নদীতে গা ভাসিয়ে অফিসে যান সুইজারল্যান্ডের যে শহরের বাসিন্দারা

সুইজারল্যান্ডে কর্মজীবী মানুষের একাংশ যেন খুঁজে পেয়েছেন গরম আর অফিস শুরুর ভিড় এড়িয়ে সতেজভাবে যাতায়াতের এক অভিনব উপায়।
দেশটির রাজধানী বার্নে গ্রীষ্মকালে প্রায়ই দেখা যায়—স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা আরে নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে চলেছেন, সঙ্গে একটি ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগে রাখা আছে প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র।
যদিও অধিকাংশই নদীতে নামেন শুধুমাত্র আনন্দের জন্য, কেউ কেউ এই নদীকেই বেছে নিচ্ছেন আরামদায়ক ও কার্যকর পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইভলিন শ্নাইডার-রেয়েস গত জুনে সুইস সংবাদপত্র লো নিউজ-কে বলেন, 'আমার অফিস থেকে নদী পর্যন্ত হাঁটতে সময় লাগত মাত্র ৩০ সেকেন্ড। আমার একটা আরে ব্যাগ ছিল, তাতে জামাকাপড়, স্মার্টফোন, মানিব্যাগ আর জুতো রেখে দিতাম। গোসলের পোশাক পরে নদীতে নেমে পড়তাম— সাঁতরে বাড়ি ফিরতাম।'

তিনি জানান, পানিতে ভেসে পুরো যাত্রাপথে সময় লাগত প্রায় ১৫ মিনিট।
গত গ্রীষ্মে নদীপথে যাতায়াতের এই ব্যতিক্রমী ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভ্রমণভিত্তিক টিকটক অ্যাকাউন্ট 'পিউবিটিআর্থ'-এর একটি ভিডিও দেখা হয়েছে ২০ লাখের বেশি।
বার্ন শহর থেকে এক ঘণ্টা উত্তরে, বাসেল শহরেও গ্রীষ্মকালে রাইন নদীতে একইরকম দৃশ্য দেখা যায়। ভ্রমণ ব্লগার '@আলেক্সাস_অ্যাডভেঞ্চার্স' গত গ্রীষ্মে এমনই একটি ভিডিও পোস্ট করেন টিকটকে।
ভিডিওতে তিনি বলেন, 'প্রত্যেকের কাছে থাকে একটি শুকনো ব্যাগ, যেটাকে বলা হয় "ভিকলেফিশ"— দেখতে মাছের মতো। এতে তারা নিজেদের সব জিনিসপত্র রাখে।'

তিনি আরও বলেন, 'অফিসের আগে, অফিসের পরে—বড়, ছোট, শিশু, এমনকি কুকুর— সবাই রাইন নদীর স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। কারণ নদীর স্রোত এতটাই তীব্র।'
তবে আরে ও রাইন নদীর প্রবল স্রোত যেমন দ্রুত যাতায়াতের জন্য সুবিধাজনক, তেমনি হতে পারে বিপজ্জনক—যদি কেউ নদীপথে চলাচলের নিয়ম না জানেন কিংবা নিরাপদ আচরণ না করেন।
বার্ন শহরের সরকারি ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে, 'গ্রীষ্মকালে আরে নদীতে সাঁতার কাটা বা জলকেলি করা বার্নবাসীর গ্রীষ্মের আনন্দের একটি অংশ। তবে প্রতি বছরই অসতর্কতার কারণে নানা জটিল পরিস্থিতি ও গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।'