সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করা কেন শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য ভালো

আপনি কী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে চান? ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, 'হাঁটুন।' হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে, ওজন কমাতে, মন চাঙা রাখতে—সব সমস্যার সহজ সমাধান, 'হাঁটুন'। প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিসও বলেছিলেন, 'হাঁটাই মানুষের সর্বোৎকৃষ্ট ওষুধ।' এমনকি ফেসবুকের 'ফিটনেস' বিশেষজ্ঞরাও বলছেন—সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে হাঁটতে হবে মোট ১০ হাজার কদম!
তা না হয় বোঝা গেল। কিন্তু দৈনন্দিন এই ব্যস্ত জীবনে এতো হাঁটা কিভাবে সম্ভব? হাঁটার ফুরসতই বা কোথায়? ঘর থেকে বেরোতেই বাহনের ভিড়। সময় আর কাজের তাড়া লেগেই থাকে। কর্মস্থলে, শপিংমলে যান্ত্রিক সিঁড়ি, লিফট—দুই কদম হাঁটার যেন সুযোগই নেই।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমতলে সরলরৈখিক হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি ভাঙা আরও বেশি উপকারী। প্রতিদিন মাত্র দুই থেকে তিন তলা সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই (প্রতিটি তলায় গড়ে ২০–৩০ ধাপ), হৃদ্রোগের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কমে যায়। এতে শুধু শারীরিক ফিটনেসই বাড়ে না, মানসিক চাপও কমে।
তবে হ্যাঁ, লিফট-এসকেলেটরের বদলে সিঁড়ি বেছে নেওয়া সহজ নয়। মনে হতে পারে, কষ্টের কাজ। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সামান্য পরিশ্রমই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। প্রতিদিনের হাঁটাহাঁটি, সামান্য সিঁড়ি ভাঙা—দুই-চার তলা হলেও—দেখা যায় শরীর-মন দুটোই চাঙা থাকে।
যেখানে আমরা দুই-তিন তলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার কথা চিন্তা করেই হাঁপিয়ে যাই, সেখানে সিড়ি বেয়ে ওঠানামা করে বিশ্বরেকর্ড গড়েন শন গ্রিসলি। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, প্রায় ২৩ ঘণ্টায় তিনি বেয়ে উঠেছেন ৮,৮৪৯ মিটার সিঁড়ি—যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের সমান। লাস ভেগাসের নিজ বাড়িতেই তিনি এই অসাধ্য সাধন করেন, মাত্র ২২ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট ২ সেকেন্ডে চ্যালেঞ্জ শেষ করে নাম লেখান বিশ্বরেকর্ডে।
শুধু গ্রিসলিই নন, বিশ্বজুড়ে অনেকেই সিঁড়ি ভাঙাকে একপ্রকার প্রতিযোগিতামূলক খেলাও বানিয়ে ফেলেছেন। টাওয়ার রানিং প্রতিযোগিতা তার প্রমাণ। বিশ্বজুড়ে নামকরা দালানকোঠায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠার এই খেলায় রয়েছে টাওয়ার রানিং অ্যাসোসিয়েশন এর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন ও গ্লোবাল র্যাঙ্কিং।
আমরা হয়তো শন গ্রিসলির মতো এভারেস্টের সমান সিঁড়ি বেয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখি না। তার দরকারও নেই। তবে প্রতিদিনের জীবনে কয়েক তলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠা যে কতটা উপকারী হতে পারে, তা গবেষণায় প্রমাণিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা শুধু শরীরের ফিটনেসই বাড়ায় না, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে। তার জন্য আপনাকে দুই সিঁড়ি একসাথে পেরোতে হবে না কিংবা কোনো করতে হবে না রেকর্ড ভাঙার চিন্তাও!
