপ্রাণীর মধ্যে ছড়ায়।
এই ব্যাকটেরিয়ার স্পোর বা সংক্রমণক্ষম রূপ দীর্ঘ সময় ধরে মাটি, প্রাণীর দেহ, অংশবিশেষ বা প্রাণিজাত পণ্যে বেঁচে থাকতে পারে। বায়ুপ্রবাহ, বন্যা, মৃত প্রাণীর দেহভক্ষণকারী পশু কিংবা প্রাণিজাত দ্রব্য পরিবহনের মাধ্যমে এসব স্পোর ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মানবদেহে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু চারভাবে প্রবেশ করতে পারে: চামড়ার ক্ষত দিয়ে, খাদ্যের মাধ্যমে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এবং সরাসরি ইনজেকশনের মাধ্যমে।
সংক্রমণের ধরণ অনুযায়ী রোগের উপসর্গ ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে সব ধরনের অ্যানথ্রাক্স গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে, যা সেপসিস ও মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস পর্যন্ত গড়াতে পারে।