দক্ষিণ চীন সাগরে প্রথমবারের মতো যৌথ নৌ মহড়ায় ফিলিপাইন ও ভারত

দক্ষিণ চীন সাগরে প্রথমবারের মতো যৌথভাবে নৌ মহড়া করেছে ফিলিপাইন ও ভারতের নৌবাহিনী। সোমবার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। একই দিনে রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের উদ্দেশে মানিলা ছেড়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস।
চীন যাতে সমুদ্রপথে নিজের দাবির সীমা আরও না বাড়াতে পারে, সে লক্ষ্যে ২০২৩ সালের শেষদিক থেকে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সঙ্গে সমুদ্র সহযোগিতা জোরদার করেছে ফিলিপাইন। এর অংশ হিসেবে তারা এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও কানাডার সঙ্গে যৌথ মহড়া করেছে।
ভারতের এক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার ভারতের যুদ্ধজাহাজ ফিলিপাইনে পৌঁছায়। এরপর রবিবার থেকে শুরু হয় দুই দেশের যৌথ চলাচল, যা ফিলিপাইনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। এটি ছিল একটি দ্বিপাক্ষিক মহড়ার অংশ।
ফিলিপাইনের সামরিক প্রধান রোমিও ব্রাউনর বলেন, মার্চে ভারতের সামরিক প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এই যৌথ নৌপথে চলাচলের পরিকল্পনা হয়।
তিনি বলেন, "আমরা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার মুখে পড়িনি। তবে আমাদেরকে অনুসরণ করা হচ্ছিল, যেটা আমরা আগেই অনুমান করেছিলাম।" তবে তিনি সরাসরি চীনের নাম নেননি।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কোনো অঞ্চলের সীমানা বা সমুদ্রপথ নিয়ে বিরোধ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যেই সমাধান হওয়া উচিত, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।
যৌথ মহড়ায় ভারতের পক্ষ থেকে অংশ নেয় গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার আইএনএস দিল্লি, ট্যাংকার আইএনএস শক্তি এবং করভেট আইএনএস কিল্টান। ফিলিপাইন পাঠায় দুটি ফ্রিগেট, বিআরপি মিগুয়েল মালভার ও বিআরপি হোসে রিজাল।
এই মহড়ার সময়ই প্রেসিডেন্ট মার্কোস ভারতের পাঁচ দিনের সফরে রওনা দেন। তিনি বলেন, এই সফরের লক্ষ্য হলো সামুদ্রিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং প্রতিরক্ষা, ওষুধশিল্প ও কৃষি খাতে সহযোগিতার সুযোগ খোঁজা।
চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজের অংশ দাবি করে, যদিও এটি ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সামুদ্রিক অঞ্চলের সঙ্গেও ওভারল্যাপ করে। এই সাগরপথ দিয়ে প্রতি বছর তিন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহন হয়, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুটে পরিণত করেছে।
২০১৬ সালে এক আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায়ে চীনের এই দাবি অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। তবে বেইজিং এখনো সেই রায় মেনে নেয়নি।