সিঁড়ি বেয়ে ওঠা 'লো-ইম্পেক্ট' ব্যায়াম বা হালকা ব্যায়ামের মধ্যে পড়ে। সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামার পেছনে অল্প সময়ই ব্যয় করলেই হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এমনকি, ঘরে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার শারীরিক উপকারিতা জিমের স্টেপ মেশিনের সাথেই তুলনীয় হতে পারে।
আসলে, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সবচেয়ে বড় শক্তি লুকিয়ে আছে এর সহজলভ্যতায়। সিঁড়ি আমাদের আশেপাশে সর্বত্রই থাকে—বাসায়, অফিসে বা যেকোনো পাবলিক জায়গায়। লিফট বা এসকেলেটর না নিয়ে সিঁড়ি বেছে নিলে আমরা নিজেদের অজান্তেই একধরনের ব্যায়াম করে ফেলি, যা আমাদের স্বাস্থ্যেকে অনেকটুকু উন্নত করে।
কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কেলোয়ানায় হার্ট, লাঞ্জ অ্যান্ড ভাসকুলার হেলথের পোস্টডক্টরাল রিসার্চ ফেলো আলেক্সিস মারকোট-শেনার্ড বলেন, 'এটা এক ধরনের ব্যায়াম, যা প্রায় সবাই করতে পারে। কারণ সবারই বলতে গেলে প্রতিদিনই সিঁড়ি ব্যবহার করার সুযোগ থাকে।'
মারকোট-শেনার্ড মূলত ব্যায়াম ও পুষ্টির মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর গবেষণা করছেন। এর মধ্যে তিনি 'এক্সারসাইজ স্ন্যাকস' নামের একটি ধারণা নিয়েও কাজ করছেন—যা সারাদিনে এক মিনিটের কম সময়ের তীব্র ব্যায়ামকে বোঝায়। সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা এর চমৎকার উদাহরণ। কারণ এর গতি বাড়ানো-কমিয়ে সহজেই ব্যায়ামের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া এতে কোনো দামী বা অভিনব যন্ত্রপাতির দরকার পড়ে না, খরচও হয় না।
বর্তমানে 'এক্সারসাইজ স্ন্যাকস' বা 'স্ন্যাকটিভিটি' হিসেবে পরিচিত এই শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। কেউ কেউ একে 'ভিলপা' (ভিগোরাস ইন্টারমিটেন্ট লাইফস্টাইল ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি) হিসেবেও চেনেন। এর কারণ, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার ফলে নানা রোগের ঝুঁকিতে আছেন। তাই সহজে করার মতো কার্যকর ব্যায়ামের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
তবে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা কেন এত উপকারী?
প্রথমেই বলা দরকার, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা হলো সহজে হৃদস্পন্দন বাড়ানোর উপায়—যা শরীরের নানা উপকারে লাগে। তবে অন্যান্য ব্যায়ামের তুলনায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠার আলাদা কিছু সুবিধাও আছে।
মারকোট-শেনার্ড বলেন, 'সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, ফলে হৃদস্পন্দন ও অক্সিজেন গ্রহণ অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া, এতে প্রধানত নিচের অংশের পেশি ব্যবহৃত হয়। এবং আমরা জানি, পায়ের পেশির শক্তি সার্বিক স্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবনের ভালো ইঙ্গিত।'
সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বিশেষভাবে উরুর পেশির আকার ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সঙ্গে ওঠার সময় পেটের পেশিও সক্রিয় থাকে, যা শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
আর দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার দরকারও নেই। দুই ধাপ একসাথে ওঠা পায়ের গোড়ালি ও হাঁটুর পেশিকে বেশি চাপ দেয়, যা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে এক ধাপে ওঠা আর দুই ধাপে ওঠার মধ্যে ক্যালরি ক্ষয়ের বড় কোনো তফাৎ নেই।
তবে সিঁড়ি ভাঙার আরেকটি বিশেষ দিক আছে, যা জিমের মেশিনগুলোতে নেই—সেটি হলো সিঁড়ি বেয়ে নামা।
সিঁড়ি ভাঙার সময় আপনার উরুর সামনের দিকের পেশি দু'ভাবে সংকুচিত হয়: সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় পেশি ছোট হয়, যাকে বলে কনসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন (concentric contraction), আর নামার সময় পেশি বড় হয়, যাকে বলে একসেন্ট্রিক কনট্রাকশন (eccentric contraction)।
ওঠার সময় শরীরে বেশি অক্সিজেন লাগে, তাতে ক্যালরি ক্ষয়ও হয় বেশি এবং শরীরের ওপর চাপও বেশি থাকে। তবে, নামার সময় বারবার পেশি প্রসারিত হওয়ার কারণে দীর্ঘমেয়াদে পেশির আকার ও শক্তি অনেক বেশি বাড়ে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় পেশির ক্ষতি বেশি হয়, ফলে মেরামত ও পুনর্গঠনের সময় বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়।
শুধু পেশি শক্তিশালী করাই নয়, গবেষণায় দেখা গেছে, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা আমাদের মানসিক দক্ষতাও আশ্চর্য রকমের উন্নতি ঘটাতে পারে।
উমেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রেয়াস স্টেনলিং শারীরিক কার্যকলাপ ও স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি ও তার সহকর্মীরা তরুণদের মধ্যে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার তাত্ক্ষণিক প্রভাব পরীক্ষা করেছেন মস্তিষ্কের বিভিন্ন দক্ষতার উপর।
স্টেনলিং বলেন, 'আমরা প্রধানত দুই ধরনের মস্তিষ্কের ক্ষমতার ওপর মনোযোগ দিয়েছি—ইনহিবিশন এবং সুইচিং।' তিনি ব্যাখ্যা করেন, 'কগনিটিভ সুইচিং বা মানসিক নমনীয়তা বলতে বোঝায় যে, কত সহজে আমরা এক কাজ থেকে অন্য কাজে মনোনিবেশ করতে পারি, যেন নতুন করে মনোযোগ দিতে না হয়। আর ইনহিবিশন মানে হলো কাজ করার সময় অপ্রাসঙ্গিক তথ্যকে অবরোধ করা।' এই ক্ষমতাগুলো কোনও কিছু শেখা, জটিল কাজ করা, বিমূর্ত চিন্তা করা এবং মনোযোগ ধরে রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন পাঁচতলা বা তার বেশি সিঁড়ি ওঠা হৃদরোগসহ এক্সপ্লোরেটরি কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়।
স্টেনলিং ও তার দল আবিষ্কার করেন যে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার ব্যায়াম অংশগ্রহণকারীদের 'সুইচিং' ক্ষমতা উন্নত করেছে, যা পরীক্ষিত মস্তিষ্কের কাজের মধ্যে সবচেয়ে জটিল। পাশাপাশি, তারা অংশগ্রহণকারীদের মানসিক অবস্থা পরিমাপ করে দেখেন, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর তারা আরও খুশি ও উদ্যমী বোধ করেন।
জাপানের ইয়ামাগুচি ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দু'তলা সিঁড়ি উঠেছেন, তাদের সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা লিফট ব্যবহারকারীদের চেয়ে বেশি ছিল। কিন্তু আকর্ষণীয়ভাবে, পাঁচ বা আট তলা সিঁড়ি উঠলে সমস্যা সমাধানে কোনো অতিরিক্ত উন্নতি হয়নি, যা নির্দেশ করে যে এই প্রভাব সিঁড়ির সংখ্যার ওপর নির্ভরশীল নয়।
একই গবেষণা দলের আরেকটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিঁড়ি নামার সময় সৃজনশীল চিন্তা বৃদ্ধি পায় এবং লিফট ব্যবহারকারীদের তুলনায় ৬১ শতাংশ বেশি নতুন ধারণা উদ্ভব হয়। তাই আপনি যদি কোনো শারীরিক সমস্যার সমাধান বা অনুপ্রেরণা খুঁজছেন, তবে আপনার কাছাকাছি কোনো সিঁড়ি বেয়ে একটু ওঠা-নামা করলেই তা যথেষ্ট।
অভ্যাসগত ব্যায়াম ও মস্তিষ্কের উন্নতির মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা বোঝার জন্য অনেকেরই গবেষণার আগ্রহ আছে ঠিকই , তবে এ পর্যন্ত তেমন নিশ্চিত কোনো গবেষণা নেই। স্টেনলিং মনে করেন, মস্তিষ্কের উন্নতি হয় কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের উন্নতির মাধ্যমে এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ার কারণে। পাশাপাশি ব্যায়ামের ফলে ব্রেন-ডেরাইভড নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (বিডিএনএফ) নামের হরমোন দ্রুত প্রভাব ফেলে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
স্টেনলিং সহ অন্যান্য গবেষকরা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার কোনো বিলম্বিত প্রভাব আছে কি না তা জানার আগ্রহী। অধিকাংশ গবেষণা সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামার পরই মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব পরীক্ষা করে, তবে সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা ও ভালো ঘুমের সমন্বয়ে পরের দিনও স্মৃতিশক্তিতে উন্নতি হতে পারে।
তবে, যেভাবে দৈনন্দিন ব্যায়ামের জন্য '১০,০০০ স্টেপ' হাঁটার লক্ষ্য সকলের মনে গেঁথে গেছে, ঠিক তেমনই সিঁড়ি ওঠার জন্য কি কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত?
এর আগে একটু জানা জরুরি যে '১০,০০০' সংখ্যাটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় খুব শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে নেই। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ৭,৫০০ পদক্ষেপ পার হলে তারপর থেকে লাভ কমতে শুরু করে।
আসলে এই সংখ্যা প্রথম পরিচিত হয় ১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিকের সময় একটি বিজ্ঞাপন প্রচারণার মাধ্যমে, যেখানে জাপানি ভাষায় '১০,০০০' (万) এই সংখ্যাটি দেখতে মানুষ হাঁটার মতোই লাগে।
সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য স্থাপন নিয়ে গবেষণাও সীমিত। তবে যে গবেষণা আছে, তাতে দেখা গেছে দৈনিক পাঁচতলা (প্রায় ৫০ সিঁড়ি) থেকে বেশি ওঠার সঙ্গে অ্যাথেরোসক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার রোগ (ASCVD) কম হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে, যা ধমনীতে প্লাক জমার কারণে হয়।
মারকোট-চেনার্ড ও তার সহকর্মীরা আশাবাদী যে 'এক্সারসাইজ স্ন্যাক্স' বা ছোট ছোট ব্যায়াম বিরতি, বিশেষ করে সিঁড়ি ওঠা, কাজের সময় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস ভাঙতে ভালো উপায় হতে পারে। তাদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অফিস কর্মচারীদের মধ্যে ৭১ শতাংশই একবারে ৬০ সিঁড়ি বেয়ে ওঠার বদলে তিনটি আলাদা সেশনে ৬০ সিঁড়ি বেয়ে ওঠাকে বেশি পছন্দ করেছে, যা একটি একটানা আরও কঠোর 'হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং' (এইচআইআইটি) সেশন থেকে আলাদা।
মারকোট-চেনার্ড বলেন, 'অংশগ্রহণকারীদের জন্য একবার সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করে আবার বসে পড়াই অনেক সহজ মনে হয়। আর দিনে সময় ভাগ করে বিভিন্নবার এই কাজ করার ফলে তারা একবারে পুরো সেশন করার চেয়ে বরং এটি বেশি উপভোগ করে।'
গবেষণাটি ল্যাবের বাইরের পরিবেশে হওয়ায় এর ফলাফল বাস্তব জীবনে বেশি প্রযোজ্য বলে মনে করা হয়।
তবে সব গবেষণা এতে একমত নয় যে বাড়িতে সিঁড়ি বেড়ে ওঠা-নামা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে যথেষ্ট। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এটি প্রাণঘাতী হৃদরোগ ও অকাল মৃত্যু কমাতে যথেষ্ট কার্যকর নয়।
এছাড়া হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্তদের জন্য সিঁড়ি বেয়ে ওঠা ব্যথাদায়ক হতে পারে। এবং কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে নারী এবংঅতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিরা বিকল্প পথ থাকলে সিঁড়ি বেছে নেওয়ার প্রবণতা কম।
তবে যারা সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামার সামর্থ্য রাখেন, তাদের জন্য লিফটের বদলে সিঁড়ি বেছে নেওয়া হলো একটি সহজ উপায় দৈনন্দিন হাঁটা-চলা ছাড়াও শরীর এবং মস্তিষ্ক দুটোর জন্যই উপকারী ব্যায়াম পেতে। তো চলুন, দেখা হবে সিঁড়ির শীর্ষে!